পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ধরলার ভাঙনে ২শ’ মিটার বাঁধ ও ২ শতাধিক ঘর বাড়ি বিলীন
শফিকুল ইসলাম বেবু, কুড়িগ্রাম থেকে ঃ কুড়িগ্রামের সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নে ধরলার ভাঙনে দিশেহারা হয়ে পড়েছে ভাঙন কবলিত এলাকার মানুষজন। ইতোমধ্যে ভাঙনে নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ডের ২শ’ মিটার তীররক্ষা বাঁধ। শুকনো মৌসুমে আকস্মিক ভাঙনে ঘরবাড়ি হারানো দুই শতাধিক পরিবার খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবনযাপন করছে। এ অবস্থায় দ্রুত সরকারী সহায়তা কামনা করছেন অসহায় পরিবারগুলো।
গত এক সপ্তাহে ধরলা নদীর তীব্র ভাঙনের সদর উপজেলার মোগলবাসা ইউনিয়নের মোগলবাসা গ্রামের বাজার সংলগ্ন প্রায় ২শ’ মিটার তীররক্ষা বাঁধ, দুই শতাধিক ঘরবাড়ি ও কয়েক একর ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে গেছে। হুমকির মুখে পড়েছে ইউনিয়নের সাথে জেলা শহরের যোগাযোগের একমাত্র পাকা সড়ক, ঐতিহ্যবাহী মোগলবাসা হাট, ইউনিয়ন পরিষদ ভবন, নিধিরাম, বাঞ্ছারাম ও কিসামত গ্রামসহ দুইটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। ভাঙন রোধে কোন ব্যবস্থা নেয়া না হলে আগামী এক মাসের মধ্যে ঐতিহ্যবাহী মোগলবাসা হাটসহ তিনটি গ্রাম, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও পাকা সড়ক নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবে। বন্ধ হয়ে যাবে মোগলবাসা ইউনিয়নের সাথে জেলা শহরের যোগাযোগ ব্যবস্থা।
শেষ আশ্রয়টুকু হারিয়ে মাথা গোঁজার ঠাঁই খুঁজে পাচ্ছেন না নদী ভাঙনের শিকার পরিবারগুলো। হাতে টাকা ও খাবার না থাকায় দু’চোখে শুধুই অন্ধকার দেখছেন তারা।
বারবার যোগাযোগের পরও পানি উন্নয়ন বোর্ডের সাড়া না পাওয়ায় নদী পাড়ের মানুষজনকে ঘরবাড়ি হারাতে হচ্ছে বলে অভিযোগ এলাকার মানুষের।
ধরলার ভাঙনের শিকার আবুল কবিরাজ জানান, হঠাৎ ধরলার তীব্র ভাঙনে ভিটে-মাটি সব নদীগর্ভে চলে গেছে। কোন রকমে ঘরের চাল রক্ষা করতে পারছি। তাও আবার রাস্তার একদিকে রেখেছি। এখন কোথায় যাবো তার কোন উপায় নাই। কেউ এমনিতে বাড়ি করার জায়গা দেয় না।
ভাঙনের শিকার দুদু মিয়া জানান, বাড়িঘর কোন রকমে সরিয়ে নিয়েছি। বউ-বাচ্চা নিয়া আজ ৪ দিন ধরে খোলা আকাশের নিচে বসবাস করতেছি। খাবারও নাই, হাতে টাকাও নাই। চেয়ারম্যান-মেম্বার এখন পর্যন্ত কোন সাহায্যও দেয় নাই। এ অবস্থায় আছি। সামনে কি হবে আল্লাহই ভালো জানেন।
দুদু মিয়া ও আবুল কবিরাজের মতো একই অবস্থা এখন মোসলেম উদ্দিন, নুরুল্ল্যা ও মুন্নিসহ ২ শতাধিক পরিবারের।
মোগলবাসা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান নুরুজ্জামান বাবলু জানান, নদী ভাঙন শুরুর আগে থেকেই আমরা এলাকাবাসীসহ স্থানীয় পানি উন্নয়ন বোর্ড, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে একাধিকবার যোগাযোগ করেছি। মানববন্ধন করে স্মারকলিপি প্রদান করেছি। কিন্তু সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ কোন ভুরূক্ষেপই করেনি। এ জন্য এ এলাকার ২ শতাধিক পরিবারকে ঘরবাড়ি হারিয়ে নিঃস্ব হতে হয়েছে। আমরা ক্ষতিগ্রস্তদের নাম তালিকা করে সাহায্যের জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা বরাবর পাঠিয়েছি। ধরলার ভাঙন রোধে কার্যকরী ব্যবস্থা নিতে দ্রুত পানি উন্নয়ন বোর্ডসহ সরকারের হস্তক্ষেপ কামনা করছি। তা নাহলে দু-একদিনে মধ্যেই মোগলবাসার একমাত্র পাকা সড়কটি নদীগর্ভে চলে যাবে।
এ ব্যাপারে কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী মোঃ মোখলেছুর রহমান জানান, আমরা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে ধরলার ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে বাঁশের বান্ডাল দেয়ার কাজ শুরু করেছি। আমরা মোগলবাসা এলাকার ভাঙন রোধে স্থায়ী বন্দোবস্ত নেয়ার জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবহিত করেছি। বরাদ্দ পেলে পরবর্তীতে স্থায়ী বন্দোবস্ত নেয়া হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।