Inqilab Logo

শুক্রবার ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ০৫ আশ্বিন ১৪৩১, ১৬ রবিউল আউয়াল ১৪৪৬ হিজরী

অনুমতি মিলছে না ফ্ল্যাট হস্তান্তরের

রাজউকের আয় কমেছে

প্রকাশের সময় : ২ নভেম্বর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

বিশেষ সংবাদদাতা : রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষ-রাজউকের আয় কমেছে। আগে প্রতিদিন রাজউক ফান্ডে কয়েক কোটি টাকা রাজস্ব জমা হলেও সেখানে এখন জমা হচ্ছে মাত্র কয়েক লাখ টাকা। রাজস্ব কমে গেলেও কর্তৃপক্ষের পক্ষ থেকে রাজস্ব বাড়ানোর কোনো উদ্যোগ নেই। সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, অগ্রণী, জনতা ও সোনালী ব্যাংকের বিভিন্ন শাখায় প্রতিষ্ঠানটির পরিচালনাধীন ১৬৫টি শর্ট টার্ম ডিপোজিট (এসটিডি) অ্যাকাউন্ড রয়েছে।
এসব অ্যাকাউন্টের অবস্থাও ভালো নয়। অ্যাকাউন্টগুলোর গত ছয় মাসের হিসাব বিবরণী অত্যন্ত হতাশাজনক। এস্টেট শাখার সেল পারমিশন, পাওয়ার অব এটর্নি (আমমোক্তারনামা), ডকুমেন্টেশন ফি, উন্নয়ন ফিসহ বিভিন্ন ফি আদায় সংক্রান্ত অ্যাকাউন্টে দৈনিক অর্থ জমার পরিমাণ কমে গেছে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা ফ্ল্যাটের সেল পারমিশন (হস্তান্তর অনুমতি) সংক্রান্ত অ্যাকাউন্টের। জানা গেছে, বর্তমানে অকাপেন্সি সার্টিফিকেট ছাড়া কোনো ফ্ল্যাটের হস্তান্তর অনুমতি দেয়া হচ্ছে না। অলিখিতভাবে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জানিয়ে দেয়া হয়েছে। এ কারণে রাজউকের জমিতে নির্মিত ফ্ল্যাট বিক্রির অনুমতির বিষয়টি রীতিমতো ঝুলে গেছে। রাজউকের চেয়ারম্যান পদে এম বজলুল করিম চৌধুরী যোগদানের পর থেকে রাজস্ব আদায়ে রীতিমতো ধস নেমেছে।
এদিকে ফাইল অনুমোদনে নেতিবাচক মনোভাব, উপ-পরিচালক পদে শূন্যতা ও বিভিন্ন পর্যায়ের কর্মকর্তাদের অহেতুক খবরদারিসহ নানা কারণে রাজধানী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষে (রাজউক) স্থবিরতা বিরাজ করছে। নিচ থেকে একটি ফাইল যেন উঠতেই চায় না। অতিগুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তির তদবির রয়েছে এমন ফাইল ছাড়া ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা কোনো ফাইল ছাড়ছেন না। বিষয়গুলো সম্পর্কে গৃহায়ন ও গণপূর্ত মন্ত্রণালয় জেনেও কিছুই বলছে না। বরং রাজউকের বিষয়ে অভিযোগ করতে গেলে নিশ্চুপ থাকছে মন্ত্রণালয়। অনুসন্ধানে জানা গেছে, অকাপেন্সি সার্টিফিকেট দেয়া নিয়ে রীতিমতো বাণিজ্য শুরু হয়ে গেছে। একেকটি সার্টিফিকেট আনতে কাঁড়ি কাঁড়ি অর্থ খরচ করতে হচ্ছে। রাজউকের এস্টেট-১ ও এস্টেট-২ শাখায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ফ্ল্যাট বিক্রির অনুমতি খুব বেছে বেছে দেয়া হচ্ছে। এ কারণে বেশ কয়েকটি ডেভেলপার কোম্পানি রীতিমতো বেকায়দায় পড়েছে। কারণ ফ্ল্যাট বিক্রি করেও তারা রেজিস্ট্রেশন করে দিতে পারছেন না। এ নিয়ে কাস্টমারদের তোপের মুখে আছেন তারা।
অথরাইজড শাখা সূত্রে জানা গেছে, রাজধানীর শতকরা ৯৯ ভাগ ভবন অনুমোদিত নকশার বাইরে নির্মাণ করা হয়েছে। কয়েকটি এলাকায় এ অবস্থা আরো ভয়াবহ। ফ্ল্যাটের সেল পারমিশন না হওয়ায় রাজউক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। এদিকে রাজউকের চেয়ারম্যান বেশিরভাগ ফাইলে আপত্তি দিয়ে নিচে পাঠিয়ে দিচ্ছেন। এ কারণে প্লট বা ফ্ল্যাট মালিক দিনের পর দিন ঘুরছেন। নিচের কর্মকর্তাদের কাছে ফাইল নামলে ভোগান্তির যেন শেষ নেই। নানা ছুতোয় কর্মচারীরা দিনের পর দিন ঘুরাচ্ছেন। সবচেয়ে বেশি ভোগান্তি পোহাচ্ছেন পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্প ও ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পের প্লট গ্রহীতারা। জানা গেছে, পূর্বাচল নতুন শহর প্রকল্পে এ পর্যন্ত ২৪ হাজার প্লট বরাদ্দ দেয়া হয়েছে। এ কারণে পূর্বাচল সেলে গেলে জট লেগেই থাকে। সম্প্রতি সেলের উপ-পরিচালক মো: আব্দুল হামিদ মিয়াকে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক পদে বদলি করা হয়েছে। এখন অতিরিক্ত দায়িত্ব দেয়া হয়েছে এস্টেট-১ কে। এ কর্মকর্তা একই সঙ্গে ঝিলমিল আবাসিক প্রকল্পের উপ- পরিচালকের দায়িত্বে রয়েছেন। তাই তিনটি বড় শাখার দায়িত্ব একাই পালন করছেন তিনি। এ কারণে রাজউকের কয়েকটি শাখার কাজকর্মের স্থবিরতা দিন দিন বাড়ছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: অনুমতি মিলছে না ফ্ল্যাট হস্তান্তরের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ