পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : ট্রেনের টিকিট ফেরত দেয়ার সুযোগও কেড়ে নেয়া হলো। যাত্রা আরম্ভের ৭২ ঘণ্টা কম সময়ে কোন টিকিট আর ফেরত নেয়া হবে না। গত ১ নভেম্বর রেলপথ মন্ত্রণালয় এ সংক্রান্ত একটি পরিপত্র জারি করেছে। এতে করে ট্রেনের টিকিট কেনার ঝুঁকি আরও এক ধাপ বাড়লো। ভুক্তভোগীদের মতে, এমনিতেই কোটা পদ্ধতির কারণে টিকিট পাওয়া যায় না। বহু কষ্টে টিকিট কেনার পর কেউ তা ইচ্ছা করে ফেরত দেয় না। শেষ পর্যন্ত টিকিট ফেরত দেয়ার সুযোগ থেকে যাত্রীদের বঞ্চিত করাটা খুবই অমানবিক। তবে রেল কর্তৃপক্ষ মনে করছে, এতে করে টিকিট পেতে হয়রানি অনেকটাই কমে যাবে।
গত ১ নভেম্বর মঙ্গলবার রেলপথ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব মাছুমা নাছরিন স্বাক্ষরিত এক পরিপত্রে বলা হয়, বাংলাদেশ রেলওয়ের আন্তঃনগর ট্রেনের টিকিট ফেরত প্রসঙ্গে এ মন্ত্রণালয়ের ০৬-০৯-২০১৬ তারিখে জারিকৃত পরিপত্রটি আংশিক সংশোধনক্রমে সার্ভিস চার্জ কর্তনের হার পুনর্নির্ধারণ করা হলো। এতে বলা হয়, যাত্রা আরম্ভের ১২০ ঘণ্টার (৫দিন) বেশি সময়ের ক্ষেত্রে এসি শ্রেণিতে ২৫ টাকা, প্রথম শ্রেণিতে ২০ টাকা ও অন্যান্য শ্রেণিতে ১৫ টাকা কর্তনযোগ্য। যাত্রা আরম্ভের ১২০ ঘণ্টার কম এবং ৯৬ ঘণ্টার (৪ দিন) বেশি সময়ের ক্ষেত্রে ভাড়ার ৫০ শতাংশ (অর্ধেক) কর্তনযোগ্য। যাত্রা আরম্ভের ৯৬ ঘণ্টার কম ও ৭২ ঘণ্টার বেশি সময়ের ক্ষেত্রে ভাড়ার ৭৫ শতাংশ কর্তনযোগ্য। আর যাত্রা আরম্ভের ৭২ ঘণ্টা (৩দিন) কম সময়ের ক্ষেত্রে কোনো টিকিট ফেরত হবে না। অর্থাৎ একজন যাত্রী টিকিট কেনার পর যাত্রার তিন দিন আগেই তাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তিনি যাবেন কি যাবেন না। তা না হলে তিনি কোনো টাকা ফেরত পাবেন না। পুরোটাই গচ্চা যাবে।
ভুক্তভোগীদের মতে, একজন যাত্রী যদি টিকিট ফেরত দিয়ে টাকা ফেরত না পায় সেক্ষেত্রে তিনদিন আগে জানাতে না পারলে ওই যাত্রী আর টিকিট ফেরত দিতে যাবেন না- এটাই স্বাভাবিক। এক্ষেত্রে ওই যাত্রীর আসনটি খালি যাবে। এতে পোয়াবারো হবে ট্রেনের গার্ড, টিটিই এবং এটেনডেন্টদের। তারা ওই আসনে বিনা টিকিটের যাত্রীদের বসিয়ে নিয়ে যাবেন টুপাইসের বিনিময়ে। তাতে ব্যক্তিগতভাবে তারা লাভবান হলেও রেল কিছুই পাবে না। রেলওয়ের পূর্ব ও পশ্চিমাঞ্চলে এখনও শত শত মানুষ টিকিট না কেটেই ট্রেনে ভ্রমণে অভ্যস্ত। তারা টিকিট না কেটে গার্ড, টিটিই অথবা এটেনডন্টেদের হাতে কিছু টাকা দিয়ে দিব্যি আসনে বসে গন্তব্যে যাচ্ছে। দিনে রাতে এ দৃশ্য যেকোনো ট্রেনে সব শ্রেণিতেই চোখে পড়ে। এমনকি টিকিট কেটেও অনেকে বসার আসন পায় না এমন অভিযোগেরও অন্ত নেই।
আলাপকালে রেলওয়ের পশ্চিমাঞ্চলের একজন কর্মকর্তা বলেন, রেলওয়ের সুদিন এখন এটেনডেন্ট, টিটিই (ট্রেন টিকিট এক্সামিনার) ও গার্ডদের। বিনা টিকিটের যাত্রীদের কাছ থেকে তারা প্রতিদিন হাজার হাজার টাকা লুফে নিচ্ছে। এরা এখন একাধিক বাড়ি-গাড়ির মালিক। অনেকেই মনে করেন, রেল কর্তৃপক্ষ টিকিটের কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে গার্ড, টিটিই ও এটেনডেন্টদের টাকা কামানোর সুযোগ করে দিচ্ছে। এতে করে প্রকৃত যাত্রীরা হচ্ছে ভুক্তভোগী।
এ প্রসঙ্গে তিতুমীর নামে একজন যাত্রী বলেন, আমরা ট্রেনের যাত্রীরা দীর্ঘদিন ধরে কোটা পদ্ধতির কাছে জিম্মি হয়ে আছি। সাত সকালে টিকেট কাউন্টারে দাঁড়ালেও মেলে না কাক্সিক্ষত টিকেট। বলা হয়, টিকেট শেষ। যা আছে সেগুলো বিভিন্ন কোটায় সংরক্ষিত। এই সংরক্ষিত টিকেট শেষ পর্যন্ত কী হয় তার খবর কেউ রাখে না। তিনি বলেন, আগে কোনো কারণে যাত্রা বাতিল করলে সার্ভিস চার্জ দিয়ে একটা অঙ্ক ফেরত পাওয়ার সুযোগ ছিল। এখন তাও বাতিল করা হলো। এতে করে কালোবাজারি বাড়বে। কারণ, টিকিট ছাড়া হয় যাত্রার ১০ দিন আগে থেকে। এর একদিন পর কাউন্টারে গেলেই কম্পিউটারে দেখানো হয়-‘সিট খালি নাই’। সেক্ষেত্রে যাত্রার দু’দিন বা একদিন আগে কেউ টিকিট কিনতে কাউন্টারে গেলে সিট পাওয়া যাবে বলে মনে হয় না। এখানেও একটা শুভঙ্করের ফাঁকি আছে। কমলাপুরে টিকিট কাটতে আসা বেশ কয়েকজন যাত্রী অভিযোগ করে বলেন, এখানকার টিকেট কাউন্টারগুলো এখন কোটা পদ্ধতির মধ্যে আটকে আছে। সাধারণ যাত্রীদের শীতাতপ বার্থ বা এসি চেয়ারের টিকেট পাওয়ার কোনো উপায় নেই। ভাবখানা এমন যেনো, ট্রেন শুধু ভিআইপিদের জন্যই। এসব বিষয়ে কথা বলার জন্য গতকাল রেলওয়ের পরিচালক (ট্রাফিক) সৈয়দ জহরুল ইসলামের মোবাইল ফোনে বেশ কয়েকবার কল করার পরও তিনি রিসিভ করেন নি। তবে রেলওয়ের আরেক কর্মকর্তা নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, টিকিট ফেরত দেয়ার শর্ত কঠিন করাতে সাধারণ যাত্রীদের উপকারই হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।