পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টালিন সরকার : জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দল (জাসদ)। আওয়ামী লীগের পেট থেকে জন্ম নেয়া ত্রিধা বিভক্ত দলটির গতকাল পালিত হলো ৪৪তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। ৪৪ বছর একটি রাজনৈতিক দলের জন্য মোটেও কম সময় নয়। দলটি রাজনীতি শুধুই কি ভ্রান্তিবিলাস! নাকি বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র সিঁকেয় তুলে ‘পাওয়ার গেইমে’ উচ্ছিষ্টভোগী, ব্যাক্তি-গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে ভাঙাগড়া, ডিগবাজির আওয়ামী লীগের নাচের পুতুল? আওয়ামী লীগের বিরুদ্ধে সশস্ত্র বিপ্লবের ঘোষণা দিয়ে সত্তর দশকে জন্ম নেয়া বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের দলটি কতদূর এগিয়েছে? নাকি ঘরে ফেরা ছেলের মতো আওয়ামী লীগের অঙ্গ-সহযোগী সংগঠন ছাত্রলীগ-যুবলীগ-মহিলালীগ-কৃষকলীগের ভূমিকা পালন করছে?
স্বাধীনতা পরবর্তী সময়ে ছাত্রলীগের বিরোধকে কেন্দ্র করেই জাসদের জন্ম। এটাকে রাজনীতিতে পারিবারিকীকরণের প্রতিবাদও বলা চলে। স্বাধীনতা পরবর্তীতে ছাত্রলীগের অভ্যন্তরে দু’টি ধারা প্রবাহমান। ব্যাক্তিদ্বন্দ্বে ১৯৭২ সালের ২৩ জুলাই একই দিন ঢাকায় রেসকোর্স কোর্স (সোহরাওয়ার্দী উদ্যান) ও পল্টন ময়দানে দু’টি সম্মেলনের আয়োজন করে। সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সম্মেলনে নেপথ্যে ছিলেন শেখ ফজলুল হক মনি, আবদুর রাজ্জাক ও তোফায়েল আহমেদের সমর্থিত নূরে আলম সিদ্দিকী ও আবদুল কুদ্দুস মাখন। অন্যদিকে পল্টনের সম্মেলনের নেপথ্যে সিরাজুল আলম খানের সমর্থনপুষ্ট আ স ম আবদুর রব, শাজাহান সিরাজ, আবদুল কুদ্দুস মাখন। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে দুই সম্মেলনে প্রধান অতিথি করা হয়। দু’পক্ষ্যের প্রত্যাশা ছিল বঙ্গবন্ধু তাদের সম্মেলনে আসবেন। কিন্তু প্রধান অতিথি পল্টনের সম্মেলনে যাননি। তিনি যোগ দেন ভাগিনা সমর্থিত সোহরাওয়ার্দী উদ্যানের সম্মেলনে। ওই সম্মেলনে ছাত্রলীগ কর্মীরা শ্লোগান দেন ‘এক নেতা এক দেশ বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ, ত্যাগ কর সব বাদ কায়েম কর মুজিববাদ।’ এক নেতা বক্ততায় বলেন, আমরা আইনের শাসন চাই না; চাই বঙ্গবন্ধুর শাসন’। সেখানে মনিরুল হক চৌধুরীকে সভাপতি ও শফিউল আলম প্রধানকে সাধারণ সম্পাদক করে ছাত্রলীগের নতুন কমিটি গঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু না আসায় পল্টনের সম্মেলনের আয়োজকরা ক্ষুব্ধ হন। তারা শ্লোগান তোলেন ‘সামাজিক বিপ্লবের পথ ধরো, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র কায়েম করো।’ ক্ষোভে দুঃখে পল্টন ময়দানে বক্তারা বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে চ্যালেঞ্জ ছুঁড়ে দেন। শরীফ নুরুল আম্বিয়াকে সভাপতি ও আফম মাহবুবুল হককে সাধারণ সম্পাদক করে কমিটি গঠন করেন। ওই বছরের ৩১ অক্টোবর আনুষ্ঠানিকভাবে যাত্রা শুরু করে জাসদ। দলে এক ঝাক মেধাবী ছাত্র যোগদেন। ৬০ এর দশকে কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের মেধাবী ছাত্রদের মধ্যে ছাত্র ইউনিয়নে যোগদানের হিড়িক পড়ে যায়। স্বাধীনতার পর সরকারের মন্ত্রীদের দুর্নীতি-দূশাসনের প্রতিবাদে কলেজ-বিশ্ববিধ্যারয়ের মেধাবী ছাত্রদের মধ্যে জাসদে যোগদানের হিড়িক পড়ে যায়। তুখোড়-মেধাবী ছাত্র মানেই জাসদ ছাত্রলীগ।
হঠাৎ করে জন্ম নেয়া জাসদের দর্শন ছিল বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র। সামাজিক বিপ্লব, শোষণহীন সমাজ ও মার্কসবাদ-লেনিনবাদের ভিত্তিতে একটি সুন্দর সমাজ গঠন। কিন্তু যে দর্শন নিয়ে দলটির জন্ম বাস্তবে তার লেশমাত্র আদর্শ কাজে-কর্মে দেখা যায়নি। প্রথম থেকেই দলটির নেপথ্যে ছিলেন সিরাজুল আলম খান। কাজী আরেফ ও আবদুর রাজ্জাককে নিয়ে তিনিই মূলত স্বাধীনতা যুদ্ধের প্রেক্ষাপটের সূচনা করেন ষাটের দশকের প্রথমার্ধে। তাকে সবাই দাদা ডাকেন। ভারতীয় সেনাবাহিনী মুক্তিযুদ্ধের পর শত শত ট্রাকে করে বাংলাদেশের সম্পদ ভারতের নিয়ে যাওয়ার প্রতিবাদ করে চাকরি হারানো মেজর জলিল তখন দেশপ্রেমী প্রতিবাদী হিসেবে আকাশছোঁয়া জনপ্রিয়। সর্বত্রই তার নাম। সে ইমেজ কাজে লাগাতে মেজর (অব.) এম এ জলিলকে জাসদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি করা হয়। সাধারণ সম্পাদক হন বাংলাদেশের প্রথম পতাকা উত্তোলক আ স ম আবদুর রব।
জন্মের পর থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত জাসদের সাংগঠনিক ভূমিকা ছিল বিপ্লবী। শ্রমিক শ্রেণির মধ্যে সাংগঠনিক প্রভাব বিস্তারের পাশাপাশি দলটি ক্ষমতাসীনদের সঙ্গে সংঘাতমূলক ভূমিকায় বেশি সক্রিয় হয়। জুলুম-নির্যাতন ও দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চারের কারণে প্রথম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মাত্র ৩টি আসন পেলেও ব্যাপক ভোট পায়। দলের নেপথ্যের রহস্যপুরুষ সিরাজুল আলম খান (দাদা) বিশ্ববিপ্লবী কমিউনিস্ট নেতা আর্নেস্তো চে’গুয়েভারা হওয়ার স্বপ্ন দেখতে শুরু করেন। ফলে জনগণের পক্ষ্যে শক্তি হয়েও বিভ্রান্তির পথে চলে যায় দল। বাকশাল গঠনের পর দলটি আ-ারগ্রাউন্ডে চলে গিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিরোধ গড়ে তোলে। দলটির নেতাকর্মীদের ওপর জুলুম-নির্যাতনও চালালো হয়। দলটির গণবাহিনী গঠন, ১৯৭৪ সালের ১৭ মার্চ তৎকালীন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর বাড়ি ঘেরাও, ’৭৫ সালের ২৬ নভেম্বর ভারতীয় দূতাবাসে কমা-ো হামলার মতো ভ্রান্ত কৌশলের জের ধরে ৩০ হাজার কর্মীকে প্রাণ হারাতে হয়। গ্রেফতার হন সিনিয়র নেতারা। গণবাহিনী গঠনের যুক্তি দিয়ে বলা হয় রাষ্ট্রের পুলিশ-বিডিআর-সেনাবাহিনী থাকার পরও ক্ষমতাসীনরা রক্ষীবাহিনী গঠন করে বলপ্রয়োগ করে ক্ষমতায় টিকে থাকতে চায়; কাজেই বলপ্রয়োগ করেই তাদের উচ্ছেদ করতে হবে। ১৯৭৫ সালের ৭ নভেম্বর সিপাহী বিপ্লবে জাসদের ভূমিকা দলটির জন্মকথায় অপ্রাসাঙ্গিক নয়।
বাকশাল গঠনের মাধ্যমে রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ হওয়ায় সবকিছু ছিল ‘নীরব’। ১৯৭৬ সালের ২ আগস্ট সরকার ঘোষিত পিপিআরের অধীনে অন্যান্য রাজনৈতিক দলগুলোর মতো জাসদ রাজনৈতিক অনুমোদন লাভ করে। অতপর বন্ধ করে অ্যাকশনধর্মী তৎপরতা। ওই বছর দলীয় সিদ্ধান্তে গণবাহিনী বাতিল হয়। গণবাহিনী বাতিলে বলা হয় যেহেতু রক্ষীবাহিনী নেই কাজেই গণবাহিনীর প্রয়োজন নেই। জন্মের পর থেকেই দলটিতে কলহ-বিবাদ লেগেই আছে। রহস্যপুরুষ সিরাজুল আলম খান নেপথ্যে থেকে দলটির ঐক্য ধরে রাখেন। ১৯৭৯ সালে সংসদ নির্বাচন ইস্যুতে কলহ-বিবাদ তীব্র হয়ে উঠে। আ স ম আবদুর রব’সহ কয়েকজন সিনিয়র নেতাকে কারাগারে রেখে একটি অংশ ১৯৭৯ সালে দ্বিতীয় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নেয়। নির্বাচনে ৯ আসন পেয়ে সন্তোষজনক ফলাফল করে। ওই বছরের শেষ দিকে দলে অভ্যন্তরীণ বিরোধ চরমে ওঠে। ১৯৮০ সালে সিরাজুল আলম খানের ইঙ্গিতে জিয়াউর রহমানের ১৮দফার প্রতি পূর্ণ আস্থা ও সমর্থন ইস্যুতে দলে বিরোধ বাধে। সেপ্টেম্বর মাসে মাঠের যুদ্ধ বাদ দিয়ে বিবৃতি যুদ্ধে লিপ্ত হন নেতারা। ফলে ভাঙনের কবলে পড়ে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের শ্লোগানে জন্ম নেয়া দলটি। ’৮০ সালের ৭ নভেম্বর আ ফ ম মাহবুবুল হক, খালিকুজ্জামান ভূঁইয়া, মাহমুদুর রহমান মান্না, মাঈন উদ্দিন খান বাদল, মির্জা সুলতান রাজা, আখতারুজ্জামানরা গঠন করেন বাংলাদেশের সমাজতান্ত্রিক দল (বাসদ)। এই ভাঙনে কেঁপে ওঠে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের জাসদের ভিত। এরপর জাসদ এবং বাসদ যতবার ভেঙেছে সবগুলোই ছিল ব্যাক্তি ও গোষ্ঠী দ্বন্দ্ব এবং পাওয়া না পাওয়ার দ্বন্দ্বে। জাসদ ভেঙে বাসদ গঠনের পর সেখানেও দেখা দেয় নেতৃত্বের বিরোধ। ’৮৩ সালের ৫ নভেম্বর দলের এক বৈঠকে খালেকুজ্জামান ভূইয়াকে দলের আহ্বায়কের পদ থেকে অব্যাহতি দিয়ে আ ফ ম মাহবুবুল হক হন নতুন আহ্বায়ক। খালেকুজ্জামান ভূইয়া পৃথক বাসদ গড়েন। খালেকুজ্জামানের বাসদ সিপিবির সঙ্গে মিলে রাজনীতি করছেন। অপর অংশের নেতা আ ফ ম মাহবুবুল হক বর্তমানে কানাডা প্রবাসী। ওই অংশের অপর নেতা মঈন উদ্দিন খান বাদল জাসদে ফিরে গিয়ে বর্তমানে জাসদ আম্বিয়া-প্রধান গ্রুপের নির্বাহী সভাপতি এবং জাতীয় সংসদের এমপি।
১৯৮০ সালে জাসদের ঘরে যে ভাঙনের আগুন লাগে তা আর নেভেনি। বিভক্তির পর দলে কোণঠাসা আ স ম অবদুর রব, মেজর (অব.) এম এ জলিল, শাজাহান সিরাজরা। সিরাজুল আলম খানও গুরুত্বহীন হয়ে পড়েন। প্রভাব বাড়তে থাকে কাজী আরেফ আহমেদ, হাসানুল হক ইনু, শরিফ নুরুল আম্বিয়া ও মার্শাল মণিদের। মেজর (অব.) জলিল জাসদের রাজনীতি ছেড়ে গঠন করেন জাতীয় মুক্তি আন্দোলন। ঘোষণা দেন ‘জাসদের রাজনীতি আমার জীবনের ছিল সবচেয়ে বড় ভুল’। আ স ম আবদুর রব, শাজাহান সিরাজ, আবদুল কুদ্দুস মাখনের প্রভাব কমলে রাজনীতিতে সক্রিয় থাকেন। সিরাজুল আলম খান দীর্ঘদিন আমেরিকায় প্রবাস জীবন কাটিয়ে আ স ম আবদুর রবের পিছনে দাঁড়ান। এক পর্যায়ে নেতৃত্ব নিয়ে আ স ম রবের সঙ্গে হাসানুল হক ইনুর বিরোধ বাধে। এরশাদবিরোধী আন্দোলন তুঙ্গে। শেখ হাসিনার নের্তৃত্বে ১৫ দল ও বেগম জিয়ার নের্তৃত্বে ৭ দলীয় জোট ছিল। ’৮৬ সালে দুই শীর্ষ নেত্রী ঘোষণা দেন ‘এরশাদের অধীনে নির্বাচনে যারা যাবে তারা জাতীয় বেঈমান’। বিএনপি নির্বাচনে না গেলেও হঠাৎ আওয়ামী লীগ নির্বাচনে অংশগ্রহণের ঘোষণা দেয়। জোট নেত্রীর এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে হাসানুল হক ইনু, কাজী আরেফ আহমেদ ‘নির্বাচনে গেল যারা জাতীয় বেইমান তারা’ শ্লোগান দিয়ে ১৫ দলীয় জোট থেকে বেরিয়ে আসেন। শাজাহান সিরাজ, মির্জা সুলতান রাজা যান নির্বাচনে। ভেঙে যায় জাসদ। এই ভাঙনে নেতাকর্মীদের বড় অংশ থাকে হাসানুল হক ইনু, কাজী আরেফ, শরীফ নুরুল আম্বিয়া, মার্শাল মণিদের গ্রুপে। তাদের হয়ে শিরীন আখতার, ডা. মুশতাক হোসেন, নাজমুল হক প্রধানসহ ছাত্রলীগ নেতারা এরশাদবিরোধী আন্দোলনে ভূমিকা রাখেন। পরে ডাকসু নির্বাচনে আওয়ামী লীগের সঙ্গে ঐকমত্যে সুলতান মোহাম্মদ মনসুরের সঙ্গে ডা. মুশতাক জিএস নির্বাচিত হন। এ সময় আ স ম আবদুর রব আলাদা অবস্থান গ্রহণ করেন। তার প্রতি সমর্থন জানান সিরাজুল আলম খান। বিএনপি-আওয়ামী লীগে বর্জনের মুখে ’৮৮ সালের চতুর্থ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিয়ে সংসদে বিরোধী দলের নেতা হন আ স ম আবদুর রব। এর আগে দলটি ভেঙে জাসদ (রব), জাসদ (সিরাজ), জাসদ (ইনু) হয়। এদিকে শাজাহান সিরাজের জাসদ ’৮৮ সালের নির্বাচনে অংশ নেওয়ার প্রশ্নে আরেক দফা ভাঙনের কবলে পড়ে। শাজাহান সিরাজের নেতৃত্বাধীন অংশ নির্বাচনে অংশ নেয়ায় মীর্জা সুলতান রাজা আলাদা জাসদ গঠন করেন। তার নেতৃত্বাধীন গ্রুপও মহিউদ্দিনের নেতৃত্বে এরপর আরেকবার ভাঙে দেশে বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্র প্রতিষ্ঠার স্বপ্নে গড়া দল। উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ’৯০ দশকের প্রথমার্ধে শাহজাহান সিরাজ স্ত্রী রাবেয়া সিরাজকে নিয়ে ড. কামাল হোসেনের গণফোরামে যোগদান করেন। দুই বছরের মাথায় গণফোরাম ত্যাগ করে বিএনপিতে যোগ দিয়ে মন্ত্রী হন। আরো উল্লেখ করা প্রয়োজন যে ’৯৬ সালের নির্বাচনের পর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় এলে আ স ম আবদুর রব মন্ত্রী হন। রব মন্ত্রী হওয়ার পর ’৯৭ সালে জাসদ রব ও জাসদ ইনু সম্মেলনের মাধ্যমে একত্রিত হয়। মাহবুবের বাসদ ছেড়ে সেখানে আসেন মঈনউদ্দিন খান বাদল। আসম রবকে সভাপতি ও হাসানুল হক ইনুকে সাধারণ সম্পাদক করা হয়। ক্ষমতার ভাগ ও উচ্ছিষ্টের লোভে ভাঙা হাড়ি জোড়া লাগানো হলেও সে হাড়ি আবার ভেঙে পড়ে ২০০২ সালে। চলতি বছরের জাসদ ইনুর মধ্যে বিরোধ বাধে। দলের সাধারণ সম্পাদক শরীফ নুরুল আম্বিয়া একটি প্রবন্ধ লিখে সরকার থেকে জাসদের বের হয়ে আসা উচিত এবং দলের কিছু নীতি পরিবর্তন করা প্রয়োজন এমন মন্তব্য করেন। এ মন্তব্য নিয়ে মে মাসের জাতীয় কাউন্সিলে বিরোধ বাধে। হাসানুল হক ইনুর সঙ্গে বিরোধে জড়ান শরীফ নুরুর আম্বিয়া, মঈন উদ্দিন খান বাদল ও নাজমুল হক প্রধান। অতপর আবার দ্বিখ-িত হয়ে দলের একাংশের নের্তৃত্বে বসেন ইনু-শিরিন অন্য অংশে আম্বিয়া-প্রধান। আশির দশকের শেষ দিকে মাহমুদুর রহমান মান্না ও মির্জা সুলতান রাজা মিলে জাতীয় মুক্তি পার্টি নামে দল গঠন করেছিলেন। বর্তমান মাহমুুদুর রহমান মান্না নাগরিক ঐক্যের নেতা।
বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের সেøাগানে জাসদ গঠন করা হলেও দলটির প্রকৃত উদ্দেশ জনগণের কাছে ৪৪ বছরেও পরিস্কার হয়নি। ’৮০ এ দশকে মানুষের মুক্তির দাবিতে মিছিল করতে ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীর দোকান থেকে জোর করে জ্বালানী নিয়ে মশাল মিছিল করার দৃশ্য মানুষ দেখেছে। আবার জন্মলগ্নে দেশের মেধাবী ছাত্র তথা উজ্বল সম্ভাবনাময় ছাত্ররা দলটিতে যোগদান করে। ধূমকেতুর মতো সেøাগান আর তারুণ্যের তেজি নেতৃত্বের টানে দলে দলে ছুটে এসেছিল দেশের অগণিত তরুণ। বর্তমানে প্রশাসনে কিছু কিছু জাসদ নেতা উচ্চপদে চাকরি করলেও বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের জ্বরে অকালে ঝড়ে গেছে ওইসব প্রাণ। নেতাদের ভ্রান্তিবিলাস, লক্ষ্যহীনতা, হঠকারিতায় ’৭০ দশকে দেশের একটি সম্ভাবনাময় প্রজন্ম ধ্বংস হয়েছে। সামাজিক বিপ্লব, বৈজ্ঞানিক সমাজতন্ত্রের যে সেøাগান নিয়ে দলটির আবির্ভাব ৪৪ বছরেও তা বাস্তবায়নের প্রচেষ্টা দেখা যায়নি। বরং বিভিন্ন সরকারের সময় দলটির নেতারা মন্ত্রী হন; ক্ষমতার উচ্ছিষ্ট ভোগের প্রতিযোগিতায় নামায় বার বার ভাঙনের কবলে পড়েছে। গানপ্রেমীদের হৃদয়ছোঁয়া রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর ‘তুমি কোন কাননের ফুল/ কোন গগণের তারা; তোমায় কোথায় দেখেছি; যেন কোন স্বপনের পারা!!’ রহস্যপুরুষ সিরাজুল আলম খানের গড়া জাসদ দেশের রাজনীতির কোন কাননের ফুল ৪৪ বছরেও দেশের মানুষ বুঝতে পরলো না।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।