পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ঢাকার ধামরাইয়ে সরিষা ফুলের মধু সংগ্রহে ব্যস্ত মৌ-খামারিরা। দৃষ্টি যত দূরে যায় শুধু সবুজের মধ্যে হলুদ ফুল। সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত সরিষা ক্ষেতে মৌমাছির গুন গুন শব্দ ভেসে বেড়ায়। ফুলে ফুলে ঘুরে ক্ষেতের পাশে সাজিয়ে রাখা বক্সে এসে বসে আবার উড়ে যায় ফুলের কাছে। সরিষা ক্ষেতে উড়ে বেড়াচ্ছে লাখ লাখ মৌমাছি।
চিকিৎসকরা বলছেন, সরিষা ফুলের সাদা মধুতে গøুকোজ ও ফ্রুকটোজ নামক দুই ধরনের সুগার থাকে। এছাড়াও সুক্রোজ ও মালটোজও খুব অল্প পরিমাণে রয়েছে। মধুর শর্করার ঘনত্ব এত বেশি যে এর মধ্যে কোন জীবাণু ১ ঘণ্টাও বাঁচতে পারে না।
সব বয়সের মানুষ সরিষা ফুলের মধু খেতে পারেন। এতে কোনো ক্ষতি নেই। আর সরিষা ফুলের মধুতে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ভিটামিন এ, বি, সি। এই মধু একেবারেই কোলেস্টেরলমুক্ত। বিশেষ করে মধু রোগ প্রতিরোধ শক্তি বৃদ্ধি, হার্ট শক্তিশালী, কোষ্ঠকাঠিন্য ও অনিদ্রা দূর করে। শারীরিক দুর্বলতা দূরসহ পাকস্থলি সুস্থ রাখে।
অনেক ওষুধি গুণের এ মধু অক্লান্ত পরিশ্রমের মাধ্যমেই সরিষা ফুলসহ অন্যান্য সময়ে কালোজিরা ফুল, লিচু ও গুজি তেলের ফুল থেকে মৌমাছি দিয়ে মধু সংগ্রহ করে অনেকেই স্বাবলম্বী হয়েছেন। ধামরাই উপজেলার আশুলিয়া গ্রামের হাজী মো. রিয়াজ উদ্দিনের ছেলে ইঞ্জিনিয়ার মো. মামুন উর রশিদ বলেন, তার বড় ভাই আইয়ুব আলী দেড় যুগ আগে মৌ-চাষ শুরু করেন। ভাইয়ের মৃত্যুর পর তিনি নিজেই দেখাশুনা করেন। তিনি জানান, বর্তমানে মৌ খামারে ২০০টি মৌ বক্স রয়েছে। প্রতিটি বক্স থেকে সরিষা ফুলের সময়ে প্রায় ১০ কেজি করে মধু সংগ্রহ করা যায়। প্রায় ১৮ বছর ধরে তারা মৌমাছি থেকে মধু সংগ্রহ করছেন। লেখাপড়ার পাশাপাশি মৌমাছি পালন ও মধু সংগ্রহ করে তাদের পরিবার স্বাবলম্বী।
মধু সংগ্রহ করতে আসা সাতক্ষীরা জেলার শ্যামনগর উপজেলার বেতখালী উত্তরপাড়া গ্রামের আব্দুল কালাম আজাদ জানান, তারা একই পরিবারের ৫ জন এসেছেন ধামরাই উপজেলার দেপাশাই গ্রামের পাশে সরিষা ক্ষেতে। তারা সরিষা ফুলের কাছে ২৫০টি মৌ বাক্স বসিয়েছেন। তাদের টার্গেট তিন সপ্তাহে প্রায় ৩০ মন মধু সংগ্রহ করা। এরপর ধামরাই থেকে তারা ফিরে যাবেন ফরিদপুর অঞ্চলে কালোজিরা ফুলের মধু সংগ্রহ করতে। বছরে ৬ মাস চলে এ মধু সংগ্রহ। বাকি সময় নিজ খরচে মৌমাছিদের লালনপালন করতে হয়।
সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহে ইতোমধ্যে দেশের বিভিন্ন স্থানের ২০ থেকে ২৫ মৌচাষি ও এনজিও ধামরাইয়ে অবস্থান করছে। তারা গত বছরের মধ্য ডিসেম্বর থেকে ধামরাই সদর, ভাড়ারিয়া, মহিশাষী, বঙ্গবাজার, বেলিশ্বর ও কুল্লা ইউনিয়নে মৌ বাক্স বসিয়ে মধু সংগ্রহ করছে। এসব এলাকা থেকে প্রতিবছর প্রায় কোটি টাকার মধু সংগ্রহ করে অনেক বেকার যুবক স্বাবলম্বী হয়েছেন।
ধামরাই উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আরিফুল হাসান ইনকিলাবকে বলেন, প্রতিবছরের মতো এবারও দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে মৌ চাষিরা ধামরাইয়ে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করে লাখ লাখ টাকা উপার্জন করছেন। আর মৌমাছি দিয়ে সরিষা ফুল থেকে মধু সংগ্রহ করলে সরিষার ফলনও ভালো হয়। তিনি বলছেন, চলতি বছরে ধামরাইয়ে সরিষার বাম্পার ফলন হবে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।