পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইনকিলাব ডেস্ক : কক্সবাজারে দেশের প্রথমবারের মতো শুরু হয়েছে রোহিঙ্গা শুমারি। গত শুক্রবার সকালে কক্সবাজার পৌর শহরের পাহাড়তলী এলাকা থেকে এই শুমারি কার্যক্রম শুরু হয়। চট্টগ্রাম বিভাগীয় পরিসংখ্যান অফিসের তত্ত্বাবধানে কক্সবাজার, বান্দরবান, রাঙ্গামাটি, খাগড়াছড়ি, পটুয়াখালী ও চট্টগ্রাম জেলায় একযোগে এই কার্যক্রম চলবে। এইসব এলাকায় প্রাথমিক গণনা শেষে বাংলাদেশে অবস্থানরত মিয়ানমার নাগরিকদের সঠিক সংখ্যা এবং তালিকা প্রকাশ করা হবে। ১৭ ফেব্রুয়ারি এই গননা কার্যক্রম শেষ হওয়ার কথা রয়েছে। পরে শুমারির মাধ্যমে বের হয়ে আসা অনিবন্ধিত রোহিঙ্গাদের ডাটাবেইজ তৈরির কাজ শুরু হবে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়।
রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা বাংলাদেশের জন্য এখন বিষফোঁড়া
শুরু থেকেই রোহিঙ্গা শরণার্থীদের ব্যাপারে বাংলাদেশ সরকার ও এদেশের জনগণ সহানুভূতিশীল ছিল। কিন্তু বর্তমানে সরকারী হিসেব মতেই ৫ লক্ষাধিক রোহিঙ্গা শরণার্থী বাংলাদেশে বসবাস করছে। এ হিসাবের বাইরেও হাজার হাজার রোহিঙ্গা বাংলাদেশী মুসলমান পরিচয়ে বসবাস করে আসছে। তাদের চেহারার সাথে যেহেতু বার্মার মুসলমানদের চেহারার অনেকটাই মিল রয়েছে সে হিসাবে বাংলাদেশী পরিচয়ে থাকতে তাদের কোনো সমস্যা হচ্ছে না। আর এদের প্রশ্রয় দিয়ে অঙ্গুল ফুলে কলাগাছ হচ্ছে এক শ্রেণীর গডফাদার। এর ফলে রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা বালাদেশের বিষফোঁড়া হয়ে দেখো দিয়েছে। মায়ানমার সরকার শরণার্থীদের ফিরিয়ে নেয়ার ব্যাপারে বাংলাদেশের সাথে বার বার অঙ্গিকার করা সত্বেও সে দেশের সরকার সে অঙ্গিকার রক্ষা করতেছে না।
উইকিডিয়ার এ সংক্রান্ত তথ্য থেকে জানা যায় রোহিঙ্গা আদিবাসী জনগোষ্ঠী পশ্চিম মায়ানমারের আরাকান রাজ্যের নৃতাত্ত্বিক জনগোষ্ঠী। এরা ইসলাম ধর্মে দীক্ষিত। মায়ানমারের আকিয়াব, রেথেডাং, বুথিডাং মংডু, কিয়ক্টাও, মাম্ব্রা, পাত্তরকিল্লা এলাকায় এদের বাস। বর্তমান ২০১২ সাল পর্যন্ত সেখানে, প্রায় ৮,০০,০০০ রোহিঙ্গা মায়ানমারে বসবাস করছিল। যার বর্তমান সংখ্যা তার চেয়ে দ্বিগুণ মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। সরকারী হিসাব মতে ৫ লক্ষের অধিক রোহিঙ্গা বাংলাদেশে বর্তমানে বসবাস করছে। এ হিসাবের বাইরেও অনেক রোহিঙ্গা বিয়ে-শাদীর মাধ্যমে বাংলাদেশীদের সাথে মিশে আছে। বিভিন্ন সময় বার্মা সরকার ও সেদেশের রাখাইন সম্প্রদায়ের নির্যাতনের কারণে দেশ ত্যাগ করতে বাধ্য হয় মুসলিম রোহিঙ্গারা।
জাতিসংঘের তথ্যমতে, রোহিঙ্গারা বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী। বর্তমান মিয়ানমারের রোহিং (আরাকানের পুরনো নাম) এলাকায় এ জনগোষ্ঠীর বসবাস। ইতিহাস ঐতিহাসিকদের মতে রাখাইন প্রদেশের উত্তর অংশে বাঙালি, পার্সিয়ান, তুর্কি, মোগল, আরবীয় ও পাঠানরা বঙ্গোপসাগরের উপকূল বরাবর বসতি স্থাপন করেছে। তাদের কথ্য ভাষায় চট্টগ্রামের স্থানীয় উচ্চারণের প্রভাব রয়েছে। উর্দু, হিন্দি, আরবি শব্দও রয়েছে। রাখাইনে দুটি সম্প্রদায়ের বসবাস ‘মগ’ ও ‘রোহিঙ্গা’। মগরা বৌদ্ধ ধর্মাবলম্বী। মগের মুল্লুক কথাটি বাংলাদেশে পরিচিত। দস্যুবৃত্তির কারণেই এমন নাম হয়েছে ‘মগ’দের। ইতিহাস থেকে জানা যায় যে, ১৪৩০ থেকে ১৭৮৪ সাল পর্যন্ত ২২ হাজার বর্গমাইল আয়তনের রোহিঙ্গা স্বাধীন রাজ্য ছিল। মিয়ানমারের রাজা বোদাওফায়া এ রাজ্য দখল করার পর বৌদ্ধ আধিপত্য শুরু হয়।
রোহিঙ্গা শরণার্থী সমস্যা সেমাধানে আন্তর্জাতিক মহলও বিশেষ কোন ভূমিকা পালন করছে না। বরং আমেরিকাসহ বিভিন্ন দাদা দেশের পক্ষ পক্ষ থেকে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিতে বাংলাদশ সরকারের ওপর ক্রমাগত চাপ অব্যাহত রেখেছে। সম্প্রতি মার্কিন রাষ্ট্রপতি বারাক ওবামার মিয়ানমার সফরের আগে সে দেশ থেকে বাংলাদেশে শরণার্থী আসা রোহিঙ্গা মুসলমানদের সামগ্রিক পরিস্থিতি জানতেই প্রতিনিধি দলটি কক্সবাজার সফর করেছেন। প্রতিনিধি দলটির প্রধান মার্কিন সরকারের অভিবাসন, মানবাধিকার ও শরণার্থী বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী (আন্ডার সেক্রেটারি) মারিয়া ওটেরো জানান, মিয়ানমার এখন পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। এ পরিবর্তনে শুধু রোহিঙ্গা নয়, আরও বেশকিছু সমস্যার মুখোমুখি হচ্ছে তারা। ডিপিএ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।