পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তীব্র শীতে জবুথবু উত্তরাঞ্চলের বিভিন্ন জনপথ। হঠাৎ জেঁকে বসা শীতে চরম বিপাকে পড়েছেন সাধারণ মানুষ। প্রচন্ড ঠান্ডা, ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় দিন-মজুর ও খেটে খাওয়া মানুষ নাকাল হয়ে পড়েছেন। কুয়াশার চাদর ভেদ করে দেরিতে সূর্য উদিত হলেও কমছে না শীতের প্রকোপ।
শীতবস্ত্রের অভাবে শীতের প্রকোপ থেকে মুক্তি পেতে অনেকে খড়কুটো জ্বালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা চালাচ্ছেন। জেঁকে বসা কনকনে শীতে সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে পড়েছে শিশু ও বয়স্করা। ঠান্ডাজনিত নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে তারা। হাসপাতালে বেড়ে চলেছে শিশু ও বয়স্ক রোগীর সংখ্যা। হঠাৎ শীতে শ্রমজীবী মানুষের বেড়েছে চরম দুর্দশা। ঠান্ডর কারণে ঘরের বাইরে বের হতে পারছেন না তারা।
উত্তরের সীমান্ত জেলা দিনাজপুরে গত তিনদিন ধরে সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ১০ থেকে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ওঠানামা করছে। গতকাল শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস।
এদিকে শীত মোকাবেলায় দিনাজপুরে জেলা প্রশাসক ব্যাপক প্রস্তুতি নিয়েছেন। ইতোমধ্যে জেলার ১৩টি উপজেলায় প্রতিটি ইউনিয়নে কম্বল এবং শুকনো খাবারের প্যাকেট পৌঁছে দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন, জেলা প্রশাসক খালেদ মোহাম্মদ জাকী। তিনি জানান, শীত মোকাবেলায় মন্ত্রণালয়ে প্রেরিত চাহিদা পত্রের অর্ধেক শীতবস্ত্র কম্বল ইতোমধ্যে পাওয়া গেছে। এছাড়াও বে-সরকারিভাবেও শীত নিবারণের পর্যাপ্ত শীতবস্ত্র দেয়া হচ্ছে বিভিন্ন এলাকায়। ঘন কুয়াশার কারণে রাস্তায় যানবাহন চালাতে হচ্ছে হেড লাইট জ্বালিয়ে।
এদিকে দিনাজপুর আবহাওয়া অধিদপ্তরের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. তোফাজ্জল হোসেন জানিয়েছেন, দিনাজপুরে আজ শুক্রবার সর্বনিম্ন তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে ১২ ডিগ্রি সেলসিয়াস। বাতাসের আদ্রর্তা ৯৪। ২/৩ দিনে তাপমাত্রা আরো কমবে বলে জানিয়েছেন তিনি। শীতের প্রকোপ থেকে রেহাই পেতে হতদরিদ্র-ছিন্নমূল মানুষ এই মুহূর্তে প্রয়োজনীয় শীতবস্ত্রের দাবি তুলেছেন।
এদিকে বগুড়া ব্যুরো জানায়, গত বৃহস্পতিবার বিকেল থেকে শীতের তীব্রতা বাড়তে শুরু করে। সেইসাথে সন্ধ্যার পর উত্তরের কনকনে হাওয়ায় লোক চলাচল একেবারেই কমে যায়। রাত দশটার পর থেকে ঘন কুয়াশায় অল্প দূরত্বে কিছুই দেখা যায়নি। গতকাল সকাল পর্যন্ত এই অবস্থা বিরাজ করে। তবে দুপুরে অল্প সময়ের জন্য সূর্য দেখা দিলেও বিকেল থেকে শীতের কামড় শুরু হয়। এত করে জীবন যাত্রায় চরম ভোগান্তি পড়ে।
বরিশাল ব্যুরো জানায়, কনকনে ঠাÐার সঙ্গে ঘন কুয়াশা আর হিমেল হাওয়ায় দক্ষিণাঞ্চলে জনজীবনে বিপর্যয় নেমে এসেছে। বোরো বীজতলা কোল্ড ইনজুরিতে আক্রান্ত হচ্ছে। ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে শাক-সবজির গুনগত মান। মাঠে থাকা গোলর আলু লেট বøাইট রোগে আক্রান্তের আশঙ্কা করছে কৃষকরা। গত মাসে নি¤œচাপ ‘জাওয়াদ’এর প্রভাবে বরিশাল কৃষি অঞ্চলে প্রায় ১শ’ কোটি টাকার ফসল বিনষ্ট হয়। ঘন কুয়াশায় বৃহস্পতিবার থেকে দক্ষিণাঞ্চলের নৌ ও আকাশ পরিবহনও ভয়াবহ বিপর্যয়ের কবলে পড়েছে। ফেরি পারাপার বন্ধ থাকায় সড়ক যোগাযোগও বিপর্যস্ত হয়ে পড়ছে। শিশু ও বৃদ্ধরা ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। বরিশাল শের ই বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, জেনারেল হাসপাতালসহ এ অঞ্চলের সবগুলো জেলা ও উপজেলার হাসপাতালে প্রতিদিন শত শত রোগি চিকিৎসকের স্মরনাপন্ন হচ্ছেন। এদের মধ্যে দরিদ্র ও ছিন্নমূল মানুষের সংখ্যাই বেশি।
গত কয়েকদিন ধরে বরিশালে সূর্যের দেখা মিলছে সকাল ১০টার পরে। ঘন কুয়াশায় সকালের দিকে বরিশাল বিমান বন্দরে ফ্লাইট অপারেশন বিঘিœত হচ্ছে। গত বৃহস্পতিবার প্রথম ফ্লাইট প্রায় ৪ ঘণ্টা বিলম্বে বরিশাল বিমান বন্দরের রানওয়ে ষ্পর্শ করেছে। ফলে অপর ফ্লাইটগুলোও কম বেশি বিলম্বিত হওয়ায় দিনভরই আকাশ পথের যাত্রীরা চরম ভোগান্তিতে পড়ছে।
প্রতিদিনই সন্ধ্যা থেকে রাত ১০টার মধ্যে ঢাকা থেকে বরিশাল, ভোলা ও পাটুয়াখালী নদী বন্দরসহ এ অঞ্চলের বিভিন্ন রুটের প্রায় ৭০টি নৌযান অর্ধ লক্ষাধিক যাত্রী নিয়ে রওয়ানা হয়ে মাঝ রাতের পরে মেঘনা ও এর অববাহিকায় ঘন কুয়শায় চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। তবে গন্তব্যে বিলম্বে পৌঁছলেও এখন পর্যন্ত কোন ধরনের অঘটন ছাড়াই নৌযানগুলো নিরাপদে পৌঁছেছে।
বরিশালÑভোলাÑচট্টগ্রাম মহাসড়কের লাহারহাট ও ইলিশা সেক্টরের ফেরিগুলোও মধ্যরাতের পরে বন্ধ হয়ে যাচ্ছে। বরিশাল ও খুলনার মধ্যবর্তী বেকুঠিয়া ফেরিও প্রায় প্রতিদিনই শেষ রাত থেকে কয়েক ঘন্টা বন্ধ থাকছে।
আবহাওয়া বিভাগ থেকে বরিশাল অঞ্চলে মেঘলা আকাশসহ শুষ্ক আবহাওয়া অব্যাহত থাকার কথা জানিয়ে মধ্যরাত থেকে সকাল পর্যন্ত মাঝারি থেকে ঘন কুয়াশার কথা বলা হয়েছে। তবে তা কোন কোন স্থানে কুয়াশা দুপুর পর্যন্ত অব্যাহত থাকতে পারে বলে জানিয়ে রাতের তাপমাত্রা সামান্য বৃদ্ধির সুখবর দেয়া হলেও দিনের তাপমাত্রা হ্রাসের কথাও বলা হয়েছে। চলতি মাসে বরিশালে সর্বনিম্ন স্বাভাবিক তাপমাত্রা থাকার কথা ১১.৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।