পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
উন্নয়নের পাশাপাশি দখল-দূষণ এবং উত্তরাঞ্চলে উজানে নদ-নদীর প্রবেশমুখে বাঁধ স্পার রেগুলেটর দিয়ে পানি প্রত্যাহারের ফলে পদ্মা-যমুনা-ব্রহ্মপুত্র-তিস্তা-ধরলা ও করতোয়াসহ ৫০টিরও বেশি নদ-নদী এখন মৃতপ্রায়। সেই সাথে উত্তরাঞ্চলের সবচেয়ে বড় বিল বিলচলনসহ আরো ৫০টির মতো ছোটবড় বিলও বিলুপ্তির পথে। এর ফলে প্রকৃতি ও পরিবেশের ক্ষতির পাশাপাশি সরাসরি আঘাত এসেছে মৎস্য সম্পদের ওপর।
বিলীন হয়ে যাচ্ছে উত্তরাঞ্চলের নদী ও খাল বিলের দেশীয় মাছ। মাছের অভাবে পেশা বদল করতে বাধ্য হচ্ছে জেলে সম্প্রদায়। উত্তরাঞ্চলের বিখ্যাত মাছের আড়ত নাটোর জেলার সিংড়ার মাছ ব্যবসায়ীরা জানিয়েছেন, এক যুগ আগেও তারা তাড়াশের বড় আকারের কৈ মাছ, বগুড়ার যমুনা ও করতোয়ার বোয়াল, পাঙ্গাশ, কালিবাউশ, পদ্মার ইলিশসহ বিলের শোল, গজার ও বাইম প্রভৃতি মাছ ঢাকায় পাঠাতেন।
বর্তমানে ওইসব মাছ বিলুপ্তির পথে। তাদের মতে, গত কয়েক বছরে নদ-নদী খাল-বিল ভরাট হয়ে যাওয়ায় দেশীয় ছোটবড় মাছের তীব্র সঙ্কট দেখা দিয়েছে। মূলত দেশী মাছের স্বাভাবিক প্রজনন হচ্ছেনা। ফলে ধীরে ধীরে বিলুপ্ত হয়ে যাচ্ছে খালে বিলে নদনদীতে বিচরণরত দেশী মাছ।
বগুড়া, ঈশ^রদী ও সৈয়দপুরের মাছের আড়তদাররা বলেছেন, তাদের আড়তে জেলেরা এখন প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠা রুই, কাতলা, মৃগেল, শোল, গজার, টাকি, চ্যাং, মাগুর, কৈ, গচি, বাইম, গোলশা, ট্যাংরা পুঁটি, তিতপুঁটি, মওয়া, (মলা), চিংড়ি, ডারকে, পাঁচচোখা, চিতল, ফলি, বাউশ, কালিবাউশ, বোয়াল, ঢেউস, উরুক্কু, চান্দা, বৌ পুইয়া, খলশে, ভেটকি, করতী ইত্যাদিসহ ৫০ প্রজাতির মাছ আনেনা। তারা আনেন হাইব্রিড জাতের সিলভার কাপ, গ্রাসকাপ, ব্রিগেড, কার্ফু ও চাষকরা পাঙ্গাস।
তাদের মতে, এভাবে আর কিছুদিন চললে দেশীয় প্রজাতির মাছ একেবারেই বিলীন হয়ে যাবে। বগুড়া মৎস্য বিভাগ ও বগুড়ার সান্তাহার মৎস্য গবেষণা ইনস্টিটিউটের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, দেশে এখন উম¥ুক্ত জলাশয় ও চাষ করা প্রকল্প থেকে বছরে ৪২ লাখ মেট্রিক টন মাছ উৎপাদন হচ্ছে। দেশীয় প্রজাতির মাছ যাতে রক্ষা পায় সেজন্য সরকারি নির্দেশনা মোতাবেক প্রায়োগিক গবেষণা চলছে।
বিশিষ্ট পানি গবেষক (আরডিএ বগুড়ার সাবেক মহাপরিচালক) আব্দুল মতিন ইনকিলাবকে বলেন, উত্তরাঞ্চলের প্রকৃতি ও পরিবেশ অনুপাতে সেখানকার জলাভূমি ও নদ-নদী এবং বিল যাতে দখল ও ভরাট না হয় সেজন্য সরকারকে এখনই উদ্যোগী হতে হবে। অন্যথায় দেশীয় প্রজাতির মাছ একসময় কেবলই বইয়ের পাতায় আটকে যাবে।
তিনি বলেন, আবাদি কৃষি জমিতে ভূ-গর্ভস্থ পানির ব্যাবহার কমাতে হবে। শস্য উৎপাদন বিশেষ করে বর্ষা মৌসুমে আমন ধান চাষের সময় জমিতে রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যাবহার কমানোর উদ্যোগ নিতে হবে। আর তা যদি নিশ্চিত করা যায় তাহলেই দেশের প্রাকৃতিক খাল বিল ও নদ-নদীর পানিতে দেশীয় জাতের মাছ স্বাভাবিকভাবে প্রজননক্রিয়ার মাধ্যমে বংশ বিস্তারে সক্ষম হবে।
বিশিষ্ট ইতিহাস গবেষক আব্দুর রহিম বগরার মতে, সবার আগে উত্তরের নদ-নদীর উজানে প্রতিবেশী দেশ ভারতের পানি আগ্রাসন রুখতে হবে। এটা করতে পারলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলের যেমন লবনাক্ততা রোধ করা সম্ভব হবে তেমনি উত্তরাঞ্চলের নদ-নদীগুলো শুকনো মৌসুমেও পানিতে ভরপুর থাকবে। এর ফলে লাখ লাখ জেলে সম্প্রদায় উত্তরাঞ্চলের ছোটবড় নদ-নদীগুলো থেকে মৎস্য শিকার করে তাদের জীবিকা চালাতে পারবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।