পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রাজধানীর গুলিস্তান থেকে ৪০-৫০ টাকায় কেনা হয় তামার কয়েন। এরপর সেসব কয়েন প্রত্মতাত্তি¡ক দাবি করে প্রতারণার মাধ্যমে বিক্রি হতো কোটি টাকায়। টার্গেট ব্যক্তির সঙ্গে দরদাম চলতো পাঁচ তারকা হোটেলে। প্রতারক চক্রের সদস্যরা নিজেরাই বিক্রেতা, রসায়নবিদ ও দালাল সাজিয়ে এমন পরিবেশ তৈরি করতেন। যার ফাঁদে পা দিয়ে সর্বস্বান্ত হয়েছেন অনেকেই।
স¤প্রতি রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে ওই চক্রের তিন দালাল ও কথিত এক রসায়নবিদকে গ্রেফতার করে মহানগর গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)। যারা তামার তৈরি ৫০ টাকার কয়েন প্রত্মতাত্তি¡ক নিদর্শন হিসেবে বিক্রি করে আসছিলেন কোটি টাকায়। এসময় তাদের কাছ থেকে ৪২টি ধাতব মুদ্রা উদ্ধার করা হয়। পরে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে সাভারে অভিযান চালিয়ে চক্রের আরেক সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়। তার দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে মানিকগঞ্জের বাঁশঝাড় থেকে উদ্ধার করা হয় ১১ লাখ টাকা।
ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের একজন দায়িত্বশীল কর্মকর্তা ইনকিলাবকে বলেন, সাধারণত তামা দিয়ে এসব কয়েন তৈরি হয়। যাতে লিখে দেয়া হয় ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির নাম। এই কয়েনগুলোকে একদল প্রতারক গুলিস্তান থেকে কিনে নেয়। তারপর চক্রটি বাংলাদেশি সরলমনা কিন্তু লোভী টাইপের লোকদের বিভিন্ন হোটেলে নিয়ে প্রত্মতাত্তি¡ক নিদর্শন হিসেবে দেখায় এবং একেকটির দাম হাঁকে ৪-৫ কোটি টাকা। আসলে এই কয়েনের মূল্য ৪০-৫০ টাকা। কিন্তু সেটার জন্য প্রতারকরা কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়।
ডিবির যুগ্ম কমিশনার (উত্তর) মোহাম্মদ হারুন-অর-রশীদ বলেন, এরকম প্রতারক চক্র বিভিন্ন জায়গায় রয়েছে। এমন অস্বাভাবিক কোনো প্রলোভন থেকে সবাইকে সাবধান হওয়া জরুরি। এ চক্রের সাথে জড়িত অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
প্রতারণার ধরন প্রসঙ্গে ডিবির একজন কর্মকর্তা বলেন, কথিত মহামূল্যবান কয়েকটি কয়েন ক্রেতার সামনে স্কচটেপে মোড়ানো প্যাকেট থেকে খোলা হয়। কার্বন কাগজের আরেকটি প্রলেপ ছিড়ে কয়েন বের করে ম্যাগনিফায়িং গøাস দিয়ে পরীক্ষা করেন কথিত রসায়নবিদ। সাজানো পরীক্ষায় রসায়নবিদ ৪ ধরনের কেমিক্যাল ব্যবহার করেন। নিখুঁত পরীক্ষার পর রসায়নবিদ জানান এরমধ্যে দুটি কয়েন আসল। ক্রেতা, বিক্রেতা ও দালালেরর উপস্থিতিতে দুটি কয়েনের দাম নির্ধারণ হয় ৫ কোটি টাকা। কথিত ৪০০ বছরের পুরানো দুটি কয়েনের দামে ক্রেতা সন্তুষ্ট হয়ে ৪০ লাখ টাকা অগ্রিম দেয়ার পর বাকি টাকা পরিশোধের তারিখ ঠিক করে বিদায় নিলেন। নির্দিষ্ট তারিখে বাকি টাকা দিয়ে কয়েন নিতে গিয়েই ঘটে বিপত্তি। খোঁজ নেই দালাল বা বিক্রেতার। এরপর বাধ্য হয়ে ক্রেতা পুলিশকে জানান।
ওই কর্মকর্তা আরো জানান, প্রতারিত হওয়া এক ক্রেতা বলেন, কয়েন বিক্রির কথা বলে আমাকে নিয়ে গেছে। তখন আমার কাছে বিক্রির কথা বলে স্ট্যাম্প করে ৪০ লাখ টাকা নিয়েছে। এই ভন্ড-প্রতারকরা এমন পরিবেশ তৈরি করে যে মানুষের তখন আর বিবেক বুদ্ধি কাজ করে না।
পুলিশ জানায়, শত বছরের পুরানো কয়েন দরকার এমন লোকদের টার্গেট করে চক্রটি। পরে নিজেরাই দালাল ও বিদেশি ক্রেতা সেজে কোনো তারকা হোটেলে বসে দরদাম ঠিক করে। আসলে কয়েনগুলো পুরনো না। এগুলো গুলিস্তান থেকে কিনে আনা হয়, যা শুধু তামা দিয়ে বানানো।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।