পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মাগো ওরা আমার মুখের ভাষা কাইড়া নিতে চায়/ ওরা কথায় কথায় শিকল পরায় আমার হাতে পায়... হ্যাঁ, ১৯৪৭ সালে ধর্মের ভিত্তিতে পাকিস্তান গঠনের পর থেকেই এই ষড়যন্ত্রে লিপ্ত হয় শাসক গোষ্ঠী। বাঙালির ন্যায্য দাবি কখনই তারা মেনে নেয়নি। এ অঞ্চলের মানুষের সূক্ষ্ম অনুভূতিগুলো কখনো তাদের স্পর্শ করতে পারেনি। এ কারণেই বাংলাকে পাশ কাটিয়ে উর্দুকে একমাত্র রাষ্ট্রভাষা করার অপপ্রয়াস চালায়। সেই ’৪৭ সাল থেকেই এ দুরভিসন্ধি নিয়ে এগোচ্ছিল। নিজের সংস্কৃতির প্রতি অনুরক্ত পূর্ব পাকিস্তানিরা গোড়াতেই তা ধরে ফেলে। গড়ে তোলে প্রতিবাদ-প্রতিরোধ।
১৯৫২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এসে আন্দোলন ছড়িয়ে পড়তে থাকে সর্বত্র। কেননা ভাষা হলো যে কোন জাতির মূল সংস্কৃতি। ১৯৫২ সালে বাঙালি জাতি কেবল ভাষার দাবিতে আন্দোলন করেনি। মাতৃভাষা বাংলার পাশাপাশি তারা সংস্কৃতি রক্ষার আন্দোলনেও ঝাঁপিয়ে পড়ে। আর এই আন্দোলনে আত্মত্যাগ করেন রফিক, সালাম, বরকত, জব্বার, শফিউরসহ নাম না জানা আরও অনেক বাঙালি বীর সন্তান। পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী শুধু উর্দুকে রাষ্ট্রভাষা করে বাঙালিদের মুখে তুলে দিতে চায়নি। একই সঙ্গে এই বঙ্গের মানুষের জীবনমানসহ পুরো সংস্কৃতির চেহারা পাল্টে দিতে চেয়েছে। কিন্তু বাঙালি যুবকেরা পাকিস্তানি হানাদার শাসকগোষ্ঠীর সেই আশা পূরণ হতে দেয়নি। বরং তারা বুকের তাজা রক্তে রাজপথ রাঙিয়ে আদায় করে মাতৃভাষা বাংলা, রক্ষা করে হাজার বছরের বাংলা ভাষার সংস্কৃতি।
বায়ান্নর ধারাবাহিক কর্মসূচির অংশ হিসেবে চার ফেব্রুয়ারি ঢাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য ধর্মঘট আহ্বান করা হয়। ধর্মঘট শুধু ঢাকার স্কুল-কলেজের শিক্ষার্থীদের জন্য ডাকা হলে স্বতঃস্ফূর্তভাবে এই ধর্মঘট বাংলার সকল শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে পালন করে শিক্ষার্থীরা। ৪ ফেব্রুয়ারির সেই স্বতঃস্ফূর্ত আন্দোলনই ছিল মূলত ভাষা আন্দোলনের চূড়ান্ত আন্দোলনের প্রস্তুতি। ৪ ফেব্রুয়ারি থেকে ২০ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীরা ভাষা আন্দোলনের জন্য সফল প্রস্তুতি গ্রহণের পর ২১ ফেব্রুয়ারি চূড়ান্ত আন্দোলন চলে। ৫ ফেব্রুয়ারি নিখিল পূর্ব পাকিস্তান মুসলিম ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কার্যকরী সংসদের জরুরি অধিবেশন অনুষ্ঠিত হয়। এই সভা থেকে সর্বসম্মতিক্রমে সবাইকে আহ্বান জানানো হয় বাংলাকে পাকিস্তানের অন্যতম রাষ্ট্রভাষা করতে সবাই যেন আপসহীন সংগ্রাম চালিয়ে যায়। এই আহ্বান যদিও ছাত্রদের করা হয়েছে। কিন্তু প্রকৃত পক্ষে সকল মানুষের মধ্যে এই আহ্বানের সাড়া পড়ে। আর এই আহ্বানে সাড়া দিয়ে বাংলার মানুষ তাদের মাতৃভাষা রক্ষা ও আদায়ের দাবির আন্দোলনে ঝাঁপিয়ে পড়ে। এভাবেই ফেব্রুয়ারি বাঙালি জাতির মনে গেঁথে গেছে ভাষার সাথে। তাইতো ভাষার মাস ফেব্রুয়ারি জুড়েই থাকে নানা আয়োজন। ইতিহাসের এ গৌরবান্বিত আন্দোলনগুলো দেশ ও বিশ্বের নতুন প্রজন্মের কাছে তুলে ধরার লক্ষ্যে আয়োজন করা হয় সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।