Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সরকারের মর্যাদা কর্তৃত্ব ও এখতিয়ার ক্ষুন্ন হতে পারে

অস্তিত্ব সংকটে পার্বত্য চট্টগ্রাম-১

প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মেহেদী হাসান পলাশ : হঠাৎ করেই উত্তপ্ত হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এক দশমাংশ ভূখন্ড নিয়ে গঠিত পার্বত্য চট্টগ্রাম। এর অন্যতম প্রধান কারণ পার্বত্য ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন ২০০১ সংশোধনী ২০১৬ জাতীয় সংসদে পাস হয়ে কার্যকারিতা শুরু করা।
স্থানীয় পার্বত্য বাসিন্দাদের অভিযোগ, এই আইনের ফলে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, পার্বত্য চট্টগ্রামের অখ-তা, সরকারের মর্যাদা, কর্তৃত্ব ও এখতিয়ার চরমভাবে ক্ষুণœ হওয়ার আশঙ্কার তৈরি হয়েছে। ইতোমধ্যে পাহাড়ী শীর্ষ নেতৃবৃন্দের নানা বক্তব্য ও তৎপরতায় এসবের আলামত ফুটে উঠেছে। স্থানীয় পার্বত্য বাসিন্দাদের সাথে সরকারী নানা সংস্থাও এ নিয়ে ইতোমধ্যে তাদের উদ্বেগ প্রকাশ করে ঊর্ধ্বতন মহলকে অবগত করেছে বলে বিশ্বস্ত সূত্র জানিয়েছে।
খেতাবপ্রাপ্ত মুক্তিযোদ্ধা, নিরাপত্তা ও পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ে অভিজ্ঞ বিশ্লেষক মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহম্মদ ইব্রাহীম বীর প্রতীক ইনকিলাবকে বলেন, পার্বত্য চট্টগ্রামের ভূমির মালিকানা নিয়ে দীর্ঘদিন যাবত বিভিন্ন পক্ষের ব্যক্তিগণের মধ্যে দ্বন্দ্ব বা বিরোধ বিরাজমান। এইরূপ দ্বন্দ্ব বা বিরোধ নিষ্পত্তি করার জন্য সরকারি ব্যবস্থা কাম্য। কিন্তু দুঃখজনক ও আতংকজনক বিষয় হলো যে, বাংলাদেশ সরকার পার্বত্য চট্টগ্রামে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি করার নিমিত্তে যেই আইন করেছেন যথা পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন, সেই আইনের অনেকগুলো বিধান এবং সেই বিধানের বাস্তবায়নকে আমি বাংলাদেশের জন্য হুমকিস্বরূপ মনে করি। ব্যাখ্যা করলে দাঁড়ায়, বাংলাদেশের আগামীদিনের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব তথা ভৌগলিক অখ-তা প্রশ্নের সম্মুখীন হতে পারে।
গত ১ আগস্ট মন্ত্রিসভায় ভেটিং সাপেক্ষে এই সংশোধনী পাস হওয়ার পর থেকেই পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালী অধিকার নিয়ে সক্রিয় ৫ বাঙালী সংগঠন হরতাল, অবরোধ, মানববন্ধন, বিক্ষোভ সমাবেশ, স্মারকলিপি প্রদানসহ বিভিন্ন কর্মসূচী পালন করে আসছে। এ পর্যন্ত মোট ৬ দিন হরতাল ও ১ দিন অবরোধ পালন করেছে। ইতোমধ্যে বাঙালী সংগঠনগুলো খাগড়াছড়িতে ভূমি কমিশনের চেয়ারম্যান ও কর্মকর্তাদের অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছে। গতকাল রোববার একই দাবীতে খাগড়াছড়ি ও রাঙামাটিতে অবরোধ পালিত হয়েছে। এর কারণ গতকাল রোববার রাঙামাটি সার্কিট হাউজে ভূমি কমিশনের দ্বিতীয় বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়েছে। বিক্ষিপ্ত কিছু ঘটনা ছাড়া দুই পার্বত্য জেলায় শান্তিপূর্ণভাবেই অবরোধ পালিত হয়েছে।
এদিকে রোববার সকাল ১০টায় পার্বত্য চট্টগ্রাম ভূমিবিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন চেয়ারম্যান সুপ্রিম কোর্টের অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতি মো. আনোয়ারুল হক-এর সভাপতিত্বে পার্বত্য চট্টগ্রাম আঞ্চলিক পরিষদ চেয়ারম্যান ও জনসংহতি সমিতি সভাপতি জ্যোতিরিন্দ্র বোধিপ্রিয় লারমা ওরফে সন্তু লারমা, রাঙামাটির চাকমা সার্কেল চিফ রাজা ব্যারিস্টার দেবাশীষ রায়, খাগড়াছড়ির মং সার্কেল চিফ সাচিং প্রু চৌধুরী ও বান্দরবানের বোমাং সার্কেল উ ছ প্রু চৌধুরী, রাঙামাটি জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান বৃষকেতু চাকমা, বান্দরবান জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ক্যা শৈ হ্লা, চট্টগ্রাম বিভাগীয় কমিশনারের প্রতিনিধি অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার মমিনুর রশিদ আমিন ও কমিশনের সচিব রেজাউল করিম উপস্থিত ছিলেন। তবে খাগড়াছড়ি জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান কংজরি চৌধুরী বৈঠকে অনুপস্থিত ছিলেন।
বৈঠক সূত্র ইনকিলাবকে জানিয়েছেন, বৈঠকে কমিশনের জনবল, লজিস্টিক ও আর্থিক বরাদ্দের বিষয়গুলো আলোচিত হয়েছে এবং এ সংক্রান্ত সহায়তা চেয়ে সরকারের কাছে অনুরোধ করা হয়েছে। অন্যদিকে ভূমি কমিশনে অভিযোগ জমা দেয়ার সময় চলমান রাখারও সিদ্ধান্ত হয়েছে।
এদিকে ১ আগস্ট মন্ত্রিসভায় ভেটিং সাপেক্ষে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন পাস হওয়ার পর ভেটিং শেষে ৮ আগস্ট প্রেসিডেন্ট সংশোধনীতে স্বাক্ষর করেন এবং ৯ আগস্ট তা অধ্যাদেশ আকারে গেজেটে প্রকাশিত হয়। ৬ অক্টোবর জাতীয় সংসদে পাস হলে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন কাজ শুরু করে। এর আগেও আওয়ামী লীগ সরকারের ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধনী মন্ত্রিসভায় পাস হলেও পার্লামেন্টে পাস করতে না পারায় তা বাতিল হয়ে যায়।
ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন
শান্তিচুক্তির ঘ খ-ের ৪ নং ধারায় বলা হয়েছে, “জায়গা-জমি বিষয়ক বিরোধ নিষ্পত্তিকল্পে একজন অবসরপ্রাপ্ত বিচারপতির নেতৃত্বে একটি কমিশন (ল্যান্ড কমিশন) গঠিত হইবে। পুনর্বাসিত শরণার্থীদের জমি-জমা বিষয়ক বিরোধ দ্রুত নিষ্পত্তি করা ছাড়াও এ যাবৎ যেইসব জায়গা-জমি ও পাহাড় অবৈধভাবে বন্দোবস্ত ও বেদখল হইয়াছে সেই সমস্ত জমি ও পাহাড়ের মালিকানা স্বত্ব বাতিলকরণের পূর্ণ ক্ষমতা এই কমিশনের থাকিবে। এই কমিশনের রায়ের বিরুদ্ধে কোন আপিল চলিবে না এবং এই কমিশনের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলিয়া বিবেচিত হইবে। ফ্রীঞ্জল্যান্ড (জলে ভাসা জমি)-এর ক্ষেত্রে ইহা প্রযোজ্য হইবে।” একই সাথে ৬ (খ) ধারায় বলা হয়েছে, ‘কমিশন পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন, রীতি ও পদ্ধতি অনুযায়ী বিরোধ নিষ্পত্তি করিবেন”।
মূলত এই ধারাগুলোই ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইনের মূল উৎস। তবে শেখ হাসিনার নেতৃত্বাধীন আওয়ামী লীগ সরকার প্রথম বার ক্ষমতার একেবারে শেষ দিকে ২০০১ সালের ১৭ জুলাই জাতীয় সংসদে ভূমি কমিশন আইন পাস হয়। সেই আইনে পদ্ধতিগতভাবে অধিগ্রহণকৃত জমির পরিবর্তে প্রযোজ্য আইনের কথা বলা হয়। এই চুক্তির ৬ ধারায় বলা হয়েছে,
কমিশনের কার্যাবলী ও ক্ষমতা :
(১) কমিশনের কার্যাবলী নিম্নরূপ হইবে, যথা :-
(ক) পুনর্বাসিত শরণার্থীদের ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন ও রীতি অনুযায়ী নিষ্পত্তি করা; (খ) আবেদনে উল্লিখিত ভূমিতে আবেদনকারী বা ক্ষেত্রমত সংশ্লিষ্ট প্রতিপক্ষের স্বত্ব বা অন্যবিধ অধিকার পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন ও রীতি অনুযায়ী নির্ধারণ এবং প্রয়োজনবোধে দখল পুনর্বহাল;
(গ) পার্বত্য চট্টগ্রামে প্রচলিত আইন বহির্ভূতভাবে কোন ভূমি বন্দোবস্ত প্রদান করা হইয়া থাকিলে উহা বাতিলকরণ এবং উক্ত বন্দোবস্তজনিত কারণে কোন বৈধ মালিক ভূমি হইতে বেদখল হইয়া থাকিলে তাহার দখল পুনর্বহাল:
তবে শর্ত থাকে যে, প্রযোজ্য আইনের অধীনে অধিগ্রহণকৃত ভূমি এবং রক্ষিত বনাঞ্চল, কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ প্রকল্প এলাকা, বেতবুনিয়া ভূ-উপগ্রহ এলাকা, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শিল্প-কারখানা ও সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নামে রেকর্ডকৃত ভূমির ক্ষেত্রে এই উপ-ধারা প্রযোজ্য হইবে না। তবে সন্তু লারমা এই আইন মেনে নিতে অস্বীকার করেন। তিনি সব সময় বলে থাকেন, শান্তিচুক্তির দুইটি রূপ রয়েছে। একটি লিখিত এবং অন্যটি অলিখিত বা মৌখিক সমঝোতা। সেই অলিখিত শান্তিচুক্তির বলে সন্তু লারমা ভূমি কমিশন আইনে ২৩ দফা সংশোধনী প্রস্তাব দিয়ে আন্দোলন চালিয়ে যান। এরই অংশ হিসাবে ২০১২ সালের ২২ জানুয়ারি জাতীয় সংসদে পার্বত্য চুক্তি বাস্তবায়ন জাতীয় কমিটির আহ্বায়ক ও সংসদ উপনেতা সৈয়দা সাজেদা চৌধুরী, জেএসএস সভাপতি সন্তু লারমা ও টাস্কফোর্স চেয়ারম্যান যতীন্দ্র লাল ত্রিপুরা এমপির মধ্যে এক যৌথ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সে বৈঠকে সন্তু লারমা প্রস্তাবিত ২৩ দফার মধ্যে ১৩ দফা মেনে নেয়া হয়। ১ আগস্ট, ২০১৬ সালে মন্ত্রিসভায় যে সংশোধনী পাস করা হয়েছে তা মূলত ওই বৈঠকে গৃহীত সিদ্ধান্তের অনুসরণ।
এই সংশোধনীর উল্লেখযোগ্য হলো: প্রচলিত আইন ও রীতির সাথে পদ্ধতি সংযুক্ত করা। অর্থাৎ পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন, রীতি ও পদ্ধতিগতভাবে জলেভাসা ভূমিসহ যেকোনো ভূমি বন্দোবস্ত প্রদান করিলে বা বেদখল করা হইয়া থাকিলে উহা বাতিল করণ এবং বন্দোবস্ত জনিত বা বেদখল জনিত কারণে কোনো বৈধ ভূমির মালিক বেদখল হইয়া থাকিলে তাহার দখল পুনর্বহাল: তবে শর্ত থাকে যে পার্বত্য চট্টগ্রামের প্রচলিত আইন, রীতি ও পদ্ধতি অনুযায়ী অধিগ্রহণকৃত ভূমি এবং বসতবাড়িসহ জলে ভাসা ভূমি, টিলা পাহাড় ব্যতীত কাপ্তাই জল বিদ্যুৎ এলাকা ও বেতবুনিয়া ভূ উপগ্রহ এলাকার ক্ষেত্রে এই উপধারা প্রযোজ্য হইবে না।
এখানে লক্ষ্যণীয় হলো ২০০১ সালের আইন থেকে প্রযোজ্য আইনের অধীনে অধিগ্রহণকৃত ভূমি এবং রক্ষিত বনাঞ্চল, রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন শিল্প-কারখানা ও সরকার বা স্থানীয় কর্তৃপক্ষের নামে রেকর্ডকৃত ভূমিকে কমিশনের আওতা বহির্ভূত রেখে যে সুরক্ষা দেয়া ছিলো ২০১৬ সালের সংশোধনীতে তা তুলে দেয়া হয়েছে।
এতে করে পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল প্রকার সরকারী স্থাপনা ভূমি কমিশন আইনের আওতায় চলে এসেছে। পার্বত্য চট্টগ্রামের সচেতন মহলের অভিমত, সরকার এসকল ভূমি অধিগ্রহণের ক্ষেত্রে দেশের প্রযোজ্য আইন ব্যবহার করেছে। তারা হেডম্যানের সার্টিফিকেট নেয়নি। কিন্তু পদ্ধতিগত শব্দটি যুক্ত করায় প্রায় সকল প্রকার সরকারী স্থাপনা অবৈধ হওয়ার উপক্রম হয়েছে।
এদিকে ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন আইন সংশোধনী মন্ত্রিসভায় পাস হওয়ার পর থেকেই বাঙালী সংগঠনগুলো বিক্ষোভে ফেটে পড়ে। তারা একের পর এক আন্দোলন করতে থাকে।
পার্বত্য সমঅধিকার আন্দোলনের প্রতিষ্ঠাতা, সাবেক এমপি ও উন্নয়ন বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান ওয়াদুদ ভুঁইয়া ভূমি কমিশন আইনকে বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব ও রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব বিরোধী আখ্যা দিয়ে বলেন, এই আইনের ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বভৌমত্ব, অখ-তা, সরকারের মর্যাদা, কর্তৃত্ব ও অধিকার খর্ব হবে। কিভাবে এই প্রশ্নের জবাবে ওয়াদুদ ভুঁইয়া বলেন, বর্তমান আইনে পার্বত্য চট্টগ্রামের উপজাতীয়দের সামাজিক আইন যাকে আইনে প্রচলিত রীতি ও পদ্ধতি বলা হয়েছে সে আইনে অধিগ্রহণ ব্যতিরেকে সকল ভূমি বন্দোবস্তী অবৈধ হয়ে যাবে। অর্থাৎ এখন যেখানে ডিসি অফিস, এসপি অফিস বা অন্যান্য সরকারী অফিস রয়েছে তাতে যদি পার্বত্য চট্টগ্রামের কোনো অধিবাসী যদি বলে এই জমিতে তার দাদার বাবা গরু চরাতেন বা নানা জুম চাষ করতেন। হেডম্যান যদি সে মর্মে তাকে সত্যায়ন করে তাহলে তা বাতিল হয়ে যাবে। এভাবে পার্বত্য চট্টগ্রামের সকল পুলিশ ব্যারাক, ক্যান্টনমেন্ট, ভূমি অফিস, আদালত, এমনকি ভূমি বিরোধ নিষ্পত্তি কমিশন অফিস সব বাতিল হয়ে যাবে।
পার্বত্য বাঙালী অধিকার নিয়ে আন্দোলনরত বাঙালী পার্বত্য নাগরিক পরিষদের চেয়ারম্যান ইন্জিনিয়ার আলকাস আল মামুন ভুইয়া ইনকিলাবকে বলেন, আমরা শুধু বাঙালীদের অধিকার আদায়ের জন্য লড়ছি না, একই সাথে পার্বত্য চট্টগ্রামের অখ-তা ও সরকারের কর্তৃত্ব, অধিকার ও মর্যাদা রক্ষার জন্য লড়াই করছি। এ ব্যাপারে পার্বত্য চট্টগ্রাম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের প্রতিমন্ত্রী বীর বাহাদুর ইনকিলাবকে বলেন, আইন হলো ভূমি সমস্যার সমাধান। ভূমি সমস্যা থাকলে অভিযোগ করবে, যাচাই বাছাই করবে, তথ্য প্রমাণ থাকলে বিচার করবে। এর মধ্যে যদি তারা কোনো অন্যায় পায় বিচার করবে নয়তো ডিসমিস হয়ে যাবে। কোনো ক্ষতির কিছু নেই। পদ্ধতিগতভাবে বলতে আসলে কি বোঝায় সেটা আগে জানতে হবে। না জেনে একটা উল্টাপাল্টা বললে তো হবে না। এগুলো নেয়া হয়েছে। হেডম্যান নিয়োগ দেন ডিসি সাহেব। ডিসি সাহেবরা কি এগুলো না দেখেই দিয়েছে বলে আপনি মনে করেন। তারা হেডম্যানের রিপোর্ট নিয়েই করেছে বলে। আগে ডিসি সাহেবরা সরাসরি দিতেন জানালে তিনি বলেন, ডিসি সাহেবরা হেডম্যানদের অনুমোদন নিয়েই দিয়েছেন। যদি এগুলো না দেয়া হয়ে থাকে তাহলে কে আগে দিলো কে পরে দিলো সেসব বিবেচনা করে বিচার করা হবে।
এ বিষয়ে কমিশনের চেয়ারম্যান বিচারপতি আনোয়ারুল হক বলেন, এ বিষয়ে এখনই কিছু বলার মতো হয়নি। তিনি বলেন, আগে আমাদের সময় দিন, কাজ দেখুন, তারপর কাজ দেখে মন্তব্য করুন। এটা কার্যকরী করা হিউজ টাফ।
কিন্তু সংবিধান রক্ষার শপথহীন এইসব লোকদের বিচারের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপীল করা যাবে না বলে যে ধারা আছে তাতে কি উচ্চ আদালতের এখতিয়ার খর্ব করা হলো কিনা এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, দেয়ার ক্যান বি নো রঙ উইদাউট রেমিডি। এটাই বেসিক প্রিন্সিপ্যাল অভ ন্যাচারাল জাস্টিসের কথা।যদি কোনো রং থাকে দেয়ার মাস্ট বি এ রেমিডি। ন্যাচারাল জাস্টিসের একটা বিধান আছে এটা সর্বত্র ইমপ্লাইড। কমিশন আইনের ৬-এর বিভিন্ন উপধারা উল্লেখ করে এর ফলে সকল সরকারী স্থাপনা অবৈধ হয়ে যায়নি এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, আমি জানি, আমিও এই আইনগুলো আমি দেখেছি। এগুলো কতোটা আমাদের এখতিয়ারভুক্ত তা বিবেচনা করে দেখতে হবে। আমরা কি ডিসি অফিস ভেঙে ফেলবো? আইন দ্বারা কিভাবে রাখবেন এমন প্রশ্ন করলে তিনি বলেন, এই বিষয়টি সামনাসামনি বলবো, টেলিফোনে বলা যাবে না।

 



 

Show all comments
  • সেলিম হোসেন মায়া ৩১ অক্টোবর, ২০১৬, ৯:৫২ এএম says : 1
    ধন্যবাদ মেহেদি ভাই ও দৈনিক ইনকিলাব
    Total Reply(0) Reply
  • Tusar ৩১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:২৪ পিএম says : 0
    এই আইনের ফলে পার্বত্য চট্টগ্রামের সার্বভৌমত্ব, অখ-তা, সরকারের মর্যাদা, কর্তৃত্ব ও অধিকার খর্ব হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • বিপ্লব ৩১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:৩৫ পিএম says : 0
    বাংলাদেশের সার্বভৌমত্ব, পার্বত্য চট্টগ্রামের অখন্ডতা, সরকারের মর্যাদা, কর্তৃত্ব ও এখতিয়ার রক্ষায় সরকারকে সচেষ্ট হতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • Nadim rasel ৩১ অক্টোবর, ২০১৬, ৩:০৬ পিএম says : 0
    There has been a serious miscarriage of justice.so we need to correct that.so as possible
    Total Reply(0) Reply
  • মোবারক ৩১ অক্টোবর, ২০১৬, ৪:৫৩ পিএম says : 0
    সরকারসহ সংশ্লিস্ট সকলের উচিত বিষয়টি নিয়ে গভীরভাবে ভাবা।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সরকারের মর্যাদা কর্তৃত্ব ও এখতিয়ার ক্ষুন্ন হতে পারে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ