Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

‘আপনাদের অনুষ্ঠানে আমাকে আর ডাকবেন না’

মানবাধিকার সংস্থার গোলটেবিলে শিক্ষা উপমন্ত্রী

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১০ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

মানবাধিকার সংগঠন আইন ও সালিশ কেন্দ্রের (আসক) অনুষ্ঠানে মানবাধিকার কর্মীদের বিরুদ্ধে বিষোদ্গার করেছেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী। মানবাধিকার কর্মীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, আপনারা ডিজিটাল সিকিউরিটি আইন ও পুলিশি অ্যাকশন নিয়ে যত কথা বলেন, তত বলেন না ওদের (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম সংস্থা) নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়ে। এছাড়া অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেয়ার জন্য তার সময় বেঁধে দেওয়ায় তিনি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানান এবং ভবিষ্যতে কখনো আসকের অনুষ্ঠানে তাকে আমন্ত্রণ না জানাতে বলেন।

গতকাল বুধবার আসক আয়োজিত ‘অনলাইনে শিশু যৌন নির্যাতন প্রতিরোধ ও শিশুদের নিরাপদ ইন্টারনেট ব্যবহার নিশ্চিতকরণ: পরিস্থিতি বিশ্লেষণ ও করণীয় নির্ধারণ’ শিরোনামের ভার্চুয়াল গোলটেবিল বৈঠকে বিশেষ অতিথি ছিলেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ডাক ও টেলিযোগাযোগমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার। শিক্ষা উপমন্ত্রী অন্য একটি বৈঠক থাকার কথা জানিয়ে আগে বক্তব্য দিতে চান। ওই সময় গোলটেবিল বৈঠকের সঞ্চালক আসকের নির্বাহী পরিচালক গোলাম মনোয়ার কামাল তাঁকে বক্তব্য দিতে বলেন এবং এর জন্য সময় ৬ মিনিট বেঁধে দেন।
বক্তব্য শুরু করে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ইন্টারনেট যেমন সুযোগ তৈরি করছে, তেমনি সমাজের সব পর্যায়ে ঝুঁকিও তৈরি করছে। এ ঝুঁকি তৈরি হয়েছে আন্তর্জাতিক ইন্টারনেট প্রতিষ্ঠানগুলোর কারণে, যারা ভার্চুয়াল ওয়ার্ল্ড নিয়ন্ত্রণ করছে। তারা সব দেশের আইনের নিয়ন্ত্রণের বাইরে থাকছে। সীমিত ধর্মীয় জ্ঞান নিয়ে কেউ কেউ ওয়াজের নামে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে নারীর সামাজিক ও ব্যক্তিগত জীবন নিয়ন্ত্রণে ফতোয়া দেন। এটা নারী ও শিশুর জন্য ভীতিকর পরিবেশ তৈরি করছে। ওই ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা নিতে গেলে আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো জানায়, তাদের কমিউনিটি আইন অনুযায়ী ওই ব্যক্তিরা আইন ভঙ্গ করছেন না। এই বলে তারা কোনো নিয়ন্ত্রণ মানতে চায় না। ওই ব্যক্তিদের বক্তব্যকে তারা বাক্স্বাধীনতা বলে উল্লেখ করে। অথচ আমাদের দেশের প্রেক্ষাপটে সেসব বক্তব্য সমস্যা সৃষ্টি করছে।
হিন্দু ধর্মাবলম্বী ও মন্দিরে হামলার ঘটনা উল্লেখ করে শিক্ষা উপমন্ত্রী বলেন, ফেসবুকের মাধ্যমে দাঙ্গা ছড়াল। অস্থিতিশীলতা তৈরি হলো। কেউ তো ফেসবুক বন্ধের কথা বলছেন না। মানবাধিকার সংস্থা হিসেবে রাজনৈতিক ভূমিকা অগ্রাহ্য করে নিরপেক্ষ ভূমিকা নিয়ে কথা বলা উচিত। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অব্যাহতভাবে বিদ্বেষমূলক মন্তব্য করা হচ্ছে। তিনি আন্তর্জাতিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিয়ন্ত্রণে সরকারেকে সহায়তা করার জন্য মানবাধিকার সংস্থাগুলোর প্রতি আহ্বান জানান। তিনি অভিযোগ করেন, মানবাধিকার সংস্থাগুলো ডিজিটাল নিরাপত্তা আইন ও পুলিশের কর্মকাণ্ডের বিরুদ্ধে যত সোচ্চার, তত সোচ্চার নয় আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলো নিয়ন্ত্রণ করার বিষয়ে।
উপমন্ত্রীর বক্তব্য শেষ হওয়ার পর আসকের নির্বাহী পরিচালক গোলাম মনোয়ার কামাল উপমন্ত্রীর উদ্দেশে বলেন, আপনি না জেনেই কিছু কথা বলেছেন। আমরা এসব বিষয়ে (সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে বিদ্বেষ ছড়ানো) সুপারিশ করে থাকি। ওই সময় উপমন্ত্রী মাইক নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়ে বলেন, ‘আপনারা অনুষ্ঠানে কিছু শিষ্টাচার রাখবেন। বিশেষ অতিথিকে সময় বেঁধে দিয়েছেন। এটা অশোভন, দৃষ্টিকটু।’ ওই সময় মনোয়ার কামাল তাকে বলেন, ‘আপনাকে তো ১৫ মিনিট সময় দেওয়া হলো।’ ওই সময় ক্ষুব্ধস্বরে উপমন্ত্রী বলেন, ‘এমন ব্যবহার করবেন না, যা শোভন নয়। অভিযুক্ত তারেক রহমানের (বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান) লোক আপনাদের বোর্ড অব গভর্নরসে আছে। আপনারা আর কখনো আমাকে ইনভাইট (আমন্ত্রণ) করবেন না। আমি আপনাদের অনুষ্ঠানে কখনো আসব না।’



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মানবাধিকার সংস্থার গোলটেবিলে শিক্ষা উপমন্ত্রী
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ