পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আওয়ামী লীগের ছায়ায় থেকে এমপি এবং মন্ত্রী হয়ে ক্ষমতার দ্বন্দ্বে এখন মুখোমুখি অবস্থান নিয়েছেন জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ এমপি ও জাসদের সভাপতি হাসানুল হক ইনু এমপি। তারা এখন একে অপরের বিরুদ্ধে দালালি, দুর্নীতি, জঙ্গিবাদের অভিযোগ তুলছেন।
জাতীয় সংসদে প্রেসিডেন্টের ভাষণের ওপর আলোচনায় অংশগ্রহণ করে কাজী ফিরোজ রশিদের দেয়া বক্তব্যের তীব্র প্রতিবাদ জানিয়েছে হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন জাসদ। গতকাল জাসদের এক বিবৃতিতে এই প্রতিবাদ করা হয়।
এতে বলা হয়, গত ২৭ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে প্রেসিডেন্টের ভাষণের ওপর ধন্যবাদ প্রস্তাবের ওপর আলোচনায় কাজী ফিরোজ রশিদ বলেছেন, “আমাদের হেফাজতে ইসলাম তাদের জঙ্গি বানাইছে ইনু সাহেব (হাসানুল হক ইনু)। আরে জঙ্গি কারে বলে? আন্দোলন তো মানুষেই করে, আন্দোলন সাধারণত ভায়োলেন্সে চলে যায়। তারা জঙ্গি না, জঙ্গি হচ্ছে সশস্ত্র বিপ্লব, যারা করে সরকারকে হটানোর জন্য। যেটা ইনু সাহেবরা করেছিলেন, জাসদ তো ’৭৩ সাল থেকেই ’৭৫ সাল পর্যন্ত এই দেশের হাজার হাজার যুবলীগ, আওয়ামী লীগ, ছাত্রলীগ কর্মীদের হত্যা করেছে। অনেক পুলিশ ফাঁড়ি তারা দখল করেছে। পুলিশ ফাঁড়ি লুট করেছে। থানা লুট করেছে, ট্রেজারি লুট করেছে। ঈদের জামাতে আমাদের আওয়ামী লীগের এমপিদের হত্যা করেছে দিনের বেলা, ঈদের জামাতে বসে। তারা যদি আরেকটা সংগঠনকে জঙ্গি বলে এটা মানায়! বঙ্গবন্ধুকে এইভাবে নির্মমভাবে হত্যা করার দুঃসাহস কেউ পারত। সমস্ত ক্ষেত্র তারা প্রস্তুত করেছিল। আজকে তারা বলে যে, আমরা কিছু জানি না। জাসদ যদি ক্ষেত্র প্রস্তুত না করত, সেদিন আমি যুবলীগের ঢাকা সিটির প্রধান ছিলাম। সেদিন যদি এ জাসদ ক্ষেত্র প্রস্তুত না করত, তাদের একটা পত্রিকা ছিল ‘গণকণ্ঠ’ সেই পত্রিকা পড়ে দেখেন, সেদিন কি-না বানাইছে আমাদের। চোর-ডাকাত ছাড়া সবকিছু বানাইছে গণকণ্ঠে লিখতে গিয়া। যারা স্বাধীনতার শত্রু ওই মানুষগুলো পড়ত, সমস্ত্র মানুষদের ক্ষিপ্ত করে ফেলেছে জাসদ। আজকে তারা গণতন্ত্রের কথা বলে। আজকে তারা বঙ্গবন্ধুর কথা বলে।”
গতকাল জাসদের এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে কাজী ফিরোজ রশিদের এই বক্তব্যকে মিথ্যাচার ও জাসদবিরোধী বিদ্বেষ পরিপূর্ণ হিসেবে অবিহিত করা হয়।
হাসানুল হক ইনুর নেতৃত্বাধীন জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, কাজী ফিরোজ রশীদ প্রায়শই জাসদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করেন এবং মিথ্যাচার ছড়ান। অবশ্য তার বক্তব্যে জাসদের বিরুদ্ধে তার এই বিদ্বেষের কারণ তিনি নিজেই প্রকাশ করেছেন। তিনি নিজে তার থলের বিড়াল বের করেছেন। জাসদের জামাত, হেফাজত, সাম্প্রদায়িকতা, মৌলবাদ, জঙ্গিবাদবিরোধী জাসদের বলিষ্ঠ অবস্থানই কাজী ফিরোজ রশীদের গাত্রদাহ, জাসদের প্রতি বিদ্বেষের মূল কারণ। তিনি বলেন, কাজী ফিরোজ রশীদ তার নিজের ভাষায় ‘আমাদের হেফাজতে ইসলাম’ বলে প্রমাণ করেছেন তিনি বারবার দল বদল করে, ওপরে ওপরে যেই দলই করেন না কেন, তিনি আসলে হেফাজত, জামাত, সাম্প্রদায়িক, মৌলবাদী, জঙ্গিবাদীদের পক্ষেরই লোক। তিনি তার এই আসল চেহারা প্রকাশ করে ফেলেছেন।
জাসদের দফতর সম্পাদক বলেন, যে কাজী ফিরোজ রশীদ বঙ্গবন্ধুর হত্যার পর খুনি মুশতাক, সামরিক শাসক জিয়া ও এরশাদের সাথে হাত মিলিয়ে আখের গোছানোয় ঝাঁপিয়ে পরেছিলেন সেই কাজী ফিরোজ রশীদের বঙ্গবন্ধুর জন্য কান্না-মায়াকান্না ও কপটতা ছাড়া আর কিছুই না। কাজী ফিরোজ রশীদের বঙ্গবন্ধুর প্রতি সামান্য শ্রদ্ধা থাকত তাহলে কাজী ফিরোজ রশীদ বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্যের বিরোধীতা করে বঙ্গবন্ধুর ভাস্কর্য বুড়িগঙ্গায় ভাসিয়ে দেয়ার প্রকাশ্য হুমকিদাতা হেফাজতের পক্ষে নির্লজ্জ দালালি করতেন না।
জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ১৯৭২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাসদ প্রকাশ্যেই ঘোষণা দিয়ে আওয়ামী লীগ ও বঙ্গবন্ধু সরকারের বিরুদ্ধে প্রকাশ্য রাজনৈতিক অবস্থানে ছিল। সেই সময়ে পুলিশ ফাঁড়ি, থানা লুট, ব্যাংক ডাকাতি, পাটের গুদামে আগুণ দেয়া, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের হত্যার সাথে জাসদের কোনো পর্যায়ের নেতাকর্মী যুক্ত থাকতেন, তাহলে নিশ্চয়ই তৎকালীন সরকার-প্রশাসন-পুলিশ জাসদের নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে সুনির্দিষ্ট মামলা দিয়ে আদালতে বিচারের সম্মুখীন করে শাস্তি নিশ্চিত করত। কিন্তু সেই সময়কালে উল্লেখিত অভিযোগে বাংলাদেশের কোনো থানায়ই জাসদের কোনো নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে কোনো মামলাও হয়নি।
জাসদের দফতর সম্পাদক সাজ্জাদ হোসেন বলেছেন, কাজী ফিরোজ রশীদের মতো লোকদের জাসদ চোর-ডাকাত বানায়নি। খোদ বঙ্গবন্ধুই কাজী ফিরোজ রশীদের মতো লোকদের ওপর ক্ষিপ্ত হয়ে তাদের ‘চাটার দল’, ‘চোরের খনি’ বলে আখ্যায়িত করেছিলেন।
কাজী ফিরোজ রশীদকে জাসদের বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করার আগে আয়নায় নিজের মুখ দেখার পরামর্শ দিয়ে সাজ্জাদ হোসেন বলেন, ১৯৭২ থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত ‘চোরের খনি’, ‘চাটার দল’ এর সদস্য এবং বঙ্গবন্ধু হত্যার পর খুনি মুশতাক ও সামরিক শাসক জিয়ার সাথে হাত মিলিয়ে কোন কাজীরা পুরাতন ঢাকা, ধানমন্ডি ঢাকার বিভিন্ন এলাকা এবং গোপালগঞ্জের কোটালিপাড়ায় হিন্দুদের সম্পত্তি দখল করেছে, কোন মন্টু কাজী ও তার ভাইরা এরশাদের সাথে হাত মিলিয়ে ১৯৮৫-৮৬ সালে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনাকে কোটালিপাড়া, টুঙ্গীপাড়ায় যেতে বাধা দেয়ার অপচেষ্টা চালিয়েছে তা দেশবাসী ভুলেনি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।