Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দিনে গড়ে ছয় হাজার টাকার দুধ বিক্রি

মাত্র ৬০ হাজার পুঁজিতে মাসে আয় ২ লাখ

মহসিন রাজু, বগুড়া থেকে | প্রকাশের সময় : ৪ ফেব্রুয়ারি, ২০২২, ১২:১১ এএম

এখন শুধুই সামনের দিকে এগিয়ে যাওয়া। পেছনে ফেলে আসা কষ্টের অতীতকে স্মরণ করে অক্লান্ত পরিশ্রম করছেন। পরিশ্রমই তাকে সাফল্যের সুবাতাস দিয়েছে। মাত্র ৬০ হাজার টাকা দিয়ে পথচলা শুরু করেন। বর্তমানে মাসে আয়ের পরিমাণ প্রায় দুই লাখ টাকা।

এমন স্বপ্নকে বাস্তব করেছেন বগুড়া সদরের বারোপুর ঝোপগাড়ি এলাকার বোরহান উদ্দিন। তিনি ৬০ হাজার টাকা ক্ষুদ্র ঋণ নিয়ে ডেইরি ফার্ম করেছেন। এই উদ্যোগকে প্রথমে কেউই সমর্থন দেয়নি। তাকে শুনতে হয়েছে ঋণের পুরো টাকাই পানিতে যাবে। কিন্তু না; তিনি কঠোর পরিশ্রম করে তাক লাগিয়ে দিয়েছেন। তার গড়া ডেইরি ফার্মে এখন ১৮টি গাভী।

ফার্মের অর্ধেক গাভীই দুধ দেয়। প্রতিদিন কমপক্ষে ১০০ কেজি দুধ পাওয়া যায়। জেলা ও উপজেলা শহরে গরুর খাঁটি দুধের আকাল। গুঁড়া দুধকে গরুর ‘খাঁটি’ বলে হরদম বিক্রি হয়। বোরহান উদ্দিন তার ফর্মের গাভীর দুধ শতভাগ খাঁটি বলে দাবি করেন। আর যারা নিয়মিত দুধ কেনেন তাদের কথা, ‘একবার কেনার পর খাঁটি দুধের আকর্ষণে নিয়মিত আসতে হয়।’

ক্রেতারা প্রতিদিন সকাল ও বিকালে দুধ কিনতে বোরহানের ক্ষুদ্র ডেইরি ফার্মে ভিড় করেন। তিনি জানান, প্রতিদিন গড়ে ৬ হাজার টাকার দুধ বিক্রি করেন। বর্তমানে মাসে শুধু দুধ বিক্রি করে আয় হচ্ছে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা। এই টাকায় চলে ডেইরি ফার্মের যাবতীয় খরচ। ফার্মে দুইজন কর্মচারি রেখেছেন। তাদেরকে মাসে বেতন দিচ্ছেন ১২ হাজার টাকা করে।

এছাড়া আরো তিনজন ফার্মে কাজ করে রোজ ভিত্তিতে। বিদ্যুৎ বিল ও গরুর খাবারসহ ওষুধের জন্য দুধ বিক্রির আয় থেকে খরচ করা হয়। তাহলে কি দুধ বিক্রি করে লাভ হয় না? এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, লাভ হয় গরুর বাচ্চা বিক্রি করে। ২০১৬ সালে মাত্র ১টি গাভী দিয়ে যাত্রা শুরু করে এ পর্যন্ত ১০টি বকনা বাছুর বিক্রি করে পেয়েছেন ১০ লাখ টাকা। এর পুরোটাই লাভ।

বোরহান জানান, তাদের পারিবারিকভাবে ছোট আকারে পোল্ট্রি খামারের ব্যবসা ছিল। ২০১৪ সালে বার্ড ফ্লু পোল্ট্রি খামারকে শেষ করে দেয়। এতে হতাশ হয়ে সিদ্ধান্ত নেন আর পোল্ট্রি ফার্ম নয় অন্যকিছু করতে হবে। হতাশার এই মুহূর্তে পাশে এসে দাঁড়ায় ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশন নামের একটি সংস্থা। এই সংস্থার সিনিয়র উপজেলা ব্যবস্থাপক মো. নুর আলমের ব্যক্তিগত আগ্রহে বোরহানকে দেয়া হয় ৬০ হাজার টাকার ক্ষুদ্র ঋণ।

মূলত একটি মাত্র গাভী ও ঋণের ৬০ হাজার টাকায় ২০১৬ সালে যাত্রা শুরু। এর সাথে কঠোর পরিশ্রম সাফল্য এনে দিয়েছে। বর্তমানে ফার্মে আছে ১৮টি গাভী ও বকনা বাছুর। মূল্য হবে আনুমানিক ৩৫ লাখ টাকা।
এ প্রসঙ্গে ক্ষুদ্র কৃষক উন্নয়ন ফাউন্ডেশনের কর্মকর্তা মো. নুর আলম জানান, যে কোনো ব্যবসায় পুঁজি একটা বড় সহায়ক উপাদান। সময়মতো অর্থের যোগান আসলে যে কোন উদ্যোক্তাই যে স্বনির্ভর হতে পারেন বোরহান উদ্দিন তারই একটা জ্বলন্ত উদাহরণ।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ডেইরি ফার্ম
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ