Inqilab Logo

শনিবার ০২ নভেম্বর ২০২৪, ১৭ কার্তিক ১৪৩১, ২৯ রবিউস সানী ১৪৪৬ হিজরি

এবার পাহাড়ে তেজপাতার বাম্পার ফলন

একবার বাগান করেই বছরের পর বছর ফলন

মো. ইব্রাহিম শেখ, খাগড়াছড়ি থেকে | প্রকাশের সময় : ২১ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

পার্বত্য রাঙামাটির বাঘাইছড়ি উপজেলায় এবার তেজপাতার বাম্পার ফলন হয়েছে। জেলা কৃষি সম্পসারণ অধিদফতরের তথ্য মতে, উপজেলার ৮টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভায় ছোট বড় মিলে প্রায় ২০০টি তেজপাতা বাগান রয়েছে। প্রতিটি বাগানেই এবার আশানুরূপ ফলন হয়েছে। আর বাজারেও তেজপাতার ব্যাপক চাহিদা রয়েছে।

মসলা এবং ওষুধি গুনের তেজপাতা চাষে ব্যাপক সম্ভাবনা দেখছে কৃষি বিভাগ। পাহাড়ে মূলত মিশ্র বাগানের সাথে তেজপাতা চাষাবাদ করা হয়। তবে বাজারে তেজপাতার ব্যাপক চাহিদা থাকায় অনেক কৃষক আলাদাভাবে তেজপাতার চাষে আগ্রহী হয়ে উঠেছেন।
তেজপাতা বাগান একবার করেই বছরের পর বছর ফলন পাওয়া যায়। গাছ পরিপূর্ণ হওয়ার পর থেকেই ডালপালা ছেটে তেজপাতা সংগ্রহ করা যায়। অল্প খরচে বেশি লাভজনক হচ্ছে তেজপাতা চাষাবাদ। বাজারে পাইকারি দরে প্রতি কেজি পাতা ৪০ থেকে ৫০ টাকা আর খুচরা বাজারে বিক্রি হচ্ছে ডাবল দামে ৮০ থেকে ১০০ টাকা।
সম্প্রতি সরেজমিনে উপজেলার প্রশিক্ষণ টিলা এলাকায় গিয়ে দেখা যায়, তেজপাতা ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম বাগান থেকে সংগ্রহ করা তেজপাতা স্থানীয় পাহাড়ি নারী শ্রমিকদের সহায়তায় ডালপালা থেকে আলাদা করার কাজ করছেন। তিনি জানান, এবার পাহাড়ে তেজপাতার ভালো ফলন হয়েছে। তাই তার আশা ব্যবসাও ভালো হবে।

রফিকুল ইসলাম আরো জানান, তিনি উপজেলার বিভিন্ন ইউনিয়নে গিয়ে প্রথমে বাগান কিনে নেন। পরে স্থানীয় শ্রমিকদের মাধ্যমে পাতা সংগ্রহ করে বাজারজাত করেন। এরপর চাহিদা অনুযায়ী পাইকারি ব্যবসায়ীদের কাছে তেজপাতা সরবরাহ করেন। এতে যা আয় হয় তা দিয়ে তার ৬ সদস্যের সংসার চলে।
উপজেলার চার কিলো বাঙালিপাড়া এলাকার তেজপাতা চাষি মোহাম্মদ আলী জানান, কৃষি বিভাগের পরামর্শে তারা ২০ জন মিলে প্রায় ৩০ একর জায়গায় তেজপাতার আবাদ করেছেন। সবমিলিয়ে এলাকায় প্রায় ৩ হাজার গাছ রয়েছে। প্রতিটি গাছ এক হাজার ৬০০ টাকায় বিক্রি করার টার্গেট রয়েছে। তিনি আশা করছেন এবার তেজপাতা বিক্রিতে প্রায় ৪৮ লাখ টাকার লেনদেন হবে।

কালামোড়া এলাকার চাষি রাঙ্গু চাকমা বলেন, তিনি প্রায় ২ একর জায়গায় নিজ উদ্যোগে তেজপাত চাষ করেছেন। কৃষি বিভাগ পরামর্শ দিলেও কোন ধরনের সহায়তা করেনি। সরকারি সহায়তা পেলে আরো ভালো ভাবে চাষ করা যেতো। পাহাড়ে যারা তেজপাতা চাষে জড়িত তারা সবাই সরকারি সহায়তা চান।
উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতরের উদ্ভিদ সংরক্ষণ কর্মকর্তা তোফায়েল আহম্মেদ ইনকিলাবকে বলেন, পাহাড়ে জুমচাষ বন্ধে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদফতর মিশ্র ফল ও বিভিন্ন ধরনের মসলা বাগান করার উপর গুরুত্ব আরোপ করছে। তারই ধারাবাহিকতায় বাণিজ্যিকভাবে পাহাড়ে তেজপাতা চাষ করা হয়েছে।

তিনি আরও জানান, কৃষি বিভাগ চাষিদের পরামর্শ দিলেও তেজপাতা চাষে আলাদা কোন প্রকল্প না থাকায় সার, বীজ ও কিটনাশক দিয়ে সহায়তা সম্ভব হয়নি। তবে বাঘাইছড়িতে এবার কোটি টাকার তেজপাতার কেনাবেচার সম্ভাবনা রয়েছে।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ