Inqilab Logo

শনিবার, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

মাদারীপুরে গোল্ডেন লাইফ বহুমুখী সমবায় সমিতি পুঁজি হারানোর শঙ্কায় গ্রাহকরা

প্রকাশের সময় : ৪ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মাদারীপুর জেলা সংবাদদাতা : মাদারীপুরের রাজৈর উপজেলা গোল্ডেন লাইফ বহুমুখী সমবায় সমিতি কর্তৃপক্ষ গ্রাহকদের লাখ লাখ টাকা নিয়ে পালিয়ে যাওয়ার পাঁয়তারা করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। গ্রামের সহজ-সরল সাধারণ মানুষদের উচ্চ মুনাফা দেয়ার প্রলোভন দেখিয়ে লাখ লাখ টাকা আমানত সংগ্রহ করেছে। বর্তমানে গ্রাহকদের আমানত ফেরত দিতে টালবাহান শুরু করেছে। সমবায় সমিতির নিয়মিত অডিট, ব্যাংক হিসাবের মাধ্যমে হিসাব পরিচালনা, নির্বাচনের মাধ্যমে নিয়মিত কমিটি গঠনের নিয়ম থাকলেও কোনোটিরই নেই আমগ্রাম বাজারের গোল্ডেন লাইফ বহুমুখী সমবায় সমিতির। যে কারণে চরম ঝুঁকিতে রয়েছে গ্রাহকদের সকল আমানত।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, গোল্ডেন লাইফ বহুমুখী সমবায় সমিতি সদস্য সংখ্যা ৭৭০ জন। এই সমিতির কার্যকরী মূলধন ৬১ লাখ ২৫ হাজার ১শ’ ৮ টাকা। সমিতির মোট সম্পদ ও সম্পত্তির পরিমাণ ৬১ লাখ ৩৪ হাজার ৫শ’ ৬১ টাকা। গ্রাহকদের দাবি এটা প্রকৃত চিত্রের চেয়ে অনেক কম দেখানো হয়েছে হিসাবে। গ্রহকরা সমিতিতে জমাকৃত আমানত ফেরত চাইলেও দিনের পর দিন ঘুরতে হচ্ছে। অসংখ্য গ্রাহক দিনের পর দিন অফিসের সামনে এসে ধর্ণা দিয়েও এ ব্যাপারে কোনো সুরাহা পাচ্ছেন না। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক গ্রাহক বলেন, ‘সমিতির মালিক একটি রাজনৈতিক দলের নেতা। তাই আমাদের টাকা চাইতে গেলে জমাকৃত টাকা তো দিচ্ছে না, উল্টো আমাদেরকে আরো হুমকি ধমকি দিচ্ছে।’ এলাকাবাসীর সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, সমিতির পরিচালক পরিচয় দানকারী আজিজুল কয়েক বছর আগেও অর্থকষ্টে দিনাতিপাত করতেন। বর্তমানে তিনি কোটি কোটি টাকার মালিক। হঠাৎ করে তিনি এই সমিতিকে পুঁজি করে আঙুল ফুলে কলাগাছ হয়ে গেছেন। কাউকে তোয়াক্কা করতে তিনি রাজি নন। নিজেকে পরিচয় দেন একটি রাজনৈতিক দলের সাধারণ সম্পাদক। এলাকাবাসী ও গ্রাহকরা আশঙ্কা করছেন, যে কোনো মুহূর্তে পালিয়ে যেতে পারেন গোল্ডেন লাইফ বহুমুখী সমবায় সমিতির কর্মকর্তারা।
গোল্ডেন লাইফ বহুমুখী সমবায় সমিতির কার্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, সমিতির ঊর্ধ্বতন কোনো কর্মকর্তা নেই। অফিসে রয়েছে এক নারী অফিস সহকারী। কার্যালয়ের সামনে কয়েকজন গ্রাহককে ধর্ণা দিতে দেখা গেছে। ওই অফিস সহকারী সমিতি সম্পর্কে সঠিক কোনো তথ্য দিতে পারেননি। এসময় তিনি আজিজুল নামে স্থানীয় এক ব্যক্তির সাথে কথা বলতে বলেন। আজিজুল নিজেকে সমিতির মালিক পরিচয় দিলেও সমিতির কোনো ধরনের কাগজপত্র দেখাতে পারেননি। পরে উপজেলা সমবায় কার্যালয়ে গিয়ে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই সমিতিটির নিয়মিত অডিট নেই। নেই কোনো ব্যাংক হিসাব এবং সমিতি পরিচালনার জন্য নিয়মিত কোনো কমিটিও নেই। এ সময় কয়েকজন নারী গ্রাহক জানান, স্বামী বিদেশ থাকেন।
তিনি প্রতি লাখে মাসে দুই হাজার টাকা পাবেন এই লোভে সমিতিতে টাকা রাখেন। এখন স্বামী বিদেশ থেকে ফেরত এসে টাকা চাচ্ছেন। টাকা উঠাতে না পেরে সংসার ভেঙে যাওয়ার উপক্রম হয়েছে।
সমিতির পরিচালক পরিচয়দানকারী মো. আজিজুল বলেন, ‘সমিতির অবস্থা ভালো নয়। আমরা বেশিদিন এটা চালাব না। সমিতি সম্পর্কে বিস্তারিত আমি জানি না। উপজেলা সমবায় কার্যালয়ে যোগাযোগ করেন।’ এ ব্যাপারে রাজৈর উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. গোলাম কুদ্দুস বলেন, ‘এই সমিতিটিতে বর্তমানে কোনো কমিটি নেই এবং ব্যাংক হিসাবও নেই। ব্যাংক হিসাব ও কমিটি করার জন্য আমরা বার বার তাগিদ দিলেও তারা কর্ণপাত করছে না।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মাদারীপুরে গোল্ডেন লাইফ বহুমুখী সমবায় সমিতি পুঁজি হারানোর শঙ্কায় গ্রাহকরা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ