পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
আবু হেনা মুক্তি : সুন্দরবন উপকূলে কোস্টগার্ডের অভিযান সত্ত্বেও কোনভাবেই থামছে না অবৈধভাবে মাছের পোনা আহরণ। গত পরশু (শুক্রবারও) কোস্টগার্ড অভিযান চালিয়ে ৫শ’ কেজি পারশে পোনা ১০ হাজার মিটার সেনফ্রাই নেটসহ ট্রলার ও নৌকা আটক করে। এর আগেও দফায় দফায় বছরব্যাপী সুন্দরবনের বিভিন্ন স্থানের নদ-নদীতে চোরা শিকারীদের বাগদা রেণু আহরণ বন্ধে অভিযান চালায়। বন বিভাগও বিভিন্ন সময়ে অভিযান চালিয়ে বিষপ্রয়োগে বিভিন্ন মাছের পোনা নিধনকারী চক্রকে আটক করেছে। তবুও বিভিন্ন সিন্ডিকেট চক্রের কর্মকা- অপ্রতিরোধ্য।
সূত্রমতে, অপরিকল্পিতভাবে বাগদার রেণু আহরণ এবং অবাধে মাছের পোনা নিধনের ফলে দেশের দক্ষিণাঞ্চলে মৎস্য সম্পদ হুমকির সম্মুখীন হয়ে পড়েছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৫ হাজার ৭৭২ বর্গকিলোমিটার আয়তন বিশিষ্ট সুন্দরবনের ৩ হাজার ৯শ’ বর্গকিলোমিটার জঙ্গল এবং ১ হাজার ৭ বর্গকিলোমিটার জলাভূমি। এর মধ্যে ৮শ’ বর্গকিলোমিটার সমুদ্র উপকূল এবং বনের অভ্যন্তরে জলার আয়তন ৯৬০ বর্গকিলোমিটার। কয়েক বছর আগেও অভ্যন্তরীণ জলাভূমি অর্থাৎ নদী-নালা, খাল-বিল ও হ্রদের প্রতি বর্গকিলোমিটার মাছের উৎপাদন ছিল ৪ মেট্রিক টনের বেশি এবং সমুদ্র উপকূলীয় অঞ্চলে প্রতি বর্গকিলোমিটার মাছ উৎপাদন হতো ৪ মে: টন। কিন্তু বর্তমান সুন্দরবনে এলাকায় মাছের উৎপাদন আশংকাজনকভাবে হ্রাস পেয়েছে। যে কারণে উপকূলীয় অঞ্চলের শহর, বন্দর, ও হাট-বাজারে রূপচাঁদা, পারশেসহ বিভিন্ন প্রজাতির সামুদ্রিক মাছের দু®প্রাপ্যতা দেখা দিয়েছে। সূত্র আরো জানায়, চিংড়ি চাষের মৌসুমে প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সুন্দরবন ও তৎসংলগ্ন এলাকার নদী-নালা, খাল-বিল হ্রদ থেকে কারেন্ট জাল দিয়ে বাগদা পোনা সংগ্রহ করে। এছাড়া প্রায় সারাবছরই সুন্দরবনের অভ্যন্তরে এবং উপকূলীয় এলাকার হাজার হাজার জাল মাছ ধরার কাজে ব্যবহৃত হচ্ছে। বন বিভাগের বৈধ অনুমতি নিয়ে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে হতে বাগদা পোনা আহরাণ ও শিকার করা হয়। মৎস খাত থেকে বন বিভাগের মাধ্যমে প্রতিবছর বাংলাদেশ সরকারের প্রায় কোটি টাকা রাজস্ব আয় হয়। কিন্তু অপরিকল্পিত পদ্ধতিতে পোণা আহরণ ও মাছ শিকারের ফলে রাজস্ব আয়ের চেয়ে বহুগুণ ক্ষতি হচ্ছে মংস্য সম্পদের। বাগদা পোনা ধরার সময় নির্বিচারে ধ্বংস করা হচ্ছে অন্যান্য মাছের পোনা। এছাড়া ছোট ছোট মাছ ও ডিমওয়ালা মাছ শিকার করার কারণে সুন্দরবনসহ দক্ষিণাঞ্চলের রামপাল, মংলা, বড় কালিয়াসহ বিভিন্ন এলাকার নদী-নালা ক্রমান্বয়ে মৎস্য শূন্য হয়ে পড়েছে।
জেলে সূত্রে আরো জানা যায়, গভীর সমুদ্রে মাছ ও চিংড়ি যে সব পোনা ছাড়ে সে পোনাই খাদ্যের সন্ধানে সুন্দরবনের অভ্যন্তরে চলে আসে। সুন্দরবনের খাল, বিল, পুকুর, নদী-নালা প্রভিতৃ হচ্ছে মাছের নার্সারী গ্রাউন্ড। অদক্ষ পোনা আহরণকারীরা না বুঝে এ নার্সারী গ্রাউন্ডে চরম আঘাত করেছে। পোনা ধরার ক্ষেত্রে বিশেষ প্রশিক্ষণ না থাকায় সেই জালে আটকা পড়া সকল পোনা চরে ফেলে দেয় এবং চিংড়ির পোনা বেছে নিয়ে তা সংরক্ষণ করে থাকেন। এভাবে ১টি বাগদা পোনা আহরণ করতে গিয়ে তারা বিভিন্ন প্রজাতির অন্তত ৯০টি মাছের পোনা নিধন করছে।
সূত্রমতে, মৎস্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে দেশব্যাপী হাতেগোনা কিছুসংখ্যক প্রকল্পে সরকারের বা ব্যাংকের ঋণ প্রকল্প কিংম্বা বিশেষ সহায়তা দেয়া হলেও তৃণমূল পর্যায়ে বিশেষ কোন বাস্তবমুখী প্রকল্প গত একযুগেও গ্রহণ করা হয়নি। যে সকল প্রান্তিক জেলেরা জীবিকার তাগিদে দিন-রাত পরিশ্রম করে পানিতে ভিজে নেট জাল দিয়ে রেণু পোনা সংগ্রহ করছে তাদের মূর্খতার কারণে কোটি কোটি মাছের পোনা অঙ্কুরেই বিনষ্ট হচ্ছে। এ সকল প্রান্তিক জেলে বা জীবিকার তাগিদে এ পেশা বেছে নেয়া মাত্র কয়েক লাখ লোককে বিগত কোন সরকারই অন্য কোন পেশায় স্থানান্তরিত করতে পারেনি। দেশীয় মাছের উৎপাদনের জন্য মাঠ পর্যায়ের চাষীদের স্বল্প সুদে ঋণ প্রদান বা সরকারি জলাশয়গুলো সঠিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করতে পারেনি। স্থানীয় প্রশাসনও কোন প্রকল্প হাতে নেয়নি। এনজিওগুলো বিভিন্ন কর্মকা- পরিচালিত করলেও এ সেক্টরে তাদের পদাচারণা খুবই দুর্বল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।