Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

গত বছর ৯১০টি উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন করেছে পাউবো

পঞ্চায়েত হাবিব | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:০৮ এএম

৩১টির কাজ দ্রুত শেষ করতে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশ : ধরলা নদীর তীর সংরক্ষণের অগ্রগতি মাত্র ৬ শতাংশ
সারা দেশে গত বছর ৯১০টি অবকাঠোমো উন্নয়ন প্রকল্পের বাস্তবায়ন কাজ শেষ হয়েছে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে আরো ৩১টি প্রকল্পের কাজ দ্রæত শেষ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দিয়েছে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়। এদিকে বিদেশি অর্থায়নের ব্লক-গোল্ড প্রোগ্রাম প্রকল্পের কাজ ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ বাস্তবায়ন করেছে। অন্যদিকে ধরলা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, ডান ও বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্প বাস্তবায়নের অগ্রগতি মাত্র ৬ শতাংশ বলে পানি উন্নয়ন বোর্ড সূত্রে জানা গেছে।

পানিসম্পদ উপমন্ত্রী একেএম এনামুল হক শামীম ইনকিলাবকে বলেন, বর্তমান সরকার ক্ষমতায় আসার পরে সারা দেশে নদী উন্নয়নের কাজ চলছে। গত বছর ৯১০টি অবকাঠোমো উন্নয়ন প্রকল্প বাস্তবায়ন হয়েছে। আগামী ৩০ জুনের মধ্যে আরো ৩১টি প্রকল্পের কাজ দ্রæত শেষ করতে পানি উন্নয়ন বোর্ডেকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডে সূত্রে জানা গেছে, গত বছর সারা দেশে বাস্তবায়িত ৯১০টি প্রকল্পের মধ্যে সেচ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি নিষ্কাশন সুবিধার আওতাভুক্ত এলাকা ৬৫ দশমিক ১২ লাখ হেষ্টর, সেচ সুবিধার আওতাভুক্ত এলাকা (১৩৭টি সেচ প্রকল্প বাস্তবায়িত)। এতে সুবিধায় পেয়েছে ১৬ দশমিক ৪৭ লাখ হেষ্টর জমি। তিস্তা, মুন, বুড়িতিস্তা ও ট্যাংগন ব্যারেজ কাজ হয়েছে। ভ‚মি সৃজন ও পুনরুদ্ধার করা হয়েছে ১০৪৫ দশমিক ৮১ বর্গকিলোমিটার। ৩১টি জেলা নদীভাঙন থেকে রক্ষা পেয়েছে।

নদীর ভাঙন রোধে তীর প্রতিরক্ষার কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে ১৩৭৮ কিলোমিটার। স্পার নির্মাণ হয়েছে ২৫১টি এবং ফ্লাড ওয়াল নির্মাণ করা হয়েছে ১৮ দশমিক ২২৪ কিলোমিটার। বাঁধের নির্মাণ কাজ শেষ হয়েছে ১৬ দশমিক ৪৪৩ কিলোমিটার। উপলীয় বাঁধ (১৩৯টি পোল্ডার) ৫ দশমিক ৮১০ কিলোমিটার, ডুবন্ত বাঁধ (৯৯টি হাওর-উপপ্রকল্পের মাধ্যমে) ২ দশমিক ৬৭৩ কিলোমিটার এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ বাঁধ ৭ দশমিক ৯৬০ কিলোমিটার। সেচ খালের ডাইক নির্মাণ ৩ দশমিক ৬১২ কিলোমিটার।

এছাড়া ১ দশমিক ৩২৩ কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর পাকা রাস্তা নির্মাণ করেছে সড়ক ও জনপথ অধিদফতর। ৪ দশমিক ১৮৩ কিলোমিটার পানি উন্নয়ন বোর্ডের বাঁধের ওপর পাকা রাস্তা নির্মাণ করেছে এলজিইডি ও ১ দশমিক ৩২৩ কিলোমিটার কাঁচা ও পাকা সড়কের উন্নয়ন কাজ শেষ করেছে। ৫ দশমিক ৩৫৫ কিলোমিটার সেচ খাল ও ৪৫০২ কিলোমিটার পানি নিষ্কাশন খাল সংস্কার কাজ বাস্তবায়ন করেছে।

অপরদিকে হাইড্রোলিক স্ট্রাকচার ১৫ হাজার ৬৮২টি, পাম্প হাউজের কাজ হয়েছে ২৩টি, ১ হাজার ৪২২টি ক্লোজার কাজ হয়েছে। ৫ হাজার ৭৪২টি ব্রিজ ও কালভার্টের কাজ, ৫টি রাবার ড্যাম এবং ২ দশমিক ০৩২ কিলোমিটার নদী পুনঃখনন এবং ১ দশমিক ০৬৯ নদী ড্রেজিং সম্পন্ন করেছে। এছাড়া আগামী জুন মাসের মধ্যে যেসব কাজ শেষ হবে সেগুলো হচ্ছে, ধলেশ্বরী-পুংলী-বংশী-তুরাগ ও বুড়িগঙ্গা রিভার সিস্টেম নতুন বুড়িগঙ্গা নদীর পুনরুদ্ধার প্রকল্প।

ময়মনসিংহ জেলার গফরগাঁও উপজেলার চর আলগী ইউনিয়নের চারদিকে বেড়ীবাঁধ নির্মাণ প্রকল্প, কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলার নির্মিতব্য মিঠামইন সেনা স্থাপনার ভ‚মি সমতল উঁচুকরণ ওয়েভ প্রোটেকশন ও তীর প্রতিরক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ, টাঙ্গাইল জেলার ভুঞাপুর উপজেলার অর্জুন এলাকা থেকে যমুনা নদীর ভাঙন থেকে রক্ষার্থে নদীতীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ।

নেত্রকোনা জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলার ডিংগাপোতা হাওরের ভভ্যন্তরে খাল ও পুনঃখনন ও ফসল পরিবহনের ব্যবস্থার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ। কুমিল্লা জেলার পুরাতন ডাকাতিয়া-নতুন ডাকাতিয়া নদীর সেচ ও নিষ্কাশন প্রকল্প, ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলা তিতাস নদীর পুনঃখনন প্রকল্প ও ব্রাক্ষণবাড়িয়া জেলার সরাইল উপজেলার রাজার এলাকা মেঘনা নদীর বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্পের কাজ।

লক্ষীপুর জেলার সদর উপজেলায় রহমতখালী খাল রায়পুর উপজেলায় ডাকাতিয়া নদীর ভাঙন তীর রক্ষা প্রকল্প, মেঘনা নদীর ভাঙন থেকে চাঁদপুর জেলার হরিণা ফেরিঘাট এলাকা এবং চরভৈরবী এলাকার বাজার রক্ষা প্রকল্প। চট্টগ্রাম জেলার বাঁশখালী উপজেলার ভাঙনপ্রবণ এলাকায় স্নোপ প্রতিরক্ষা প্রকল্পের কাজ, ফটিকছড়ি ও হাটহাজারী উপজেলা হালতদা নদী ও ধুরং খালের তীর সংরক্ষণ প্রকল্প এবং রাউজান উপজেলা ভাঙন প্রতিরক্ষা উন্নয়ন প্রকল্পের কাজসহ ৩১টি উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ দ্রæত বাস্তবায়ন করছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।

এদিকে কুড়িগ্রাম জেলার কুড়িগ্রাম সদর উপজেলা, রাজারহাট ও ফুলবাড়ি উপজেলা ধরলা নদীর বন্যা নিয়ন্ত্রণ, ডান ও বাম তীর সংরক্ষণ প্রকল্পটি ব্যয় ধরা হয়েছে ৫৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১২ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। গত ২০২০ সালে শুরু হয়ে আগামী ২০২৩ সালে শেষ হবার কথা। কিন্তু এখনো এ প্রকল্পের কাজ শুরু হয়নি। এর মধ্যে ১ হাজার ৯৬২ কোটি টাকা ছাড় করা হয়েছে।

কুড়িগ্রাম জেলার রৌমারি উপজেলার ঘুঘুমারী থেকে ফুলুয়ারচর ঘাট ও রাজিপুর উপজেলা সদর থেকে মোহনগঞ্জ বাজার পর্যন্ত ব্রহ্মপুত্র নদের বামতীর সংরক্ষণ প্রকল্প ৪৮ হাজার ৪৩ কোটি টাকা ব্যয়ে ২০১৯ সালে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়ে। এর মধ্যে ১৯ হাজার ৫০০ কোটি টাকা ছাড় দিয়েছে সরকার। তবে কাজের অগ্রগতি মাত্র ২২ শতাংশ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের মহাপরিচালক ফজলুর রশিদ ইনকিলাবকে বলেন, গত বছর সারাদেশে ৯১০টি প্রকল্পে বাস্তবায়ন হয়েছে। এর মধ্যে সেচ, বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি নিষ্কাশন, ১৩৭টি সেচ প্রকল্প এলাকায় ১৬ দশমিক ৪৭ লাখ হেষ্টর ভ‚মি সুবিধা পেয়েছে। ১০৪৫ দশমিক ৮১ বর্গকিলোমিটার ভ‚মি সৃজন ও পুনরুদ্ধার করা হয়েছে। আমাদের সব প্রকল্পে অগ্রগতি হয়েছে ৯৪ দশমিক ৫০ শতাংশ। আর যেসব জেলায় প্রকল্পের কাজ শেষ করতে পারেনি তাদের দ্রæত শেষ করতে বলা হয়েছে।

 

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাউবো


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ