পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : বরিশাল সেক্টরে সরকারী-বেসরকারী আকাশ পরিবহন সংস্থাগুলো আবারো যাত্রী ভাড়া বৃদ্ধির পাশাপাশি শীতকালীন নতুন সময়সূচী যাত্রী দুর্ভোগ বৃদ্ধি করছে। আজ (৩০অক্টোবর) থেকে সরকারী-বেসরকারী এয়ারলাইন্সগুলোতে শীতকালীন সময়সূচি কার্যকর হচ্ছে। ফলে এ সেক্টরে যাত্রী সংখ্যা হ্রাসের আশংকা করছেন ওয়াকিবহাল মহল। এমনকি বেসামরিক বিমান চলাচল মন্ত্রীর নির্দেশ অমান্য করেই জাতীয় পতাকাবাহী বিমান সংস্থাটি বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট সংখ্যা হ্রাসসহ নতুন সময়সূচিতে যাত্রীদের সুবিধা-অসুবিধার কথা বিবেচনায় নেয়া হয়নি। ফলে নতুন করে বরিশাল সেক্টরে যাত্রী সংখ্যা হ্রাস পাবে। ইতোপূর্বে সংস্থাটির উড়োজাহাজে রোববারের ফ্লাইটে যে যাত্রী ভ্রমণ করত, আজকের নতুন সময়সূচিতে তা অর্ধেকেরও নিচে নেমে এসেছে বলে জানা গেছে। একটি কুচক্রী মহল পুনরায় দেশের দক্ষিণাঞ্চলের একমাত্র বিমান বন্দরের সাথে রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন বন্ধ করে দিয়ে বেসরকারী উড়ান সংস্থাগুলোর জন্য একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তারের সুযোগ করে দিতে চাচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে। সরকারী-বেসরকারী এয়ারলাইন্সের সুষ্ঠু প্রতিযোগিতার কারণে এতদিন বরিশালসহ দেশের বিভিন্ন সেক্টরে এয়ারলাইন্সগুলোর যাত্রী ভাড়ায় যথেষ্ট সমতা ছিল।
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশে ও বিমান চলাচল মন্ত্রীর ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় দীর্ঘ প্রায় ৮ বছর পরে ২০১৫-এর এপ্রিলের প্রথমভাগ থেকে বরিশালসহ দেশের সবগুলো অভ্যন্তরীণ সেক্টরে জাতীয় পতাকাবাহী আকাশ পরিবহন সংস্থাটি ফ্লাইট চালু করে। প্রতিযোগিতায় টিকতে না পেরে এর পর পরই বেসরকারী ইউনাইটেড এয়ারলাইন্স বরিশাল থেকে তার বাণিজ্যিক কার্যক্রম গুটিয়ে নেয়।
গত বছর জুলাই থেকে বেসরকারী ‘ইউএস-বাংলা এয়ারলাইন্স’ বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট চালু করে। সপ্তাহে ৪টি উড়ানের পাশাপাশি যাত্রীদের মহানগর অফিস থেকে বাতানুকূল গাড়ীতে ১৮ কিলোমিটার দূরের বিমান বন্দরে পৌঁছে দিচ্ছে বেসরকারী এ উড়ান সংস্থাটি। চলতি বছর এপ্রিলের শুরুতে বেসরকারী বিলাসবহুল ‘নভো এয়ার’ সপ্তাহে ৪টি ফ্লাইট নিয়ে বরিশালের আকাশে ডানা মেলে। বেসরকারী এ আকাশ পরিবহন সংস্থাটিও বাতানুকূল গাড়ীতে তা যাত্রীদের বিমান বন্দরে পৌঁছে দিচ্ছে। কিন্তু রাষ্ট্রীয় বিমান সংস্থাটি তার যাত্রীদের বিমান বন্দরে পৌঁছে দেয়ার কোন ব্যবস্থা গ্রহণ করেনি। অথচ খোদ বিমানমন্ত্রী পর্যন্ত এ বিষয়ে সরাসরি নির্দেশ প্রদানের পরেও তা কার্যকর হয়নি। বিমান কর্তৃপক্ষ বিষয়টি নিয়ে একের পর এক নানা খোঁড়া যুক্তি দাঁড় করছেন বলে যাত্রীদের অভিযোগ। ফলে সরকারী এ আকাশ পরিবহন সংস্থাটির উড়ানে ভ্রমণে যাত্রীদের যথেষ্ট অনীহা লক্ষ্য করা যাচ্ছে। পরিস্থিতি এমনই যে, একজন যাত্রী ঢাকা থেকে বিমান-এ দুই থেকে আড়াই হাজার টাকায় আকাশ পথে বরিশালে পৌঁছতে পারলেও তাকে বিমান বন্দর থেকে ১ হাজার টাকায় গাড়ী ভাড়া করে শহরে পৌঁছতে হচ্ছে। অথচ বেসরকারী এয়ারলাইন্সগুলো ১শ’ টাকার বিনিময়ে বাতানুকূল গাড়ীতে তার যাত্রীদের নগরীতে পৌঁছে দিচ্ছে।
এক হিসাবে দেখা গেছে, গত জানুয়ারী থেকে সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বরিশাল-ঢাকা আকাশ পথে সরকারী বিমানে যাত্রী ছিল ৪হাজার ১৭১জন। একই সময়ে ইউএস বাংলা’র ফ্লাইটে ৭হাজার ১৮১জন যাত্রী ভ্রমণ করেছে। গত এপ্রিলে চালু হবার পর থেকে সেপ্টেম্বর সময়ে নভো এয়ার বরিশাল সেক্টরে ৫ হাজার ৭২ জন যাত্রী পরিবহন করেছে।
গত কয়েক মাস সরকারী-বেসরকারী ৩টি এয়ারলাইন্স বরিশাল সেক্টরে যাত্রী পরিবহনে অনেকটা প্রতিযোগিতায় নামে। এমনকি এক পর্যায়ে যাত্রীভাড়া হ্রাসেরও প্রতিযোগিতা শুরু করে এসব আকাশ পরিবহন সংস্থা। শুরুতে বিমান ৩ হাজার টাকায় ফ্লাইট চালু করলেও তা এক পর্যায়ে ২ হাজার টাকায়ও হ্রাস করা হয়। প্রতিযোগিতায় টিকতে দুটি বেসরকারী এয়ারলাইন্সই ২ হাজার টাকার নিচে ভাড়া নির্ধারণ করে। এমনকি নভো এয়ার একটির সাথে আরেকটি সৌজন্য টিকেটও প্রদান করে। কিন্তু বিমান আজ থেকে বরিশাল সেক্টরে যাত্রী ভাড়া ২৩শ’ টাকার স্থলে ২ হাজার ৯শ টাকায় নির্ধারণের পাশাপাশি অগ্রহণযোগ্য সময়সূচী প্রবর্তন করছে। বেসরকারী দুটি এয়ারলাইন্সও ভাড়া ৩ হাজার টাকার ওপরে নির্ধারণ করেছে ইতোমধ্যে। সরকারী এয়ারলাইন্স-এর শীতকালীন সময়সূচী যাত্রীবান্ধব না হবার সুযোগকে কাজে লাগিয়ে বেসরকারী উড়ান সংস্থাগুলো যাত্রী ভাড়া আরো বৃদ্ধির আভাষ দিয়েছে।
উপরন্তু আজ থেকে কার্যকর শীতকালীন সময়সূচীতে রাষ্ট্রীয় আকাশ পরিবহন সংস্থাটি তার মঙ্গলবারের ফ্লাইট বন্ধ করে দিয়েছে। এতদিন প্রতি রোববার সকালে, মঙ্গলবার দুপুরে ও বৃহস্পতিবার বিকেলে বিমান-এর ফ্লাইট চলাচল করত। মঙ্গলবারে বেসরকারী দুটি এয়ারলাইন্স-এর ফ্লাইট থাকার পরেও বিমান দুপুর বেলা যে ফ্লাইট পরিচালনা করে আসছিল, তা যাত্রীদের কাছে খুব একটা গ্রহণযোগ্য হয়নি। যাত্রী সাধারণের পক্ষ থেকে ফ্লাইটটি সোমবার বা বুধবার অথবা মঙ্গলবার সকালে পরিচালনার অনুরোধ জানান হচ্ছিল। কিন্তু কর্তৃপক্ষ তাতে কর্ণপাত না করে যাত্রী কম হবার অজুহাতে আগামী মঙ্গলবার থেকে ফ্লাইটটি স্থগিত করার ঘোষণা দিয়েছে। উপরন্তু রবি ও বৃহস্পতিবার যাত্রী বান্ধব সময়সূচিটিও পরিবর্তন করে ঐ দুদিনও ঢাকা থেকে সকাল ১১টা ৫০টায় ও বরিশাল থেকে দুপুর ১২.৪৫ টায় নতুন সময়সূচি প্রবর্তন করেছেন। যা আজ থেকে কার্যকর হচ্ছে। ফলে ইতোমধ্যেই যাত্রীদের মধ্যে চরম ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
গত কয়েকদিনে একাধিক যাত্রী ইনকিলাবসহ বিভিন্ন সংবাদপত্র অফিসে ফোন করে তাদের ক্ষোভের কথাও জানিয়েছেন। এব্যাপারে গতকাল বিমান-এর বরিশাল বিক্রয় অফিসের জেলা ব্যবস্থাপকের সেল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি তা রিসিভ করেননি। তবে সংস্থাটির জিএম বিক্রয় ও বিপণন এহসান কাজীর সাথে আলাপ করা হলে তিনি জানান, উড়োজাহাজ স্বল্পতার কারণে বিভিন্ন সেক্টরে কিছু সময়সূচীর পরিবর্তন করতে হয়েছে। তার পরেও চেষ্টা করা হচ্ছে বরিশালের সময়সূচী যাত্রী বান্ধব করতে।
এদিকে বেসামরিক বিমান চলাচল ও পর্যটনমন্ত্রী রাশেদ খান মেনন গত ২৩ অক্টোবর বিমান-এর ব্যবস্থাপনা পরিচালককে বরিশাল সেক্টরে ফ্লাইট সংখ্যা হ্রাস না করার নির্দেশ প্রদানের পাশাপাশি যাত্রীবান্ধব সময়সূচি প্রবর্তনের নির্দেশ দেন বলে জানা গেছে। তিনি অবিলম্বে বরিশাল সেক্টরের যাত্রীদের বিমান বন্দরে পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে যানবাহনের ব্যবস্থা করতেও নির্দেশ দেন। কিন্তু মন্ত্রীর এসব নির্দেশের পরেও কি কারণে আজ থেকে বরিশাল সেক্টরে জাতীয় পতাকাবাহী বিমান উল্টো পথে হাঁটছে তার কারণ জানতে বেশ কয়েকবার সংস্থাটির ব্যবস্থাপনা পরিচালকের সাথে আলাপের চেষ্টা করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।