Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ই-কমার্সে জমজমাট কেনা-বেচা

রূপগঞ্জের তাঁতিদের জামদানির বাজার অনলাইনে মাসে দুই কোটি টাকার শাড়ি বিক্রি

মো. খলিল সিকদার, রূপগঞ্জ (নারায়ণগঞ্জ) থেকে | প্রকাশের সময় : ৩১ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

করোনা মহামারির কারণে জামদানি শিল্প স্থবির হয়ে পড়েছিল। করোনাসহ বিভিন্ন প্রতিবন্ধকতার কারণে পিছিয়ে পড়েছিল জামদানির বাজার। তবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ই-কমার্সের মাধ্যমে করোনা মহামারির মন্দা কাটিয়ে ঘুরে দাঁড়িয়েছে নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জ উপজেলার বিসিক শিল্প নগরীর জামদানি। তাঁতিরা অনলাইনে মাসে দুই কোটি টাকার জামদানি শাড়ি বিক্রি করেছে বলে জানা গেছে।

সরেজমিনে জামদানি পল্লীতে গিয়ে তাঁতিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, রূপগঞ্জ উপজেলার জামদানি পল্লীতে প্রায় ৫ হাজার তাঁতি রয়েছে। করোনালকডাউনে বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে ৫ হাজার তাঁতি। এছাড়া সরকারি সুযোগ সুবিধার অভাবে পিছিয়ে যাচ্ছিল জামদানি শাড়ি। পিছিয়ে পড়া জামদানি আবারো ঘুরে দাঁড়াচ্ছে। লকডাউনকরোনা থেকে ঘুরে দাঁড়াতে তাঁতিরা ই-কমার্স ও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমকে জামদানি শাড়ি বিক্রির নতুন বাজার হিসেবে ব্যবহার করছে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ও ই-কমার্সে সাড়াও পাচ্ছেন তাঁতিরা। জামদানি শাড়ির আধুনিকায়ন ও তাঁতিদের জীবন যাত্রার মান উন্নয়নে জামদানি পল্লীতে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। উপজেলা জামদানি পল্লীর তাঁতিরা নিজেদের নিপুণ হাতের তৈরি জামদানি পাইকারদের কাছে বিক্রির পাশাপাশি বিক্রি করছেন সামাজিক মাধ্যম ফেসবুক ও ই-কমার্সে। এতে করে আগের চেয়েও তাদের বিক্রিও বেড়েছে অনেকাংশে। এছাড়া দামও পাচ্ছেন বেশ ভালো। অনলাইন থেকে তাঁতিদের কাছ থেকে প্রকৃত জামদানি শাড়ি কিনতে পেরে ক্রেতারাও বেশ লাভবান হচ্ছেন। এতে করে ক্রেতারা নকল জামদানির ভিড়ে আসল জামদানি কিনতে পারছেন।

তাঁতিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, করোনার কারণে গত বছর জামদানি বিক্রি তেমন ভালো হয়নি। করোনাকালীন সময় শাড়ি বিক্রি না হওয়ায় তাদের খুব কষ্টে দিন কাটাতে হয়েছে। মেলেনি সরকারিভাবে কোন প্রকার প্রনোদনা। এতে অনেক তাঁতিই পেশা পাল্টে অন্য পেশায় চলে গেছেন। কথায় যেখানে শেষ সেখানেই শুরু। এমন কথাটিই যেন বাস্তবে ঘটলো জামদানি পল্লীর তাঁতিদের ক্ষেত্রে। করোনার ধাক্কা পুষিয়ে উঠতে তাঁতিরা দিনরাত শাড়ির বুননে ব্যস্ত। দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে আসা পাইকারদের পাশাপাশি তারা তাদের তৈরিকৃত শাড়ি বিক্রি করছেন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক ও ই-কমার্সে। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের প্রোফাইল তৈরি ও অথবা পেইজ খুলে নিজেদের তৈরি শাড়ির ছবি আপলোড করে মূল্য লিখে দিচ্ছেন। যাদের পছন্দ হচ্ছে অগ্রীম কিছু টাকা দিয়ে শাড়ি হাতের পাওয়ার পর বাকি টাকা দিচ্ছেন। তাঁতিরা দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে শাড়ির অর্ডার পান। শাড়িগুলো বিভিন্ন কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে পৌঁছে যাচ্ছে। একেকটি শাড়ি ২ হাজার থেকে শুরু করে ১ লাখ টাকা পর্যন্ত বিক্রি হয়ে থাকে। জামদানি পল্লীর প্রায় অর্ধশত তাঁতি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমের মাধ্যমে নিজেদের তৈরি জামদারি শাড়ি বিক্রি করছে। এছাড়া তাঁতিদের কাছ থেকে জামদানি কিনে অনেক যুবক অনলাইনে বিক্রি করেও বেশ লাভবান হচ্ছে।

সোহাগ জামদানির মালিক সোহাগ জানান, তার বাবা গত ২০ বছর ধরে জামদানির সঙ্গে সম্পৃক্ত রয়েছে। জামদানি পল্লীতে তার বাবার দোকানও রয়েছে। তিনি সরকারি মুড়াপাড়া কলেজে লেখাপড়া করছেন। তিনি চিন্তা করলেন পাইকারির পাশাপাশি অনলাইনে জামদানি শাড়ি বিক্রির। যেই ভাবনা সেই কাজ। তিনি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে গত বছর সোহাগ জামদানি নামে এক পেইজ খুললেন। পেইজটিতে নিয়মিত জামদানির শাড়ির ছবি তুলে আপলোড করতে থাকলেন। কয়েক মাস যেতে না যেতেই দোকানের পাশাপাশি অনলাইনেও জামদানি শাড়ি বিক্রি হতে থাকলো অনেক। ঈদের আগেও তিনি কয়েক লাখ টাকার শাড়ি বিক্রি করতে পেরেছেন। তার মতো বেশিরভাগই তাঁতিই এখন অনলাইনে জামদানি শাড়ি বিক্রি করে বেশ লাভবান হচ্ছেন।
কথা হয় মম জামদানির মালিক আবুল কালাম আজাদের সঙ্গে। তিনি বলেন, জামদানি পল্লীতে আগের মতো ক্রেতা আসে না। এছাড়া পাইকাররাও জামদানির খুব বেশি দাম দেন না। এ কারণে আমরা সকলে অনলাইনে শাড়ি বিক্রি করছি। মম জামদানি নামে আমার একটি ফেসবুক পেইজ রয়েছে। আমি অনলাইনে মাসে অনেক টাকার শাড়ি বিক্রি করি। তবে সরকারিভাবে ডিজিটাল কোর্স করালে তাঁতিরা আরো বেশি উপকৃত হবেন।

কথা হয় অনলাইনে জামদানি কেনা কয়েকজন ক্রেতার সঙ্গে। তারা বলেন, তাঁতিরাই সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নিজেদের প্রোফাইল করে জামদানি শাড়ি বিক্রি করছেন। এতে আমরা ক্রেতারাও নকলের ভিড়ে আসল কিনতে পারছি এবং দামেও অনেকটা কম পাচ্ছি। তাঁতিরা জামদানি বিক্রি করায় আমরা ক্রেতারা প্রতারিত হচ্ছি না।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) শাহ্ নূসরাত জাহান বলেন, জামদানি আমাদের বাঙ্গালী জাতির সংস্কৃতি। বাংলাদেশকে ডিজিটাল করতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন। পাশাপাশি আমাদের স্থানীয় সংসদ সদস্য এবং পাট ও বস্ত্রমন্ত্রী গোলাম দস্তগীর গাজী (বীর প্রতীক) এ বিষয়ে তাঁতিদের পাশে দাঁড়াতে দিক-নির্দেশনা দিচ্ছেন। তাঁতিরা অনলাইনে জামদানি বিক্রি করছেন বিষয়টি খুব আনন্দের। পরবর্তী সময়ে কোন ডিজিটাল প্রশিক্ষণ কোর্স আসলে তাঁতিদের কোর্স করানো চেষ্টা করবো।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ই-কমার্সে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ
function like(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "clike_"+cid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_like.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function dislike(cid) { var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "cdislike_"+cid; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_comment_dislike.php?cid="+cid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rlike(rid) { //alert(rid); var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rlike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_like.php?rid="+rid; //alert(url); xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function rdislike(rid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "rdislike_"+rid; //alert(xmlhttp.responseText); document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com/api/insert_reply_dislike.php?rid="+rid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } function nclike(nid){ var xmlhttp; if (window.XMLHttpRequest) {// code for IE7+, Firefox, Chrome, Opera, Safari xmlhttp=new XMLHttpRequest(); } else {// code for IE6, IE5 xmlhttp=new ActiveXObject("Microsoft.XMLHTTP"); } xmlhttp.onreadystatechange=function() { if (xmlhttp.readyState==4 && xmlhttp.status==200) { var divname = "nlike"; document.getElementById(divname).innerHTML=xmlhttp.responseText; } } var url = "https://old.dailyinqilab.com//api/insert_news_comment_like.php?nid="+nid; xmlhttp.open("GET",url,true); xmlhttp.send(); } $("#ar_news_content img").each(function() { var imageCaption = $(this).attr("alt"); if (imageCaption != '') { var imgWidth = $(this).width(); var imgHeight = $(this).height(); var position = $(this).position(); var positionTop = (position.top + imgHeight - 26) /*$("" + imageCaption + "").css({ "position": "absolute", "top": positionTop + "px", "left": "0", "width": imgWidth + "px" }).insertAfter(this); */ $("" + imageCaption + "").css({ "margin-bottom": "10px" }).insertAfter(this); } }); -->