Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বান্দরবানে সেনাবাহিনী-জেএসএস সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গোলাগুলি

চট্টগ্রাম ব্যুরো, স্টাফ রিপোর্টার, বান্দরবান ও পটুয়াখালী জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:১১ এএম

পার্বত্য জেলা বান্দরবানের রুমা জোনের একটি টহল দলের সাথে সন্তু লারমা সমর্থিত জেএসএস মূল দলের সশস্ত্র সন্ত্রাসীদের গোলাগুলিতে সেনাবাহিনীর একজন সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার ও তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী নিহত হয়েছে। এই ঘটনায় একজন সেনা সদস্য গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। গত বুধবার রাত সাড়ে দশটা নাগাদ দুর্গম পাহাড়ি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।

সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে বলা হয়, জেএসএস সন্ত্রাসীদের একটি সশস্ত্র দল রুমা উপজেলার বথিপাড়া এলাকায় চাঁদাবাজির জন্য আসছে এমন তথ্যের ভিত্তিতে রাইং খিয়াং লেক আর্মি ক্যাম্প থেকে সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবের নেতৃত্বে একটি টহল দল সেখানে যায়। রাত আনুমানিক সাড়ে ১০টায় টহল দলটি উক্ত এলাকায় পৌঁছালে পাড়ার নিকটস্থ একটি জুম ঘর থেকে সন্ত্রাসীরা অতর্কিত গুলি বর্ষণ শুরু করে। জবাবে সেনা টহল দলের পাল্টা হামলায় সন্তু লারমার মদদপুষ্ট জেএসএস মূল দলের তিনজন সশস্ত্র সন্ত্রাসী গুলিবিদ্ধ হয়ে ঘটনাস্থলে মারা যায়।

এ সময় পলায়নপর সন্ত্রাসীদের এলোপাথাড়ি গুলিতে মাথায় আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে টহল কমান্ডার সিনিয়র ওয়ারেন্ট অফিসার হাবিবুর রহমান ঘটনাস্থলেই শাহাদাত বরণ করেন। এ সময় সৈনিক ফিরোজ নামে একজন সেনাসদস্য ডান পায়ে গুলিবিদ্ধ হন। আহত সেনা সদস্যকে গতকাল রুমা থেকে চট্টগ্রাম সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে উন্নত চিকিৎসার জন্য নিয়ে আসা হয়।

উক্ত অভিযানে সেনা টহল দল কর্তৃক সন্ত্রাসীদের ব্যবহৃত একটি এসএমজি, ২৭৫ রাউন্ড তাজা গুলি, তিনটি অ্যাম্যোনিশন ম্যাগাজিন, তিনটি বন্দুক, পাঁচ রাউন্ড বন্দুকের গুলি, চার জোড়া ইউনিফর্ম এবং চাঁদাবাজির নগদ ৫২ হাজার ৯০০ টাকা উদ্ধার করা হয়। সেনা টহল দল উক্ত এলাকায় ব্যাপক তল্লাশি জারি রেখেছে এবং স্থানীয়দের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা হয়েছে।

উল্লেখ্য, পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তিচুক্তির অনুচ্ছেদ ‘ঘ’- ধারা অনুযায়ী সকল অস্ত্র ও গোলাবারুদ জমা দেয়ার মাধ্যমে তৎকালীন শান্তিবাহিনী সকল সদস্যের আত্মসমর্পণের শর্ত থাকলেও সন্তু লারমার নেতৃত্বাধীন জেএসএস তা ভঙ্গ করে চুক্তি সম্পাদনের পরবর্তী সময় থেকেই সশস্ত্র সন্ত্রাসী লালন করে আসছে। যদিও প্রায়শ সন্তু লারমা ও তার দল সরকারের বিরুদ্ধে শান্তি চুক্তির শর্ত ভঙ্গ ও বাস্তবায়ন না করার অভিযোগ করে থাকে।

বর্তমানে পার্বত্য চট্টগ্রামে তৎপর চারটি আঞ্চলিক দল হত্যা, গুম, চাঁদাবাজি ইত্যাদি দুষ্কৃতিমূলক কর্মকান্ড পরিচালনার মাধ্যমে পাহাড়ের নিরীহ সাধারণ মানুষের জীবনকে অতিষ্ঠ করে তুলেছে। পাশাপাশি সশস্ত্র আন্দোলনের মাধ্যমে পার্বত্য চট্টগ্রামকে বিচ্ছিন্ন করে স্বাধীন জুম্মল্যান্ড সৃষ্টির পায়তারা করছে, যা নিঃসন্দেহে দেশদ্রোহিতার শামিল। এ পরিস্থিতিতে দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনী বুকের রক্ত দিয়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও ভুখন্ডের অখন্ডতা রক্ষায় বদ্ধপরিকর।

এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে নিহত সেনাকর্মকর্তা হাবিবুর রহমানের লাশ চট্টগ্রাম থেকে হেলিকপ্টার যোগে পটুয়াখালীতে নিয়ে আসা হয়। বিকেল ৫টা ৩০ মিনিটে দিকে তার জানাযা সম্পন্ন হয়। নিহত হাবিবুর রহমান বাবা, মা, স্ত্রী ও দুই ছেলে রয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সেনা সদস্য


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ