পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
২০১১ সালের জুলাইয়ে ৭০ মিটারগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ সংগ্রহের প্রকল্প নেয়া হয়। নির্ধারিত মেয়াদ ছিল ২০১৭ সালের জুন মাস পর্যন্ত ছয় বছর। প্রকল্পের প্রাথমিক ব্যয় প্রক্ষেপণ করা হয় ১ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকা। এই ক্রয় প্রক্রিয়ায় অংশ নিতে আগ্রহী দরদাতাদের জন্য ২০১১ থেকে ২০১৪ সাল পর্যন্ত তিনবার দরপত্র আহ্বান করে রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
২০১৮ সালে দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানি হুন্দাই রোটেমের সাথে লোকোমোটিভ ক্রয়ের ২ হাজার ৩৫ কোটি টাকার একটি চুক্তি সই হয়। পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় প্রকল্প বাস্তবায়নের মেয়াদ তিনবার বাড়িয়ে ২০২৪ সাল পর্যন্ত করেছে। ছয় বছরের মধ্যে ৭০ মিটার গেজ লোকোমোটিভ সংগ্রহের একটি প্রকল্প এক দশক পরও বাস্তবায়িত হয়নি। এ প্রকল্পের মেয়াদ তিন বার বাড়ানোর পরও অগ্রগতির পরিমাণ শূন্য দশমিক ৫ শতাংশ। সবশেষ হুন্দাই রোটেম জানিয়েছে তারা ইঞ্জিনগুলো দিতে পারবে না। এখন অনিশ্চয়তায় প্রকল্পটির ভবিষ্যৎ। ১ হাজার ৯৪৬ কোটি টাকার প্রাথমিক ব্যয় বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২ হাজার ৬৫৯ কোটি টাকা। এরপরও প্রকল্পটি কবে নাগাদ শেষ হবে সে ব্যাপারে নিশ্চিত নয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ।
বাংলাদেশ রেলওয়ে সূত্র জানায়, বর্তমানে বাংলাদেশ রেলের ইঞ্জিন আছে ২৮১টি। এর মধ্যে ১৮৬টি মিটারগেজ ও ৯৬টি ব্রডগেজ ইঞ্জিন। এসব ইঞ্জিনের অর্থনৈতিক আয়ুষ্কাল ২০ বছর। অথচ এরই মধ্যে ৩০ বছর অতিক্রম করেছে ১৬৮টি ইঞ্জিনের বয়স। পুরোনো এসব ইঞ্জিনের মধ্যে রয়েছে ১১০টি মিটারগেজ ও ৫৮টি ব্রডগেজ। মাত্রাতিরিক্ত মেরামত খরচ ও অধিক জ্বালানি খরচ করেই মেয়াদোত্তীর্ণ এসব রেল ইঞ্জিন চলমান রাখা হয়েছে। এছাড়া মডেল অনেক পুরোনো হওয়ায় মেরামতের সময় প্রয়োজনীয় খুচরা যন্ত্রাংশও মিলছে না অনেক ইঞ্জিনের। ফলে ইঞ্জিনের ঘাটতি দেখা দিয়েছে রেলে।
কোরিয়া থেকে ৭০টি ইঞ্জিন পাওয়ার সম্ভাবনা জাগাচ্ছিল নতুন আশা। কিন্তু প্রায় শেষ সময়ে কোম্পানি চুক্তি বাতিল করায় একদিকে সরকারের সোয়া পাঁচ কোটি টাকা যেমন গচ্চা গেলো, অন্যদিকে প্রকল্পের ভবিষ্যৎ নিয়ে দেখা দেয় অনিশ্চয়তা। ৭০টি মিটারগেজ ডিজেল ইলেক্ট্রিক লোকোমোটিভ সংগ্রহ প্রকল্পের উদ্যোগ নেয়া হয় ২০১১ সালের ১০ জুলাই। ২০২৪ সালের ৩০ জুন ৭০টি ইঞ্জিন দেয়ার সময়সীমা ছিল। এজন্য মোট দুই হাজার ৬৭৯ কোটি ৯৫ লাখ ১০ হাজার টাকা ঋণ দেয়ার সিদ্ধান্ত ছিল দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানির। ঋণের আন্তঃব্যাংক সুদের হার ১ দশমিক ৬০ শতাংশ নির্ধারণ করা হয়। একপর্যায়ে কোম্পানিটির সঙ্গে ঋণের শর্ত নিয়ে ঝামেলা তৈরি হয় রেলের। সরকারি উৎস সংস্থানেও তৈরি হয় জটিলতা।
প্রকল্পটি ২০১১ সালের ২৩ আগস্ট জাতীয় অর্থনৈতিক পরিষদের নির্বাহী কমিটিতে (একনেক) অনুমোদিত হয়। পরবর্তীসময়ে মেয়াদ ২০১১ সালের জুলাই থেকে ২০২৪ সালের জুন পর্যন্ত বাড়িয়ে সংশোধিত ডিডিপি (উন্নয়ন প্রকল্প প্রস্তাবনা) ২০১৯ সালের জানুয়ারিতে একনেকে অনুমোদিত হয়। শুরু থেকে হুন্দাই রোটেম কোম্পানি একাধিকবার দরপত্র বাতিল করে। এর মধ্যে ২০২১ সালেই বাতিল করে চার বার। একই বছর সেপ্টেম্বর মাসে কোম্পানিটি চুক্তিমূল্য ১৬ শতাংশ বাড়ানোর প্রস্তাব দেয়। তবে বাংলাদেশ রেলওয়ের পক্ষ থেকে প্রস্তাবে না জানানো হয়। পরবর্তীসময়ে একই বছর অর্থ বিভাগের মতামতের পরিপ্রেক্ষিতে সহজ শর্তে ঋণ চাওয়া হলেও প্রতিষ্ঠানটি তা দিতে সাড়া দেয়নি। ১৬ শতাংশ মূল্য না বাড়ানোয় হুন্দাই রোটেম ক্রয়চুক্তি বাস্তবায়নে অনীহা প্রকাশ করে। শেষে চুক্তিটি বাতিল করে বাংলাদেশ রেলওয়েতে চিঠি দিয়েছে কোরিয়ান কোম্পানিটি।
৭০ মিটারগেজ ডিজেল ইলেকট্রিক লোকোমোটিভ ক্রয় প্রকল্পের পরিচালক আহমেদ মাহবুব চৌধুরী জানিয়েছেন, অর্থায়নের সমস্যার কারণে প্রকল্পটি কোনো অগ্রগতি লাভ করেনি। অর্থ বিভাগ সহজ শর্তের ঋণগ্রহণে জোর দিচ্ছে, কিন্তু তা পাওয়া যাচ্ছে না। বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দরপত্র আহ্বানের আগে তহবিলের ব্যবস্থা করেন কর্তৃপক্ষ। তবে এই প্রকল্পের ক্ষেত্রে তা করা হয়নি বলে জানান তিনি। এখন কী করা যায় সবাই বসে একটা সিদ্ধান্ত নিতে হবে। চুক্তিটি দক্ষিণ কোরিয়ান কোম্পানিটি এরই মধ্যে বাতিল করেছে। এখন বাতিলের কাগজে সই করা ছাড়া কোনো উপায় নেই।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।