পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : জলবায়ু পরিবর্তনে বাংলাদেশের ক্ষতিপূরণে সহায়তা না দিয়ে বিশ্বব্যাংক ঋণের মাধ্যমে সুদের ব্যবসা চালানোর কূটকৌশল নিয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন ট্রান্সপারেন্সি ইন্টারন্যাশনাল বাংলাদেশের (টিআইবি) নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান।
গতকাল শুক্রবার ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ কথা বলেন। বাংলাদেশে জলবায়ু ন্যায্যতা ঘোষণা নিয়ে এ সংবাদ সম্মেলন আয়োজন করে টিআইবি, কমিটি অব কনসার্নড সিটিজেন (সিসিসি) এবং উপকূলীয় জীবনযাত্রা ও পরিবেশ কর্মজোট (ক্লিন)।
ইফতেখারুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট বাংলাদেশে এসে বিরাট একটা কৃতিত্ব নিয়ে গেলেন, তারা (বিশ্বব্যাংক) বাংলাদেশকে জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য ২ বিলিয়ন ডলার তহবিল দিবে। বিশ্বব্যাংকের তহবিল কিন্তু বিনা সুদে হয় না। যত স্বল্প সুদেই হোক এটা ঋণের বোঝা বাড়াবে। আমরা যারা ক্ষতিগ্রস্ত তারা এমনিতেই যথেষ্ট ক্ষতি ও ঝুঁকির সম্মুখীন। তাদের ঘাড়ে আবার ঋণের বোঝা চাপিয়ে দেয়া হবে এবং তার মাধ্যমে সুদের ব্যবসা চলবে এটা আমরা একসেপ্ট (গ্রহণ) করতে পারি না। বিশ্বব্যাংকের এ ধরনের কূটকৌশল থেকে দূরে থাকার জন্য আমরা আহ্বান জানান তিনি।
তিনি বলেন, যখন জলবায়ু পরিবর্তন শব্দটি ব্যবহার হয়েছে, শুরু থেকেই বর্তমান ক্ষমতাসীন সরকার অত্যন্ত সক্রিয়ভাবে আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিভিন্ন ইতিবাচক অবদান রেখেছে। যে কারণে আমাদের প্রধানমন্ত্রী সম্মানিত হয়েছেন। আমরা তাকে আর একবার অভিনন্দন জানাই। যেহেতু আমরা পুরস্কৃত হয়েছি, তাই আমাদের দায়ও বেশি। আমরা কী করেছি? বাংলাদেশ সরকার প্রথমবারের মতো জনগণের টাকায় একটা আলাদা তহবিল গঠন করেছিল। সে তহবিলটি এখনো আছে। যদিও অল্প ফান্ড এখনও দেয়া হয়। এটি একটি ইতিবাচক দৃষ্টান্ত স্থাপিত হয়েছিল। এটি মডেল হিসেবে বিভিন্ন দেশে আলোচিত হয়েছে। তিনি বলেন, এই যে ইতিবাচক দৃষ্টান্ত এটি ধরে রাখতে হবে। আমরা দেখছি সম্প্রতি বাজেটে এই তহবিলের প্রতি বিমাতাসুলভ আচরণ করা হচ্ছে। আমরা সরকারের কাছে দাবি জানিয়েছি এ তহবিল যেন অব্যাহত থাকে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমাদের যে নেতিবাচক ও ঝুঁকির পরিস্থিতি তার জন্য আমরা কিন্তু ঋণ নয়, ক্ষতিপূরণ পাব। সে ক্ষতিপূরণটাই যেন আমরা পাই সরকারকে তার চেষ্টা করতে হবে। বিশ্বব্যাংক সত্যিই যদি জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য কোন সহায়তা করতে আগ্রহী হয় তাহলে তারা যেন ক্ষতিপূরণের জায়গায় থাকে, ঋণের ব্যবসায় না নামে। অন্যদিক থেকে যে সমস্ত তহবিল গঠন করা হয়েছে সেই তহবিলে বাংলাদেশের অভিগম্যতা (প্রবেশ) নিশ্চিত করতে বিশ্বব্যাংক টেকনিক্যাল সাপোর্ট দিতে পারে। যেটাকে আমরা স্বাগত জানাব। কিন্তু এখানে ঋণ ব্যবসা চলবে না।
গ্রীন ক্লাইমেট ফান্ডে (সবুজ জলবায়ু তহবিল) অভিগম্যতার ক্ষেত্রে দু’টি প্রতিবন্ধকতা রয়েছে। তহবিলে অভিগম্যতার ক্ষেত্রে এমন কিছু স্ট্যান্ডার্ড বাধ্যতামূলক করা হয়েছে যেগুলো বাংলাদেশের মতো দেশের পক্ষে বাস্তবায়ন করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে এবং দীর্ঘসূত্রতার শিকার হচ্ছে। তাই এ প্রক্রিয়াটি সরলীকরণ করতে হবে।
টিআইবির নির্বাহী পরিচালক বলেন, আমরা যেহেতু জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতিগ্রস্ত দেশ, আমাদের জাতিগতভাবে এমন কোন আচরণ করা উচিত নয় যাতে কোন না কোনভাবে আমরা জলবায়ু পরিবর্তনের জন্য দায়ী দেশ হিসেবে চিহ্নিত হই। কাজেই আমাদের পরিবেশবান্ধব বিষয়টি মাথায় রেখে শিল্প-কারখানা স্থাপনে নজর দিতে হবে।
হাসান মেহেদী লিখিত বক্তব্যে বলেন, বিজ্ঞানীদের মতে উপকূলীয় প্লাবনসহ জলবায়ু পরিবর্তনজনিত অন্যান্য দুর্যোগ এবং প্রথাগত জীবনযাত্রা ধ্বংস হয়ে যাওয়ায় ২০৫০ সাল নাগাদ বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি মানুষ বাস্তবচ্যুত হয়ে যাবে এবং সারা পৃথিবীতে প্রতিবছর প্রায় ৬ লাখ মানুষ বাস্তচ্যুত হচ্ছে। আগামী ৭-১৮ নভেম্বর মরোক্কোর মারাকাশ শহরে অনুষ্ঠিতব্য জাতিসংঘ জলবায়ু পরিবর্তন কর্মকাঠামো সনদের ২২তম জলবায়ু সম্মেলনে (কোপ-২২) অংগ্রহণকারী বাংলাদেশের রাষ্ট্রীয় প্রতিনিধি দল ও বিশ্ব নেতাদের উদ্দেশে সংবাদ সম্মেলন থেকে ১১টি দাবি তুলে ধরা হয়। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলোÑ ২০৫০ সাল নাগাদ পৃথিবীর তাপমাত্রা বৃদ্ধির পরিমাণ গড়ে ১ দশমিক ৫ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে রাখা, জলবায়ু পরিবর্তন খাতে ছদ্মবেশী ঋণ ও শর্তাধীন সহায়তা বন্ধ করা, জলবায়ু পরিবর্তন খাতে কোন অবস্থাতেই ঋণ বা অনুদান নয়, উন্নয়ন সহায়তার অতিরিক্ত ও নতুন ক্ষতিপূরণ বাবদ অনুদানকে স্বীকৃতি দিয়ে জলবায়ু অর্থায়নের সর্বসম্মত সংজ্ঞা নির্ধারণ করা, জাতীয় জলবায়ু তহবিল ব্যবস্থাপনায় নারী, ঝুঁকিপূর্ণ জনগোষ্ঠী ও আদিবাসীদের অংশগ্রহণের অধিকার দিতে হবে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন সিসিসি’র প্রধান অ্যাডভোকেট কুদরত ই খুদা, ক্লিন’র প্রধান নির্বাহী হাসান মেহেদী প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।