পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : পুলিশ ও র্যাবের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সকলকে মিলে মিশে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন। অন্যদিকে র্যাবের মহাপরিচালক (ডিজি) বেনজীর আহমেদ তার বক্তব্যে অনঢ় রয়েছেন। তিনি বলেছেন, আমি যা বলেছি সাক্ষ্যপ্রমাণ দিয়েই বলেছি।
সম্প্রতি পুলিশ ও র্যাবের মধ্যে পারস্পরিক দ্বন্দ্বের বিষয়টি মিডিয়ায় প্রকাশ পায়। গত ২৭ সেপ্টেম্বর র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদের স্বাক্ষর করা পুলিশের বিরুদ্ধে একটি অভিযোগপত্র দেয়া হয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব ড. মো. মোজাম্মেল হক খানের কাছে। ইতালির নাগরিক তাভেল্লা হত্যাকা- প্রসঙ্গে গত ২১ অক্টোবর র্যাব মহাপরিচালক সংবাদ সম্মেলনে জানান, তাভেল্লা হত্যাকা-ের সঙ্গে নব্য জেএমবি জড়িত। অথচ ঢাকা মহানগর পুলিশ বিএনপি নেতা আব্দুল কাইয়ুমসহ সাতজনকে আসামি করে চার্জশীট দিয়েছে। র্যাব প্রধানের বক্তব্যের রেশ কাটতে না কাটতেই গত ২৬ অক্টোবর পুলিশের কাউন্টার টেররিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলাম তাভেল্লা হত্যাকা- প্রসঙ্গে বলেন, আমরা যাদের বিরুদ্ধে চার্জশিট দিয়েছি তা-ই সত্য। র্যাব যাকে নব্য জেএমবির প্রধান বলছে আসলে সে তৃতীয় সারির নেতা। মনিরুল ইসলাম আরো বলেন, ফৌজদারি মামলার তদন্ত হয় সাক্ষ্যপ্রমাণের ভিত্তিতে। সেখানে কারও ক্রিয়েটিভ ওয়ার্কের সুযোগ নেই। এসব পাল্টাপাল্টি বক্তব্য র্যাব ও পুলিশের পারস্পরিক বিরোধকে প্রকাশ্যে নিয়ে আসে। এ প্রসঙ্গে গত বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ শেষে র্যাব মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ বলেন, আমি যা বলেছি তথ্য প্রমাণ দিয়েই বলেছি। এ নিয়ে বিভ্রান্তির কিছু নেই। কাউন্টার টেরোরিজম ইউনিটের প্রধান মনিরুল ইসলামের দিকে তিনি ইঙ্গিত করে আরো বলেন ও আমার জুনিয়র অফিসার। আমার স্নেহের। ওর বিরুদ্ধে কিছু বলতে চাই না।
এদিকে গত বৃহস্পতিবার পুলিশ সদর দপ্তরে ত্রৈমাসিক অপরাধ পর্যালোচনা সভায় পুলিশ-র্যাবের দ্বন্দ্ব নিয়ে দীর্ঘ আলোচনা হয়। সভার প্রথম অধিবেশনে পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) এ কে এম শহীদুল হক বাহিনীর অন্তর্ভুক্ত বিভিন্ন ইউনিটের মধ্যে বিরোধ দেখা দিলে সে বিষয়ে যথাযথ কর্তৃপক্ষকে জানানোর নির্দেশ দিয়েছেন। সভার দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। আইজিপির সভাপতিত্বে দিনব্যাপী এই সভায় র্যাবের ডিজি, সকল পুলিশ কমিশনার, রেঞ্জ ডিআইজি, পুলিশ সুপার, ঢাকাস্থ পুলিশের বিভিন্ন ইউনিটের প্রধান ও পুলিশ সদর দপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল সাংবাদিকদের জানান, পুলিশ ও র্যাবের মধ্যে কোনো বিরোধ নেই। এক ঘরে সংসার করলে কিছুটা ঝামেলা হয়। তার পরও কিছু অভিযোগ আসায় এগুলো সমাধান করা হয়েছে। সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে বলা হয়েছে। তিনি আরো বলেন, সন্ত্রাস দমনে র্যাব ও পুলিশ নিরলস কাজ করছে। বিশেষ করে জঙ্গি নিধনে উভয় সংস্থাই কঠোর পরিশ্রম করছে।
এদিকে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, পুলিশ ও র্যাবের বিরোধ মীমাংসায় পদক্ষেপের অংশ হিসেবে বৃহস্পতিবার বৈঠকের আগে পুলিশ সদর দপ্তর থেকে একটি নির্দেশনা সব কটি রেঞ্জের ডিআইজি, ৬৪ জেলার পুলিশ সুপার ও র্যাব মহাপরিচালকসহ সব কটি ব্যাটালিয়নে পাঠানো হয়েছে। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, র্যাব ও পুলিশ উভয়কে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। কেউ নির্দেশ অমান্য করলে তার বিরুদ্ধে নেয়া হবে কঠোর ব্যবস্থা। অপারেশন বা টহলের সময় কোনো বিরোধ বা ঝগড়াঝাঁটি হলে তাৎক্ষণিক উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাকে অবহিত করতে হবে। তিনি বিষয়টি পুলিশ সদর দপ্তরকে অবহিত করবেন। আবার দুই সংস্থা একই স্থানে অভিযান চালালে এক পক্ষ আরেক পক্ষকে তা আগেভাগে জানাতে হবে।
আইজিপি এ কে এম শহীদুল হক বলেন, র্যাব ও পুলিশ একই পরিবারভুক্ত। আমরা একে অপরের সহায়তায় দেশ থেকে সন্ত্রাস ও জঙ্গিবাদ নির্মূল করার চেষ্টা চালাচ্ছি। আমরা সবাই পুলিশ পরিবারের সদস্য। আমাদের লক্ষ্য এক। আমাদের সুদৃঢ় বন্ধন, সহমর্মিতা ও ভ্রাতৃত্ববোধ থাকতে হবে।
সভা-সংশ্লিষ্ট একটি সূত্র জানায়, পুলিশ সদর দপ্তরে সভায় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জ্যেষ্ঠ সচিব বরাবর পুলিশের বিরুদ্ধে উত্থাপিত ছয়টি অভিযোগের কথা উল্লেখ করেন র্যাবের মহাপরিচালক বেনজীর আহমেদ। তিনি বলেন, র্যাবকে প্রতিপক্ষ ভাবা যাবে না। দুটো অংশের মধ্যে প্রতিযোগিতা থাকতে পারে। তবে তা হতে হবে ন্যায্য ও ইতিবাচক। বিরোধে যাওয়া ঠিক হবে না। পুলিশ বা র্যাবকে আলাদাভাবে দেখলে হবে না। দুটি সংস্থাই সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে কাজ করছে। তিনি আরো বলেন, কোনো বিষয়ে বিবৃতি দেয়ার ক্ষেত্রে পুলিশ ও র্যাবের মধ্যে সমন্বয়হীনতা দেখা দিলে কেউ আর কোনো বাহিনীর কথাই বিশ্বাস করবে না।
বৈঠকে অংশ নেয়া একাধিক কর্মকর্তা বলেন, সভার একটা বড় সময় পুলিশ ও র্যাবের মধ্যকার বিভিন্ন মতভিন্নতা নিয়ে আলোচনা হয়। সম্প্রতি আশুলিয়ায় র্যাবের অভিযানে নিহত সারোয়ার জাহান নব্য জেএমবি’র প্রধান কি না এবং ইতালির নাগরিক সিজার তাভেল্লা হত্যার জন্য কারা দায়ী এ প্রসঙ্গে র্যাব ও পুলিশের কাউন্টার টেররিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিট নিজ নিজ অবস্থানে অনড় ছিল।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।