Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

শৌচাগারে নারীর ভিডিও ধারণ

পপুলারের স্টাফ গ্রেফতার : পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা : বেসরকারি টিভির দুই প্রতিনিধিকে আটকে রেখে লাঞ্ছনা

প্রকাশের সময় : ৩০ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : রাজধানীর ধানমন্ডিতে পপুলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের শৌচাগারে থাকাবস্থায় এক নারীর দৃশ্য মোবাইল ফোনে ভিডিও ধারণকালে  সেখানকার এক স্টাফকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গতকাল শনিবার সকালে এ ঘটনা ঘটে। গ্রেফতারকৃত স্টাফের নাম হাসিবুর রহমান সুমন (২৭)। তিনি পপুলার হাসপাতালের  টেলিফোন (পিএবিএক্স) অপারেটর পদে কর্মরত। পর্নোগ্রাফি আইনে দায়ের করা মামলায় সুমনকে গ্রেফতার দেখিয়ে আদালতে পাঠিয়েছে পুলিশ।  
এদিকে, এই সংবাদ সংগ্রহ করতে গেলে ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা একটি বেসরকারি টেলিভিশনের প্রতিবেদক ও চিত্রসাংবাদিককে ঘরে আটকে রেখে লাঞ্ছিত করে।
ধানমন্ডি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আব্দুল লতিফ জানান, ভুক্তভোগী নারী চিকিৎসা নিতে গতকাল সকালে পপুলার হাসপাতালে যান। চিকিৎসক তাকে ইউরিন টেস্ট করার জন্য বলেন। ওই নারী প্যাথলজি বিভাগ থেকে দেয়া টিউব নিয়ে হাসপাতালের শৌচাগারে প্রবেশ করেন। এ সময় ওই নারী রোগীর পিছু পিছু যান সুমন। ওই নারী শৌচাগারে গেলে গোপনে  সেখানের দৃশ্য ধারণ করতে থাকে সুমন। শৌচাগার থেকে বের হবার পথে বিষয়টি নজরে পড়ে ওই নারীর। এ সময় তিনি চিৎকার শুরু করেন। ঘটনাস্থলে জড়ো হন অন্য স্টাফ এবং সেখানে উপস্থিত রোগী ও আগত ব্যক্তিরা। তারা ওই নারী ও স্টাফ সুমনকে ধরে থানায় নিয়ে আসে।
অভিযোগকারী নারী বলেন, সকাল ৭টার দিকে ব্লাড ও ইউরিন টেস্টের জন্য তার মা ও ছোট বোনকে নিয়ে পপুলারে যান। এ সময় রিসিপশনে চারজনকে দেখতে পান। তারাই নির্দিষ্ট স্থানে টেস্ট করার কথা বলেন। ব্লাড দেয়ার পরে তারা ইউরিন নিয়ে আসতে বলেন। তাদের টয়লেটে টেস্ট সংশ্লিষ্ট কাজ করার সময় তিনি দেখেন ওয়াশ রুমের নিচে কেউ একজন হাত দিয়ে ভিডিও করছে মোবাইল নিয়ে। তিনি আরো বলেন, যখন কে ভিডিও করছে বলে চিৎকার করেন তখন ভিডিও ধারণকারী সঙ্গে সঙ্গে মোবাইল নিয়ে চলে যেতে থাকেন। এসময় অভিযোগকারী তাকে চিনে ফেলেন। সঙ্গে সঙ্গে গিয়ে ওই ব্যক্তিকে ধরে ফেলেন তিনি। এসময় ওই ব্যক্তির কাছ থেকে মোবাইল ছিনিয়ে নেন। পরে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে জানান অভিযোগকারী। কিন্তু হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ উল্টো অভিযুক্ত ব্যক্তির পক্ষ নিয়ে কথা বলেন।  
পুলিশ ও প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সুমন তার স্যামসাং গ্যালাক্সি ফোন দিয়ে ওই নারীর গোপনে ভিডিও ধারণের চেষ্টা করে। বিষয়টি টের পেয়ে ওই নারী চিৎকার শুরু করেন। তার চিৎকারে অন্যরা এগিয়ে এসে সুমনকে হাতেনাতে ধরে ফেলে। পরে থানায় খবর দিলে পুলিশ এসে তাকে আটক করে নিয়ে যায়। এ খবর পেয়ে সময় টেলিভিশনের দুই সাংবাদিক ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহের জন্য গেলে পপুলারের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা তাদের একটি কক্ষে আটকে রেখে লাঞ্ছিত করে। পরে পুলিশের হস্তক্ষেপে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আসে।
ধানমন্ডি থানার ওসি আব্দুল লতিফ জানান, ঘটনার পর ভুক্তভোগী থানায় এসে সুমনকে আসামি করে পর্নোগ্রাফি আইনে মামলা করেছেন। মামলা নং-১৩। সেই মামলায় সুমনকে গ্রেফতার দেখিয়ে বিকেলে আদালতে প্রেরণ করা হয়। আর জব্দকৃত মোবাইলে ভিডিও পাওয়া গেছে। ভিডিওটি ওই নারীর কি না তা নিশ্চিত হতে সিআইডির ল্যাবরেটরিতে মোবাইলটির ফরেনসিক পরীক্ষা করা হবে।  সন্ধ্যার দিকে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা এসআই খায়রুল ইসলাম বলেন, গ্রেফতার সুমনের বাড়ি চুয়াডাঙ্গা জেলার জীবননগর এলাকায়। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে সে গোপনে ভিডিও ধারণের বিষয়টি স্বীকার করেছে। তাকে আদালতে হাজির করে রিমান্ড চাওয়া হয়েছে। সে কী উদ্দেশ্যে ভিডিও ধারণ করেছে রিমান্ডে নিয়ে তা জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: শৌচাগারে নারীর ভিডিও ধারণ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ