পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ভাষাসৈনিক অলি আহাদের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী পালন
স্টফ রিপোর্টার : বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, গণতন্ত্র লুট হয়েছে, ন্যায়বিচার তিরোহিত হয়েছে। এখন নষ্ট সময় চলছে। প্রয়োজন হলে জীবনের শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনব ইনশাআল্লাহ। দেশে গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের আন্দোলনে তিনি তরুণ সমাজকে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান। গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় এক আলোচনা সভায় তিনি এই মন্তব্য করেন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, চতুর্দিকে ভয়-ভীতি- ত্রাস। এই সরকার দেশের গণতান্ত্রিক যে সম্ভাবনা তাকে বিনষ্ট করে ফেলেছে। মানুষের অধিকারগুলো কেড়ে নিয়েছে। তারা দেশকে এক গভীর গহ্বরের দিকে ঠেলে দিয়েছে। আমাদের অধিকার আদায়ের প্রশ্নে কোনো অবস্থাতেই কমপ্রোমাইজ করব না।
সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটি কার্যালয়ের মিলনায়তনে গণসংস্কৃতি দলের উদ্যোগে ভাষাসৈনিক অলি আহাদের ৪র্থ মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে এ আলোচনা সভা হয়। ২০০২ সালে অলি আহাদ মারা যান, যিনি ২০ দলীয় জোটের শরিক ডেমোক্র্যাটিক লীগেরও প্রধান ছিলেন।
বিচারবহির্ভূত হত্যাকা-ের প্রসঙ্গ তুলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা যখন দেখি, কোনো জবাবদিহিতা ছাড়াই একজন মানুষকে হত্যা করা হয়। যে কারণেই হোকÑ হয়তোবা সে ক্রিমিনাল হতে পারে, হয়তো সে কোনো জঙ্গি হতে পারে, হয়তো খুনি আসামি হতে পারে। কিন্তু প্রত্যেক মানুষের অধিকার রয়েছে, তার সুষ্ঠু ও ন্যায়বিচারের।
গণমাধ্যমের ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, যে সংবাদমাধ্যমকে বিবেক বলে জানি, তারাও আজ তাদের ভূমিকা পালন করতে পারছে না। যে রাষ্ট্রব্যবস্থা আমাদের ওপর জোর করে চেপে বসেছে, যে রাষ্ট্রব্যবস্থা আমাদের অধিকার কেড়ে নিয়েছে, সেই ব্যবস্থা গণমাধ্যমকে সুযোগ দিচ্ছে না। চতুর্দিকে ভয়-ভীতি-ত্রাস একটা। কেবল তাই নয়, আমাদের শ্রদ্বেয় শিক্ষক-অধ্যাপক যারা কিছুদিন আগেও কথা বলতেন, তারাও কথা বলছেন না। তারা ত্রাসের মধ্যে পড়েছেন, তাদের ভয় দেখানো হচ্ছে। তাদের সন্তানদের পর্যন্ত ভয় দেখানো হচ্ছে, তাদের তুলে নিয়ে যাওয়া হচ্ছে। এরকম একটা অস্বস্তিকর পরিবেশ বিরাজ করছে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আজ যে উন্নয়নের ঢাকঢোল বাজানো হচ্ছে, কখনো কি গভীরে গিয়ে দেখেছেনÑ সেই উন্নয়নটা কার? কখনো কি দেখেছেন এই প্রবৃদ্ধি বাড়ছে, এটা কার প্রবৃদ্ধি। আমি আজকে যখন এক বন্ধুর বাসা থেকে বেরুচ্ছিলাম, ছোট একটা গলির মধ্যে পাশে একটা ভ্যানের ওপর একজন তরুণ তার সারা মুখে দাড়ি হয়েছে, জামা অপরিষ্কার সেই ভ্যানটার মধ্যে শুয়ে ঘুমাচ্ছে, অত্যন্ত সুন্দর চেহারা। আমি নিশ্চিত হলাম, সে জীবনযুদ্ধে পরাজিত একজন তরুণ সে এখন গাড়ি চালাচ্ছে। এটাই যদি উন্নতি হয় সেই উন্নতি কার?
ফুটপাথের পাশে দেখবেন একটা পলিথিনের কাপড় ছড়িয়ে দিয়ে ওর ভেতরে সংসার, ছেলে-মেয়ে-বউ একটু রান্না করে খাচ্ছে। এটা একটা সমাজ হয়েছে। আমরা বড়াই করছিÑ বাংলাদেশ মধ্য আয়ের দেশ হয়ে চলেছে।
গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার সংগ্রামে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানিয়ে তিনি বলেন, আমাদের বাধ্য করতে হবে সেই অশুভ শক্তিকে যাতে দেশে একটা গণতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়, জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা হয়। অন্যথায় আমাদের অস্তিত্ব বিপন্ন হবে, আমরা নিশ্চিহ্ন হয়ে যাবো। অনুষ্ঠনের শুরুতেই অলি আহাদের বর্ণাঢ্য জীবনের স্মৃতিচারণ করে তার প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
তিনি বলেন, যিনি সারাটা জীবন দেশের জন্য উৎসর্গ করেছেন, নিজের জীবনের কথা ভাবেননি। তার মৃত্যুবার্ষিকীতে কোনো পত্রিকায় তাকে নিয়ে লেখা কোথাও আমি দেখিনি। তার ছবিটিও কোথাও প্রকাশিত হয়নি যে, এদিনে এই মহান একজন নেতা এ দেশকে নির্মাণ করার জন্য তার সারাটা জীবন উৎসর্গ করেছেন। তাকে একবারও আমরা স্মরণ করিনিÑ এই একটা জাতীয় লজ্জা ছাড়া আর কিছু নয়। শুধু অলি আহাদ নয়, যারা আমাদেরকে একটি স্বাধীন দেশ দিয়েছে, অস্তিত্ব দিয়েছে, আমাদেরকে ভবিষ্যৎ নির্মাণ করার সুযোগ করে দিয়েছে, আজকে তাদের আমরা ভুলে যাচ্ছি।
গণসংস্কৃতি দলের সভাপতি এস আল মামুনের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যান্যের মধ্যে ভাষাসৈনিক ও দৈনিক ইনকিলাবের ফিচার এডিটর অধ্যাপক আব্দুল গফুর, রওশন আরা বাচ্চু, বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য নাজমুল হক নান্নু, সাবেক এমপি দেওয়ান মো: সালাউদ্দিন বাবু, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক প্রো-ভিসি অধ্যাপক আ ফ ম ইউসুফ হায়দার, ছড়াকার আবু সালেহ, ডেমোক্র্যাটিক লীগের সাধারণ সম্পাদক সাইফুদ্দিন মনি, শিক্ষক-কর্মচারী ঐক্যজোটের সভাপতি অধ্যক্ষ সেলিম ভুঁইয়া, তথ্য ও গবেষণাবিষয়ক সহ-সম্পাদক কাদের গনি চৌধুরী, মরহুম অলি আহাদের মেয়ে বিএনপির আন্তর্জাতিক বিষয়ক সম্পাদক ব্যারিস্টার রুমিন ফারহানা প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।