Inqilab Logo

শনিবার ১৬ নভেম্বর ২০২৪, ০১অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

যশোরে সবজির ফলন ও মূল্যে চাষিদের পোয়াবারো

প্রকাশের সময় : ৩ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মিজানুর রহমান তোতা : বরাবরই সবজি আবাদ ও উৎপাদনে রেকর্ড রয়েছে যশোরের। কিন্তু সাধারণত উৎপাদক চাষি ও ভোক্তারা আর্থিকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হন, লাভবান হন মধ্যস্বত্বভোগীরা।  সংশ্লিষ্ট বিভাগের কর্মকর্তারা সবজির মাঠ ও বাজারের দিকে নজর দেয়ায় মধ্যস্বত্বভোগীদের দাপট অনেকটা কমেছে। বাজারে শৃঙ্খলা ফিরিয়ে আনার চেষ্টা চলছে। এতে নিকট অতীতের চেয়ে উপযুক্ত মূল্য পাচ্ছেন চাষিরা। সবজির ফলনও ভালো হয়েছে। এবার সবজি চাষিদের পোয়াবারো। কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের যশোর অঞ্চলের অতিরিক্ত পরিচালক চ-িদাস কু-ু জানান, সবজির ফলন খুবই ভালো হয়েছে। উপযুক্ত মূল্যও পাচ্ছেন চাষিরা। তিনি বলেন, চাষিরা  খুশি। এবার কঠোরভাবে মার্কেট লিংকেজ বন্ধের ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। মাঠ থেকে সবজি বাজারে ওঠার পর বাছাই, গ্রেডিং করে বিক্রি হচ্ছে। সবজির বাজারে সরেজমিন দেখা গেছে, ভরা মওসুমে যে মুলা দুই-চার টাকা কেজি দরে বিক্রি হতো, সেই মুলা এবার বিক্রি হচ্ছে সর্বনি¤œ ২০ টাকা কেজি। পালং শাক, বেগুন, ফুলকপি, বাধাকপিসহ শীতকালীন সব সবজির বাজারমূল্য যা চলছে, তাতে চাষি ও ভোক্তা উভয়েই লাভবান হচ্ছেন। মাঠের মূল্য আর বাজার মূল্যে ফারাকও কমে গেছে। সবজি চাষিরা এই অবস্থা ধরে রাখার তাগিদ দিয়ে বলেছেন, আবার যেন মধ্যস্বত্বভোগীদের দাপট না বাড়ে। তাদের কথা, মধ্যস্বত্বভোগীরা হাল ছাড়েননি, তাদের অপতৎপরতা ও আনাগোনা। যার জন্য সবজির বাজার আবারো মধ্যস্বত্বভোগীদের নিয়ন্ত্রণে চলে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে।  
দেশের মোট চাহিদার ৬৫ ভাগ সবজির জোগান হয় যশোর অঞ্চল থেকে। অনুকূল আবহাওয়া ও উর্বর মাটিসহ সার্বিক দিক দিয়ে সবজি আবাদ ও উৎপাদনে সফলতার জন্য সবজি চাষিরা খুবই খুশি। প্রবল বর্ষণে নিম্নাঞ্চলের সবজির কিছুটা ক্ষতি হওয়ায় মাঝে হতাশ হয়েছিলেন চাষিরা। শুধু যশোর নয়, মাগুরা, ঝিনাইদহ, নড়াইল ও সাতক্ষীরাসহ দক্ষিণ-পশ্চিমাঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সবজির আবাদ ও উৎপাদন হয় যশোরে। যশোর সবজির ভা-ার হিসেবে খ্যাত। সরেজমিন দেখা গেছে, যশোরের বারীনগর, মানিকদিহি, হৈবতপুর, খাজুরা, তীরেরহাট, চুড়ামনকাঠি, শাহবাজপুর ও আমবটতলাসহ বিভিন্ন এলাকায় মাঠের পর মাঠ সবজি আর সবজি। প্রায় বারো মাসই সবজি উৎপাদন হওয়ার রেকর্ড রয়েছে এলাকাটির। যশোর মডেল হিসেবে ধরে গোটা অঞ্চলে যেখানে উঁচু জমি সেখানেই সবজি আবাদ ও উৎপাদন হচ্ছে। আবার পানির মধ্যেও শিম চাষ হচ্ছে পুরোদমে। নিচে পানি আর ওপরে মাঁচায় শিম চাষে আর্থিকভাবে লাভবান হচ্ছেন চাষিরা। এ অঞ্চলের নির্র্দিষ্ট কিছু এলাকায় প্রধান ফসল হিসেবে সবজি আবাদ করে থাকেন চাষিরা। সবজি উৎপাদনে রেকর্ড সৃষ্টির এলাকায় কৃষিভিত্তিক অর্থনীতির ভিত এখনো নড়বড়ে। এর একটিই কারণ, সবজি বাজারে বিশৃঙ্খলা। মুনাফালোভী ফঁড়িয়া, দালাল ও মধ্যস্বত্বভোগীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি বরাবরই অনুপস্থিত ছিল। এবার কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর, বাজার কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা কয়েকদিন মাঠে নেমেছেন। ফলও পাওয়া যাচ্ছে। তবে মধ্যস্বত্বভোগীরা সিন্ডিকেট করে নানা কৌশলে সবজির বাজার নিয়ন্ত্রণ করার ফন্দিফিকির আঁটছে।
সবজির পাইকারি হাট বারীনগরে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবজি বাজারে মধ্যস্বত্বভোগীদের আনাগোনা আছে। বিভিন্ন প্রভাবশালীদের দোহাই দিয়ে দখলদারিত্বের চেষ্টা চলছে। তবে মাঠ থেকে সবজি ওঠার সাথে সাথে পাইকারি ব্যবসায়ীরা টানাটানি করে তুলনামূলক কম দামে কেনার ঘটনা নেই বললেই চলে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: যশোরে সবজির ফলন ও মূল্যে চাষিদের পোয়াবারো
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ