পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
কক্সবাজার কারাগারের কনডেমসেলে টেকনাফ থানার সাবেক ওসি প্রদীপ ও তার সহযোগী লিয়াকত তাদের কৃতকর্মের জন্য অনুতপ্ত ও লজ্জিত। মেজর (অব.) সিনহা মোহাম্মদ রাশেদ খান হত্যা মামলার রায়ে মৃত্যুদণ্ড প্রাপ্ত এই দুই আসামি প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীর ডেথ রেফারেন্স দ্রুত হাইকোর্টে যাচ্ছে। রায়ের পূর্ণাঙ্গ কপি, মামলার সব নথি ও কেস ডকেট দুয়েকদিনের মধ্যে হাইকোর্টে পাঠানোর প্রস্তুতি চলছে কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে। মামলার রাষ্ট্রপক্ষের প্রধান কৌঁসুলি কক্সবাজারের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) ফরিদুল আলম বলেন, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৭৪ ধারা অনুযায়ী মামলার আসামি মো. লিয়াকত আলী ও প্রদীপ কুমার দাশের মৃত্যুদণ্ডাদেশ অনুমোদনের জন্য ৩০০ পৃষ্ঠার পূর্ণাঙ্গ রায়ের কপি, যাবতীয় নথি ও কেস ডকেট নির্ধারিত সময়ের মধ্যে হাইকোর্টে পাঠানো হবে।
কক্সবাজার জেলার সাবেক পিপি, জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও সিনহা হত্যা মামলায় বাদী পক্ষের কৌঁসুলি মোহাম্মদ জাহাঙ্গীর বলেন, কক্সবাজার জেলা ও দায়রা জজ আদালতে থেকে মামলার রায়ের কপি, ডকেট ও নথি পাওয়ার ৭ দিনের মধ্যে হাইকোর্ট বিভাগে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত ২ আসামির ডেথ রেফারেন্সের শুনানি হবে। শুনানিতে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের পক্ষের আইনজীবী অংশ নিতে পারবেন। যে ২ আসামির মৃত্যুদণ্ডাদেশ হয়েছে তারা চাইলে ঘোষিত রায়ের বিরুদ্ধে হাইকোর্টে আপিল করতে পারবেন। তবে রায় ঘোষণার দিন থেকে পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যেই এ আপিল করা যায়। যাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশ হয়েছে তারা সর্বোচ্চ ৬০ দিনের মধ্যে আপিল করতে পারবেন বলেও জানান তিনি। রায়ে যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত টেকনাফের বাহারছড়া পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের বরখাস্ত উপপরিদর্শক নন্দলাল রক্ষিতের আইনজীবী দীলিপ কুমার দাশ জানান, তিনি মামলার রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করবেন।
এ দিকে, মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত প্রদীপ কুমার দাশ ও লিয়াকত আলীকে কারাবিধি অনুযায়ী গত সোমবার থেকে কয়েদিদের জন্য নির্ধারিত পোশাক পরিয়ে কনডেম সেলে রাখা হয়েছে। আগে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে তাদের ডিভিশন থাকলেও, রায়ের পর ডিভিশন বাতিল করা হয়েছে এবং সাধারণ কয়েদিদের মতোই কারাগারে রাখা হয়েছে।
কক্সবাজার জেলা কারাগারের তত্ত্বাবধায়ক (সুপার) নেছার আহমদ জানান, তারা জেলকোড অনুযায়ী সুবিধা পাবেন। জেল সুপার বলেন, কক্সবাজার জেলা কারাগারে মৃত্যুদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের জন্য আলাদা কোনো কনডেম সেল না থাকায়, দুটি কক্ষকে কনডেম সেল করে সেখানে তাদের ২ জনকে রাখা হয়েছে। যাবজ্জীবন কারাদণ্ডাদেশপ্রাপ্ত আসামিদের কয়েদিদের সেলে রাখা হয়েছে বলে জানান তিনি। এছাড়া, সিনহা হত্যা মামলার রায়ে বেকসুর খালাসপ্রাপ্ত ৭ জনকে গত মঙ্গলবার সন্ধ্যায় আদালতের আদেশের কাগজপত্র পেয়ে যাচাই-বাছাই করে কারাগার থেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে বলেও তিনি জানান।
এদিকে কক্সবাজার কারাগারের অন্ধ কুঠরী কনডেম সেলে অস্বস্তিকর জীবন কাটাচ্ছেন একসময়ের টেকনাফের প্রতাপশালী ওসি প্রদীপ কুমার দাশ ও তার অন্যতম সহযোগী লিয়াকত আলী। ক্ষমতার জোরে প্রদীপ সেখানে রাজা হয়ে বসেছিল। মাদক নিয়ন্ত্রণের নামে কথিত বন্দুক যুদ্ধের নাটক সাজিয়ে ক্রসফায়ারে খুন করেছিল দুই শতাধিক নিরিহ মানুষ। ক্রসফায়ার ভয় দেখিয়ে লুটপাট বাণিজ্য করেছিল কোটি কোটি টাকা। সেই টাকার ভাগ নিয়েছিল তার উপরের মহলের কর্তা, কিছু রাজনৈতিক নেতা ও মিডিয়া কর্মীরা। প্রদীপের ফাঁসির রায় হলেও তার সেই সহযোগী ও তার কাছ থেকে সুবিধাভোগীরা কেউই আজ তার পাশে নেই। জানা গেছে এসব বিষয়ে প্রদীপ ও তার ক্রসফায়ার সহযোগী লিয়াকত আজ খুবই অনুতপ্ত ও লজ্জিত।
বগুড়া ব্যুরো জানায়, চাঞ্চল্যকর মেজর সিনহা মুহাম্মদ রাশেদ খাঁন হত্যা মামলার রায়কে স্বাগত জানিয়ে দ্রুত রায় কার্যকরের দাবিতে বগুড়ায় বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত সশস্ত্র বাহিনী কল্যাণ সোসাইটি (অসকস), বাংলাদেশ প্রাক্তন সৈনিক কল্যাণ সংস্থা (বেসওয়া) ও ডিফেন্স এক্স সোলজার ওয়েল ফেয়ার এসোসিয়েশন (ডেসওয়া) ট্রাস্টের যৌথ উদ্যোগে মানববন্ধন করা হয়েছে।
গতকাল বুধবার সকালে শহরের সাতমাথায় মানববন্ধন কর্মসূচিতে সংগঠন তিনটির সদস্যরা অংশ গ্রহণ করেন। মানববন্ধন চলাকালে বক্তরা মেজর সিনহা হত্যা মামলার রায়কে স্বাগত জানিয়ে বলেন, এই রায়ে দেশবাসী খুশি হয়েছে। বক্তারা দাবি করেন, ঘাতক প্রদীপ কুমারসহ যাদের মৃত্যুদণ্ড হয়েছে অতি দ্রুত সেই রায় কার্যকর করা হোক।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।