Inqilab Logo

সোমবার ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ০৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৫ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেখতে ৫ বছরের মনে হলেও টুম্পার বয়স ২৫

প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মোঃ আনিস উর রহমান স্বপন, ধামরাই (ঢাকা) থেকে : মেয়েটির নাম টুম্পা। একটু দূর থেকে দেখলে মনে হবে ৪-৫ বছরের ছোট শিশু। উচ্চতা প্রায় আড়াই ফুটের মতো। এ সময় তার ওজন মাপা হলে মাত্র ১৪ কেজি হয়। দেখতে শিশু হলেও তার প্রকৃত বয়স ২৫ বছর। টুম্পার জ্বর ও ঠা-া লেগেছে বেশ কদিন ধরেই।
গর্ভধারিণী মা শাহেদা বেগম টুম্পাকে কোলে নিয়ে এসেছে ধামরাই উপজেলা সরকারি হাসপাতালে চিকিৎসার জন্য। হাসপাতালে আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার নন্দলাল সূত্রধরের কক্ষে ঢুকতেই চোখ পড়ল ওই মেয়েটির দিকে।
তখনই ডাক্তার সাহেব বললেন ওর বয়স কত হবে বলেন দেখি উপস্থিত সবাই বললেন ৪ থেকে ৫ বছর হতে পারে। তখন ডাক্তার বললেন ওর বয়স ২৫ বছর।
এ সময় কথা হয় টুম্পার গর্ভধারিণী মা শাহেদা বেগমের সাথে। বাড়ি ঢাকা জেলার ধামরাই পৌর শহরের কালিয়াগার মহল্লায় বাবার নাম হারেজ দেওয়ান।
টুম্পা সম্পর্কে বিভিন্ন তথ্য জানতে চাওয়া হলে মা শাহেদা বেগম কান্না জড়িত কন্ঠে এ প্রতিবেদককে বলেন, টুম্পার বাবা হারেজ উদ্দিন সংসার জীবনে তেমন কাজকর্ম না করলেও সংসারের ঘানী টানতে হয়েছে তাকেই। মুন্নু সিরামিক কারখানায় প্যাকিং সেকশনে কাজ করে অল্প টাকা দিয়েই চলতো সংসার। এরমধ্যে ২ ছেলে ও ৫ মেয়ের মা হয়েছে শাহেদা বেগম। ছেলে-মেয়েদের মধ্যে টুম্পা তৃতীয়। বড় ছেলে হিরু বিয়ে করে তার সংসার আলাদা করে নিয়েছে।
টুম্পার বড় ও ছোট বোনের বিয়েও হয়েছে। স্বামী সংসার নিয়ে ভালই আছে তারা। টুম্পাকে নিয়ে যত সমস্যায় পড়েছে মা শাহেদা বেগম। জন্মের পর থেকেই অন্যান্য ছেলে-মেয়েদের সাথে লালন-পালন করতে হয়েছে। ঢাকার একটি হাসপাতালে চিকিৎসা করলেও পুরোপুরি সুস্থ্য না হওয়ায় এখনও চলছে তার লালন-পালন। দীর্ঘ ২০বছর টুম্পাকে মুখে তুলে খাওয়ানো হয়েছে। এখন ও মুখে কিছু কথা বলতে পারলেও নিজে নিজে তেমন হাটতে পারে না। মাঝে মাঝে টুম্পা অসুস্থ্য হয়ে পড়ে। মা শাহেদা বেগম মুন্নু সিরামিক কারখানায় চাকরি করে শিশুটির মুখে একটু খাবার তুলে দেয়ার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে ।এরমধ্যে কারখানার কর্তৃপক্ষ গত একমাস আগে শাহেদা বেগমকে চাকরি থেকে ছাটাই করে দিয়েছে। বতর্মানে টুম্পাকে নিয়ে কি করবে সে ভেবে পাচ্ছে না। একদিকে সংসারের ঘানী টানা অন্যদিকে মেয়ে টুম্পার ভবিষ্যৎ নিয়ে চিন্তায় পড়েছে শাহেদা বেগম। চাকরি হারানো শাহেদা বেগম মেয়েকে নিয়ে কোথায় দাঁড়াবে এখন। সারাক্ষণই মেয়েকে চোখে চোখে রাখতে হয়। কেইবা দেখবে মেয়েকে তাই দেশের বিত্তবানদের সহযোগীতা কামনা করেছে মা শাহেদা বেগম।
উপজেলা সরকারী হাসপাতালের আবাসিক মেডিক্যাল অফিসার ডাক্তার নন্দলাল সূত্রধর বলেন, এ ধরনের রোগী এই প্রথম এখানে চিকিৎসা নিতে এসেছে। তিনি জানান তার জিনগত সমস্যা হতে পারে। যেজন্য তার বয়স অনুপাতে বেড়ে উঠেনি। চিকিৎসা হিসেবে তাকে এখান থেকে ঔষধ দেয়া হয়েছে। সেইসাথে তার যত ঔষধ লাগবে সবই ফ্রি দিবে বলে জানিয়েছেন। টুম্পার উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল অথবা বঙ্গবন্ধু মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে নেয়ার জন্য পরামর্শ দেন তিনি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: দেখতে ৫ বছরের মনে হলেও টুম্পার বয়স ২৫
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ