Inqilab Logo

শুক্রবার, ২৮ জুন ২০২৪, ১৪ আষাঢ় ১৪৩১, ২১ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের উন্নয়নে থাকছে সব সুযোগ

নতুন আমদানিনীতি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেয়া হবে আজ

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে গত এক যুগে বড় ধরনের পরিবর্তন এসেছে। স্থানীয় শিল্পের ব্যাপক সম্প্রসারণ ঘটেছে। বড় হয়েছে অভ্যন্তরীণ ব্যবসা-বাণিজ্যের আকার। এসব কিছু বিবেচনায় রেখে নতুন আমদানিনীতি আদেশে স্থানীয় শিল্পের প্রসারে পদক্ষেপের পাশাপাশি আমদানির সুষ্ঠু নিয়ন্ত্রণে কিছু কড়াকড়িও আরোপ করা হয়েছে।
এরই ধারাবাহিকতায় তিন বছর মেয়াদি নতুন আমদানিনীতি আদেশ চূড়ান্ত হয়েছে। উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণের প্রস্তুতি গ্রহণ এবং সম্ভাব্য চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সক্ষমতা বাড়াতে এই নতুন নীতি আদেশে ব্যবসায়ীদের জন্য থাকছে হরেক সুবিধা। এতে আমদানি সহজ করার মাধ্যমে রফতানি বাড়ানোর কৌশল নেয়া হয়েছে।
এই ধারাবাহিকতায় বৈশ্বিক অঙ্গনের সঙ্গে আগামী তিন বছর দেশের আমদানি বাণিজ্য কোন মানদণ্ডে পরিচালিত হবে, তার রূপরেখা চূড়ান্ত করেছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়। এর প্রস্তাবিত নাম রাখা হয়েছে ‘আমদানিনীতি আদেশ ২০২১-২৪’। নতুন আমদানিনীতি আদেশটি আজ রোববার মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে জমা দেয়া হবে। আগামীকাল সোমবারই বসছে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের বৈঠক।
সংশ্লিষ্ট সূত্র মতে, মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের কার্যতালিকায় প্রস্তাবিত ‘আমদানিনীতি আদেশ ২০২১-২৪’ অগ্রাধিকারভিত্তিতে স্থান পাচ্ছে। নতুন করে জটিলতা তৈরি না হলে প্রধানমন্ত্রীর সভাপতিত্বে মন্ত্রিপরিষদ বিভাগের চলতি সপ্তাহ অথবা আগামী সপ্তাহের বৈঠকে নতুন আমদানিনীতি আদেশটি অনুমোদন পেতে পারে।
এ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব (অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য ও আমদানি) এ এইচ এম সফিকুজ্জামান জানান, নতুন আমদানিনীতি আদেশ ২০২১-২৪ চূড়ান্ত। রোববার তা মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে পাঠানো হবে। চলতি সপ্তাহে সম্ভব না হলে আগামী সপ্তায় আমদানিনীতি আদেশটি মন্ত্রিপরিষদ বিভাগে উঠতে পারে। সেখানে অনুমতি মিললে খসড়াটি গেজেট আকারে জারি করা হবে। কী থাকছে নতুন আমদানিনীতি আদেশে, এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, অভ্যন্তরীণ বাণিজ্যের উন্নয়নে আমদানিকে সহজ করতে প্রয়োজনীয় সব ধরনের সুযোগ রাখা হয়েছে এই আমদানিনীতি আদেশে। এতে ব্যবসায়ীরা উদ্বুদ্ধ হবেন এবং উপকৃত হবেন। স্থানীয় শিল্পেরও প্রসার ঘটবে।
যেসব সুবিধা থাকছে : নতুন আমদানিনীতিতে বিদ্যমান নীতিমালার কিছু কিছু ক্ষেত্রে সংযোজন-বিয়োজন বা সংশোধন করা হয়েছে। এগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাণিজ্য সহজীকরণের লক্ষ্যে আমদানিকারক, রফতানিকারক এবং ইনডেন্টরদের নিবন্ধন ফি ও নবায়ন ফি হ্রাস করা হয়েছে। প্রচলিত আমদানি নীতিমালায় একজন আমদানিকারককে প্রতিবছর আমদানি নিবন্ধন সার্টিফিকেট গ্রহণ করতে হয়। তবে নতুন নীতিমালায় এখন থেকে প্রতি বছর নয়, বরং পাঁচ বছর পর একবার নবায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে। এ ক্ষেত্রে নিবন্ধন ফি কমানো হয়েছে।
এ ছাড়া এলসির পাশাপাশি ক্রেতা-বিক্রেতা চুক্তির মাধ্যমে আমদানিকারক পণ্য আমদানি করতে পারবেন। ফলে যে কেউ সহজেই বিদেশ থেকে পণ্যসামগ্রী আমদানির সুযোগ নিতে পারবেন। বিশেষ করে গার্মেন্টস খাতের ব্যবসায়ীদের নমুনা আমদানি সহজ করা হয়েছে।
বর্তমান আমদানিনীতিতে সংশ্লিষ্ট আমদানি-রফতানি দফতরাধীন এলাকার মধ্যেই শুধু ঋণপত্রের মনোনীত ব্যাংক পরিবর্তনের সুযোগ আছে। তবে নতুন আমদানি নীতিতে আমদানিকারকের জন্য তার ইচ্ছা অনুযায়ী যেকোনো ব্যাংক পরিবর্তনের সুযোগ রাখা হয়েছে। বর্তমান নিয়মে আমদানি ঋণপত্র খোলার পর ঋণপত্রের কপি ১৫ দিনের মধ্যে আমদানি নিয়ন্ত্রক কর্তৃপক্ষের কাছে জমা দিতে হয়। নতুন নিয়মে ডিজিটাল মাধ্যমে জমা দিলেই চলবে।
এ ছাড়া বর্তমানে আমদানির জন্য প্রাথমিক সনদের সর্বনিম্ন নিবন্ধন ফি ৫ হাজার থেকে ৬০ হাজার টাকা ধার্য রয়েছে। বার্ষিক নবায়ন ফি দিতে হয় ৩ হাজার থেকে সর্বোচ্চ ৩০ হাজার টাকা। নতুন আমদানিনীতিতে সর্বনিম্ন প্রাথমিক নিবন্ধন ফি কমিয়ে ৩ হাজার টাকা, বার্ষিক নবায়ন ফি ২ হাজার থেকে ২০ হাজার টাকা ধরা হয়েছে। এ ছাড়া বছর বছর নবায়নের ঝামেলা যাতে না পোহাতে হয় সে লক্ষ্যে পাঁচ বছরের জন্য নবায়নের সুযোগ রাখা হয়েছে আমদানিনীতিতে। এ জন্য সর্বনিম্ন ১০ হাজার থেকে ১ লাখ টাকা নিবন্ধন ফি প্রস্তাব করা হয়েছে।
প্রচলিত নীতিতে আমদানিকারকদের বার্ষিক আমদানির পরিমাণ ৫ লাখ থেকে ৫ কোটি টাকার ঊর্ধ্বে পর্যন্ত মোট ছয়টি শ্রেণিতে নিবন্ধন সনদের সুযোগ ছিল। এটি সহজ করার জন্য নতুন নীতিতে পাঁচটি শ্রেণিতে নিবন্ধনের প্রস্তাব করা হয়েছে। বার্ষিক আমদানিসীমা ৫ লাখ থেকে বাড়িয়ে সর্বনিম্ন ১০ লাখ থেকে তার ওপরে ৫০ লাখ, ১ কোটি, ৫ কোটি ও ৫ কোটির ওপরে এ পাঁচটি ভাগে নিবন্ধনের সুযোগ রাখা হয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নতুন আমদানিনীতি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ