Inqilab Logo

বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

ওদের পকেট ভরতে ভরতে মানুষের পকেটেও কিছু নাই-মির্জা ফখরুল

মামলা, সাজা ও খোকার সম্পত্তি ক্রোকের প্রতিবাদে সমাবেশ

প্রকাশের সময় : ৩১ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : সরকারের কথিত উন্নয়নের সুবাদে ওদের (আওয়ামী লীগ) পকেট ভরতে ভরতে অন্যদের পকেটে কারো কিছু নেই, দেশের মানুষের পকেটেও কিছু নাই। ১০ টাকা কেজির চাল সমস্ত সরকারি দলের লোকজন নিয়ে চলে যাচ্ছে। এই অশুভ দানবীয় শক্তিকে রুখতে হবে। গতকাল রোববার বিকালে এক প্রতিবাদ সমাবেশে বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এই অভিযোগ করেন।
তিনি বলেন, ‘নির্বাচনী বৈতরণী’ পার হতে সরকার আবারো ‘বশংবদ’ নির্বাচন কমিশন গঠন করার চক্রান্ত করছে। পত্রিকায় দেখেছেন সরকার বলেছেন, সংবিধান অনুযায়ী সার্চ কমিটি গঠনের মধ্য দিয়ে নতুন নির্বাচন কমিশন গঠন করা হবে। কে করবে, সার্চ কমিটি কারা গঠন করবেন? আমরা অতীতে দেখেছি, কারা গঠন করেছেন। আপনাদের পছন্দ মতো ব্যক্তিদের দিয়ে নির্বাচন কমিশন গঠন করেছেন। যা প্রমাণিত হয়েছে- তারা অযোগ্য, অথর্ব, বশংবদ ছাড়া কিছুই নয়। একটি নির্বাচনও তারা সুষ্ঠুভাবে করতে পারেনি। এর বিরুদ্ধে সোচ্চার হতে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহবানও জানান মির্জা ফখরুল।
রমনার ইঞ্জিনিয়ার্স ইন্সটিটিউশন মিলনায়তনে মহানগর বিএনপির উদ্যোগে দলের ভাইস-চেয়ারম্যান মহানগরের সাবেক সভাপতি ও মেয়র সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলায় সাজা প্রদান ও সম্পত্তি ক্রোকের প্রতিবাদে এই সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। বর্তমানে জটিল রোগে আক্রান্ত খোকা চিকিৎসার জন্য যুক্তরাষ্ট্রে অবস্থান করছেন। গত সেপ্টেম্বরে একটি আদালত অবৈধ সম্পদ অর্জন ও সম্পদের তথ্য গোপনের অভিযোগে দুর্নীতি দমন কমিশনের মামলায় খোকাকে ১৩ বছরের কারাদ- দেয়। আদালতের নির্দেশে সরকার তার রাজধানীর গুলশানের একটি বাড়িসহ গাজীপুরের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করে।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, দেশের মানুষ একটা অস্থির শ্বাসরুদ্ধকর অবস্থার মধ্যে বাস করছে। মানুষ তাদের সকল অধিকার থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ভোটের অধিকার নেই, কথা বলার অধিকার নেই, সংগঠিত হবার অধিকার নেই্, সভা করার অধিকার নেই। অত্যন্ত সুপরিকল্পিতভাবে দেশে যাতে গণতন্ত্র না থাকে, দেশে যাতে বিরোধী দল না থাকে, যাতে ভিন্নমত না থাকে, সেজন্য সরকার কাজ করে চলেছে।
দ্রব্যমূল্যের প্রসঙ্গ টেনে তিনি বলেন, ৫০ টাকার নিচে চাল নেই। প্রতিটি জিনিসের দাম আকাশচুম্বি হয়েছে। অথচ সেদিকে সরকারের কোনো খেয়াল নেই। ১০ টাকা কেজির চাল সমস্ত সরকারি দলের লোকজন নিয়ে চলে যাচ্ছে। এতো উন্নয়নের কথা বলা হচ্ছে, যত রাস্তা-ঘাট উন্নয়নের নামে ব্যয় করা হচ্ছে, বিশাল অঙ্কের টাকা তার চার ভাগের তিনভাগ সরকারি দলের লোকেরা নিয়ে চলে যাচ্ছে। ঢাকা শহরে দেখেন না কেনো- উত্তরা, বনানী, গুলশান এলাকাতে রাস্তা কেটে কেটে রাস্তা বানানো হচ্ছে, ভালো রাস্তা কেটে ফেলা হচ্ছে, ভালো ভালো ফুটপাতগুলো তুলে ফেলা হচ্ছে। সেখানে আবার একেবারে নিম্ন মানের কাজ নতুন করে টাইলস-টুইলস বসানো হচ্ছে।
মির্জা ফখরুল অভিযোগ করে বলেন, আজকে আওয়ামী লীগ সুপরিকল্পিতভাবে দেশকে একটা একদলীয় শাসনের ব্যবস্থার দিকে যাচ্ছে। তারা বাংলাদেশ থেকে গণতন্ত্রকে চিরতরে নির্বাসিত করতে চাচ্ছে। তার প্রমাণ একে একে দেখছি যে, সমস্ত গণতন্ত্রের যে প্রতিষ্ঠানগুলো তাকে ধ্বংস করে ফেলছে।
তিনি বলেন, আজকে তারা মিডিয়া ও সংবাদ মাধ্যম, বিচার ব্যবস্থা,আইনশৃঙ্খলা বাহিনী, নির্বাচন কমিশনকে নিয়ন্ত্রণ করেছে। অর্থাৎ সমস্ত প্রতিষ্ঠানগুলোকে তারা তাদের দলের মতো করে তৈরি করে নিয়েছে। এভাবে যদি গণতন্ত্রের কথা বলে তখন চিন্তা হয়, আমরা উদ্বিগ্ন হই-সত্যিকার অর্থে আমাদের ভবিষ্যৎ কী হবে?
সাদেক হোসেন খোকার বিরুদ্ধে মামলা ও তার সম্পত্তি ক্রোকের প্রসঙ্গে তিনি বলেন, তিনি দেশে এসে মামলা পরিচালনা করবে, সেই সুযোগ তাকে দেয়া হলো না। সে যখন দেশের বাইরে তখন তার সম্পত্তি ক্রোক করা হলো। এভাবে সম্পত্তি শুধু খোকাই নয়, বাংলাদেশের সমস্ত জনগণের সম্পত্তি সরকার ক্রোক করে ফেলেছে ইতিমধ্যে। কারো কিছু বাকী নেই। উন্নয়নের সুবাদে ওদের পকেট ভরতে ভরতে বিএনপির মানুষের পকেটে কারো কিছু নেই, দেশের মানুষের পকেটেও কিছু নাই।
সভাপতির বক্তব্যে মহানগর আহবায়ক ও দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য মির্জা আব্বাস বলেন, আওয়ামী লীগের নতুন সাধারণ সম্পাদক বলেছেন, দ্রুত নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে হবে। আওয়ামী লীগ নির্বাচনের প্রস্তুতি কী নেবে? প্রস্তুতি হলো বিএনপির সকল নেতা-কর্মীদের কারারুদ্ধ করতে হবে। আর কোনো প্রস্তুতি ওদের লাগবে না। বিএনপির সব নেতা-কর্মীকে কারারুদ্ধ করে ফেললে কে আর নির্বাচন করতে আসবে-এটাই হলো তাদের ধারণা।
এই প্রতিবাদ সমাবেশে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান, ভাইস চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু, চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আবুল খায়ের ভুঁইয়া, আবদুস সালাম, কেন্দ্রীয় নেতা সৈয়দ মোয়াজ্জেম হোসেন আলাল, খায়রুল কবির খোকন, মীর সরফত আলী সপু, মহানগরের কাজী আবুল বাশার, নবী উল্লাহ নবী, স্বেচ্ছাসেবক দলের শফিউল বারী বাবু, যুব দলের অ্যালবার্ট ডি কস্টা, মহিলা দলের হেলেন জেরিন খান, মুক্তিযোদ্ধা দলের সাদেক আহমেদ খান প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ওদের পকেট ভরতে ভরতে মানুষের পকেটেও কিছু নাই-মির্জা ফখরুল
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ