Inqilab Logo

রবিবার, ৩০ জুন ২০২৪, ১৬ আষাঢ় ১৪৩১, ২৩ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

সুষ্ঠু ভোট নিয়ে সংশয়

প্রকাশের সময় : ১৪ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

আজিবুল হক পার্থ : কয়েক ধাপে উপজেলা নির্বাচন এবং সদ্য শেষ পৌরসভা নির্বাচনের অভিজ্ঞতা থেকে আসন্ন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচনে সুষ্ঠু ভোট নিয়ে দারুণ শঙ্কা দিয়েছে। ভোট নিয়ে সংশয় রয়েছে সব দলের নেতাদের। সংশয়ে সবার আগে রয়েছে স্বতন্ত্র প্রার্থিতারা। রাজনৈতিক পেশিশক্তির কাছে তাদের অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছেন। সেই সাথে সংশয়ের সামনে টেনে এনছেন বিরোধী শিবিরের প্রার্থীরা। বিশেষ করে বিএনপিপন্থীদের নির্বাচন নিয়ে যেকোন প্রশ্নেই সামনে আনছেন সুষ্ঠু ভোট। তাদের সামনে ভাসছে পৌর নির্বাচনের অভিজ্ঞতা।
স্থানীয় সরকারের সবচেয়ে বড় পরিসরের স্তর ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) নির্বাচন শুরু হয়েছে। দেশের সাড়ে চার হাজার পৌরসভায় নির্বাচন শুরু না হলেও নির্বাচনী আমেজে ভাসছে গোটা দেশ। প্রায় ৬ মাস আগ থেকে নির্বাচনী প্রচারণা শুরু হলেও শেষ মুহূতেও এসে প্রচারণায় মোড় নিয়েছে মনোনয়নপ্রাপ্তি। রাজনৈতিক প্রার্থীদের এখন প্রধান টার্গেট দলীয় মনোনয়ন। এই লক্ষ্যেই তাদের দৌড়ঝাঁপ। তবে সব ছড়িয়ে এবার উঠে এসেছে সুষ্ঠু নির্বাচনী পরিবেশ। খোদ সরকার দলীয় প্রার্থীদেরও রয়েছে শঙ্কা। বিশেষ করে সদ্য সমাপ্ত পৌর নির্বাচনের পরিস্থিতির বিশ্লেষণ করে ইউপি নির্বাচনের অংশ নেয়ার যুক্তিতাও খুঁজছেন বিএনপিপন্থী প্রার্থীরা।
ইউপি নির্বাচনে প্রথমবারের মতো চেয়ারম্যান পদে দলীয়ভাবে নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এতে রাজনৈতিক অঙ্গন ও নির্বাচন প্রক্রিয়ায় নতুন মাত্রা যোগ হয়েছে। যদিও চেয়ারম্যান পদে স্বতন্ত্র প্রার্থী হওয়ারও সুযোগ রয়েছে। সদস্য (মেম্বার) পদে আগের মতোই নির্দলীয়ভাবে ভোট হবে। এদিকে পৌর নির্বাচনের মতো ইউপিতেও ২০-এর অধিক রাজনৈতিক দল অংশগ্রহণ করবেন বলে আশা করা হচ্ছে। এরই মধ্যে রাজনৈতিক দলগুলো প্রার্থিতা চূড়ান্ত করার প্রক্রিয়া শুরু করেছে। যথা সময়ে সিদ্ধান্ত নিবেন।
এদিকে, রাজনৈতিক দলের প্রস্তুতির সাথে শুরু হয়েছে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া-না হওয়ার হিসাব। শুক্রবার আনুষ্ঠানিকভাবে বিএনপির পক্ষ থেকে ঘোষণা দেওয়া হয়েছে নির্বাচন অংশ নেয়ার। এরই মধ্যে বিএনপি হাইকমান্ড থেকে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হয়েছে। নির্বাচনকে সুষ্ঠু করার আহ্বান জানিয়েছে সরকারে অন্যতম শরিক ওয়ার্কার্স পার্টি। এছাড়া রাজনৈতিক দল ও ব্যক্তির পক্ষ থেকে ধারাবাহিকভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করা হচ্ছে।
দলীয় মনোনয়ন না পেলেও প্রতিদ্বন্দ্বিতা অংশ নিবেন এমন একাধিক প্রার্থী নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়া নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন। তবে প্রার্থী চূড়ান্ত হওয়ার আগে এমন বক্তব্য প্রকাশ্যে বলতে রাজি নন তারা। গতকাল সাতক্ষীরা পাবনা ও রাজশাহীর একাধিক চেয়ারম্যান প্রার্থী এমন শঙ্কা প্রকাশ করেন।
বিএনপির মনোনয়ন প্রত্যাশী প্রার্থীরা ধরেই নিয়েছেন নির্বাচন সুষ্ঠু হবে না। তবু কেন্দ্রীয় নেতাদের নির্দেশে নির্বাচনে অংশ নিবেন।
তবে নির্বাচন সুষ্ঠু হওয়ার ব্যাপারে আশাবাদী নির্বাচন কমিশন (ইসি)। নির্বাচন কমিশনার মো. শাহনেওয়াজ বলেন, আইন-শৃংখলা বাহিনীর সঙ্গে আলোচনা করেই নির্বাচনের সিদ্ধান্ত নিয়েছি, যেন তারা সুন্দরভাবেই নির্বাচন পরিবেশ নিশ্চিত করতে পারে। তাই আইন-শৃংখলা বাহিনীর কেউ নির্বাচনে গাফিলতি করলে বা কারও পক্ষে কাজ করার চেষ্টা করলে কঠোরভাবে দমন করব। গত পৌরসভা নির্বাচনেও কিছু কিছু গাফিলতির ঘটনা ঘটেছিল, আমরা ব্যবস্থা নিয়েছি। ইউপি নির্বাচন উপলক্ষে আরও কঠোরভাবে তাদের হ্যান্ডেল করব। আইন-শৃংখলা বাহিনীর উদ্দেশে বলতে চাই, কেউ গাফিলতি করলে বা দায়িত্ব পালনে ব্যর্থ হলে সঙ্গে সঙ্গে কঠোর ব্যবস্থা নেয়া হবে।
স্থানীয় সরকারের তৃণমূল স্তরের এই নির্বাচনকে ঘিরে রাজনীতির উত্তাপ হাওয়া বইছে দেশের প্রায় সব অঞ্চলে। যেসব ইউনিয়নের নির্বাচনী তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে সেই সব এলাকায় চলছে ভোটের নানা হিসাব। আর যে সমস্ত ইউপি নির্বাচন উপযোগী তবে তফসিল হয়নি তাদের চোখ কবে তফসিল হবে।
দেশের ইউনিয়ন পরিষদগুলো ভৌগোলিকভাবে গ্রামপর্যায়ে অবস্থিত। তফসিল ঘোষণার খবর ছড়িয়ে পড়লে বৃহস্পতিবার গ্রামগঞ্জে নির্বাচনী আবহ বইতে শুরু করে। সম্ভাব্য প্রার্থীদের মধ্যে প্রস্তুতিমূলক কার্যক্রম নেয়ার খবর পাওয়া গেছে। ২২ ফেব্রুয়ারি মনোনয়নপত্র দাখিলের শেষ দিন। তবে প্রার্থিতা চূড়ান্ত হবে ২ মার্চ।
নির্বাচনী নানা হিসাব শুরু হয়ে পাড়া-মহল্লায়। ইউপি নির্বাচনে একটি সেন্টারের ভোটের হিসাবে পাল্টে দিতে পারে ফলাফল। তাই সেই দিকে প্রার্থীদের নজর রয়েছে। তবে দলীয়ভাবে চেয়ারম্যান নির্বাচন হওয়ায় এবারের নির্বাচনে ভিন্ন এসেছে। আগে যেখানে দলীয় প্রার্থীরাও নিজেকে দল থেকে গুছিয়ে সব ধরনের ভোটারদের টানার চেষ্টা করতো। সেখানে এবারে দলীয় মনোনয়ন পেতে চলছে জোর তদবির।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ