Inqilab Logo

মঙ্গলবার ০৫ নভেম্বর ২০২৪, ২০ কার্তিক ১৪৩১, ০২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্রলীগ কমিটি বেপরোয়া

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৬ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

বেপরোয়া হয়ে উঠেছে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) শাখা ছাত্রলীগ। মাদক ব্যবসা, সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ থেকে চাদা আদায়, কলেজ ও হল ক্যান্টিন থেকে চাদা আদায়, ইন্টার্ণ হোস্টেলের রুম ভাড়া দেয়া এবং নিজেদের স্বার্থ পরিপন্থী কোন কিছু ঘটলেই ছাত্র-ইন্টার্ন ডাক্তার, নার্স-কর্মচারীদের ওপর হামলার ঘটনা ঘটাচ্ছে। কমিটির মেয়াদ শেষ হওয়ায় দায়বদ্ধতা না থাকায় অধিক বেপরোয়া হয়ে উঠেছেন কমিটির নেতারা। এদিকে ঢামেক নেতাদের অধিকাংশেরই শিক্ষা জীবন শেষ। তারপরও কমিটিতে পদ দখল করে আছেন। যদিও ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির নের্তৃবৃন্দ শিগগিরই ঢামেক কমিটি ভেঙ্গে দিয়ে নতুন কমিটি দেয়ার কথা জানিয়েছেন।
ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল সূত্রে জানা গেছে, বর্তমান কমিটির সভাপতি শেখ মো. আল আমিন ও সাধারণ সম্পাদক মো. জামিউল ইসলাম ফুয়াদ কারোরই নেই ছাত্রত্ব। বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি আল-নাহিয়ান খান জয় ও সাধারণ সম্পাদক লেখক ভট্রাচার্য ২০২০ সালের ৪ অক্টোবর ১ বছরের জন্য ঢামেক শাখা ছাত্রলীগের কমিটি ঘোষণা করেন। যদিও ওই সময়েই কমিটি নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়। এরপরও বর্তমান কমিটির মেয়াদ শেষ হয়েছে গত বছরের অক্টোবরে।
অনুসন্ধানে জানা যায়, ঢামেক সভাপতি শেখ মো. আল আমিন চিকিৎসক হিসেবে প্রাকটিসের জন্য বাংলাদেশ মেডিকেল এ্যান্ড ডেন্টাল কাউন্সিলের সনদ নিয়েছেন ২০২০ সালের ১৬ জুলাই। সাধারণ সম্পাদক মো. জামিউল ইসলাম ফুয়াদের চাকরিতে যোগদানের তারিখ গত বছরের ১৪ জানুয়ারি।
এরই ধারাবাহিকতায় মেয়াদত্তোর্ণ কমিটি হওয়ায় দলের প্রতি দায়বদ্ধতা না থাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের নেতৃত্বে ঢামেক ছাত্রলীগ। গত ১০ জানুয়ারি চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারীদের ওপর হামলা করে। এ সময় চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী সমিতির ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক মো. শাকিল আহমেদ জনিসহ কয়েকজনের ওপর হামলা চালায়। এতে শাকিল আহমেদ জনি গুরুতর আহত হন। তিনি এখনও হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন।
সূত্র জানায়, পূর্ব নির্ধারিত কর্মসূচির অংশ হিসেবে বাংলাদেশ চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী সমিতি আউট সোর্সিংয়ে জনবল নিয়োগের প্রতিবাদে ঢাকা মেডিকেল কলেজের সামনে শান্তিপূর্ণভাবে অবস্থান করছিলেন। এ সময় ঢামেক ছাত্রলীগের কিছু উশৃঙ্খল নেতাকর্মী মো. শাকিল আহমেদ জনিকে কলেজ চত্ত্বরে মারধর করে। জনি দৌড়ে পালিয়ে হাসপাতালের ১০৮ নম্বর ওয়ার্ডে গেলে সেখানে গিয়েও মারধর করে এবং শৌচাগারে আটকে রাখে। পরে কর্মকর্তা কর্মচারীদের সঙ্গে নিয়ে জনিকে উদ্ধার করেন ঢামেক পরিচালক। জনি বর্তমানে হাসপাতালে ভর্তি আছে। এ ঘটনায় ঢামেক হাসপাতাল ছাড়াও সারা বাংলাদেশের চতুর্থ শ্রেণির কর্মচারীরা নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে।
এদিকে এ ঘটনার বিচার চেয়ে গত মঙ্গলবার ঢামেক প্রিন্সিপাল ও হাসপাতালের পরিচালক বরাবর একটি স্মারক লিপি দিয়েছে ঢামেক চতুর্থ শ্রেণী কর্মচারী সমিতি। তারা ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে এর সুষ্ঠু বিচার অন্যথায় বৃহৎ কর্মসুচীর ঘোষণা দিয়েছে।
ঢামেক হাসপাতালের চতুর্থ শ্রেণির সভাপতি আবু সাঈদ বলেন, আমরা কলেজের প্রিন্সিপাল ও হাসপাতালের পরিচালক বরাবর স্মারকলিপি দিয়েছি। এ ঘটনায় দোষী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে ব্যবস্থা না নিলে আমরা পরবর্তী কর্মসূচি ঘোষণা করব। তদন্ত সাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার বিষয়টি কর্তৃপক্ষ আশ্বস্ত করেছে বলেও জানিয়েছেন আবু সাঈদ। এ বিষয়ে ঢামেক হাসপাতালের পরিচালক বিগ্রেডিয়ার জেনারেল মো. নাজমুল হক জানান, বিষয়টিকে অতি গুরুত্বের সঙ্গে দেখা হচ্ছে। ঢামেক মেয়াদোত্তীর্ণ কমিটির বিষয়ে ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির একাধিক নেতা জানিয়েছেন, শিগগিরই ঢামেকে নতুন কমিটি দেয়া হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: মেয়াদোত্তীর্ণ ছাত্রলীগ কমিটি বেপরোয়া
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ