Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ১৪ মে ২০২৪, ৩১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৫ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

ভারতকে সীমান্ত হত্যা বন্ধে চাপ দিতে হবে

ফেলানি স্মরণে আলোচনা সভায় বক্তাদের দাবি

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ৮ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০১ এএম

জাতীয় মানবাধিকার সমিতি : সীমান্তে ফেলানি হত্যাকান্ডের ১১ বছর পূর্তিতে গতকাল বিভিন্ন রাজনৈতিক দল ও সংগঠন হত্যাকান্ডে বিচারের দাবি জানিয়েছে। তারা ভারতের ওপর চাপ প্রয়োগের দাবি জানান। দলগুলো দীর্ঘদিনে ফেলানি হত্যার বিচার সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে না পারার পেছনে সরকারের ক‚টনৈতিক দুর্বলতা বহুলাংশে দায়ী বলে মন্তব্য করেছে। গতকাল ২০ দলীয় জোটের শরীক জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি (জাগপা) বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি ও গণদল পৃথক পৃথকভাবে এ দাবি জানান।
গতকাল শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টনের যাদু মিয়া মিলনায়তনে ‘৭ জানুয়ারি শহীদ ফেলানি দিবস স্মরণে’ বাংলাদেশ জাতীয় মানবাধিকার সমিতি আয়োজিত আলোচনা সভা বাংলাদেশ ন্যাপের মহাসচিব এম গোলাম মোস্তফা ভ‚ঁইয়া বলেছেন, সমন্বিত উদ্যোগেই সীমান্ত হত্যা বন্ধ করতে হবে। এ বিষয়টি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের গুরুত্বের সঙ্গে দেখা উচিত। ফেলানি হত্যার ফলে বাংলাদেশে এবং ভারতেরও বিভিন্ন মহলে ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছিল। আন্তর্জাতিক সংবাদ মাধ্যমে ফলাও করে প্রচার হয় ফেলানির ঝুলন্ত লাশের ছবি। দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া ও ন্যায়বিচারের দাবি থাকলেও সে বিচার আজও সমাপ্ত হয়নি। ফেলানির পরিবারকে ক্ষতিপূরণ দেওয়ার জন্য ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশনের নির্দেশও আমলে নেওয়া হয়নি। যা অত্যান্ত দুঃখজনক।
সংগঠনের চেয়ারম্যান মো. মঞ্জুর হোসেন ঈসার সভাপতিত্বে আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন সৈয়দ হারুন-অর-রশিদ, মো. মহসীন ভ‚ঁইয়া, মিতা রহমান, এইচ এম বিল্লাল হোসেন রাজু, মো. মঞ্জুরুল ইসলাম কাজল, মায়াবী কাজল, এ এইচ এম রায়হান প্রমুখ।
গণদল : গণদলের চেয়ারম্যান এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী বলেছেন, ফেলানি হত্যার ঘটনা এবং সীমান্তে একের পর এক হত্যাকাÐ প্রমাণ দেয় ভারত আমাদের সঙ্গে কেমন আচরণ করছে। অথচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী দাবি করেন ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যেকার সম্পর্ক স্বামী-স্ত্রীর। কেউ কেউ দাবি করেন দুই দেশের মধ্যে রক্তের সম্পর্ক। অথচ ২০১১ সালে কুড়িগ্রামে ফুলবাড়ী সীমান্তে বিনা উস্কানীতে বিএসএফ ফেলানিকে হত্যা করে তারের মধ্যে ঝুলিয়ে রেখেছিল। দীর্ঘদিনেও বিচার হয়নি। গতকাল দলের এক আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জাগপা : ২০ দলীয় জোটের শীর্ষ নেতা, জাগপা সভাপতি, বীর মুক্তিযোদ্ধা খন্দকার লুৎফর বলেন, দেশ এখন ভয়াবহ ক্রান্তিকাল অতিক্রম করছে। দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব, পতাকাÐমানচিত্র, গণতন্ত্র হুমকিসহ জনগণ নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছে। প্রতিবেশী ভারতের অব্যাহত আগ্রাসনের কারণে বাংলাদেশ একটা ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিণতির দিকে ধাবিত হচ্ছে। গতকাল শুক্রবার নয়াপল্টনের দলীয় কার্যালয়ে ‘৭ জানুয়ারী শহীদ ফেলানি দিবস স্মরণে’ জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি-জাগপা আয়োজিত আলোচনাসভায় সভাপতির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন। তিনি বলেন, সীমান্তে ফেলানির লাশ ঝুলিয়ে রাখা মানে হলো বাংলাদেশকে ঝুলিয়ে রাখা। ক্ষমতার প্রতিযোগিতায় আজ দেশের রাজনৈতিক শক্তি-ব্যক্তি-গোষ্ঠী ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হচ্ছে না।
সভায় আরো আলোচনায় অংশগ্রহণ করেন, জাগপা যুগ্ম সম্পাদক ডা. আওলাদ হোসেন শিল্পী, যুব জাগপা সভাপতি মীর আমীর হোসেন আমু, মো. দুলাল হোসেন, বিল্লাল হোসেন রাজু, এম আজিজুর রহমান প্রমুখ।
লেবার পার্টি
বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান মেজর (অব.) হাফিজ উদ্দিন আহমেদ বলেছেন, সরকারের নতজানু পররাষ্ট্রনীতির কারণে সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিক হত্যা বন্ধ হচ্ছে না। আমরা চাই না আর কোনো ফেলানি কাঁটাতারে ঝুলে থাকুক। সীমান্তে বাংলাদেশি নাগরিকের মৃত্যু আমরা দেখতে চাই না। আমাদেরকে শক্তি অর্জন করতে হবে। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ করার মাধ্যমে জাতীয়তাবাদী সরকার প্রতিষ্ঠা করে জনগণের মৌলিক অধিকার ফিরিয়ে দিয়ে এই ফেলানিদের আগামী দিনে রক্ষা করব। গতকাল শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে ৭ জানুয়ারি ফেলানি হত্যা দিবসে প্রেসক্লাবে বাংলাদেশ লেবার পার্টির উদ্যোগে কনভেনশনে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন। মানবাধিকার সংরক্ষণ সংস্থার নির্বাহী পরিচালক অ্যাডভোকেট জহুরা খাতুন জুঁই মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। মেজর অব. হাফিজ উদ্দিন আহমদ বলেন, আজকে প্রত্যেকটি প্রতিষ্ঠানকে ধ্বংস করে দেয়া হয়েছে। বিচার বিভাগের স্বাধীনতা নেই, প্রধান বিচারপতিকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হয়েছে। বর্তমান সরকারকে সরাতে যে আন্দোলন বিএনপি করছে তাতে টানেলের শেষ প্রান্তে আলোর রেখা দেখতে পাচ্ছি। এই সরকারের আয়ু বেশি দিন নেই।
দলের সভাপতি ডা. মোস্তাফিজুর রহমান ইরানের সভাপতিত্বে এতে আরো বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির (জাফর) চেয়ারম্যান মোস্তফা জামাল হায়দার, খ্রিস্টান এসোসিয়েশনের সভাপতি অ্যালবার্ট ডি কস্টা, লেবার পার্টির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব ফারুক রহমান, ভাইস চেয়ারম্যান মোসলেহ উদ্দিন, রামকৃষ্ণ সাহা, বিএনপির প্রান্তিক বিষয়কসম্পাদক অর্পনা রায় দাস, মুক্তিযোদ্ধা দলের যুগ্ম সম্পাদক শহীদুল ইসলাম চৌধুরী মিলন, লেবার পার্টির যুগ্ম মহাসচিব আবদুর রহমান খোকন, হুমায়ুন কবীর, আন্তর্জাতিক সম্পাদক খোন্দকার মিরাজুল ইসলাম, দেশ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কে এম রকিবুল ইসলাম রিপন, মহানগর শ্রমিকদলের সম্পাদক মাহবুবুল আলম বাদল, দৈনিক সরকার সম্পাদক ওবায়দুল হক, ছাত্রমিশন সভাপতি সৈয়দ মো. মিলন ও সাধারণ সম্পাদক শরিফুল ইসলাম।

 



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ফেলানি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ