পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
সরকারি আলিয়া মাদরাসার ছাত্রাবাসের (হল) সুপারের ভবন এবং ছাত্রাবাসের গেইট অপসারণ করে ভবন নির্মাণ করতে চায় মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। শিক্ষার্থীরা এর প্রতিবাদ এবং সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবিতে আন্দোলন করলে হঠাৎ করেই ৬ ঘণ্টার নোটিশে দুটি হল বন্ধ করে দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে হল সুপার। মাদরাসা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করেই গতকাল বুধবার রাত পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছিলেন শিক্ষার্থীরা। হলের জায়গার পরিবর্তে খেলার মাঠের খালি জায়গায় অধিদপ্তরের ভবন নির্মাণের বিকল্প প্রস্তাবও দিয়েছেন তারা। এদিকে হঠাৎ করে ৬ ঘণ্টার নোটিশে হল ছাড়ার নোটিশ দেয়ায় বিপাকে পড়েছেন শিক্ষার্থীরা। বিশেষ করে আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে ফাজিল প্রথম বর্ষ, দ্বিতীয় বর্ষ ও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে, যাদের এই পরীক্ষা রয়েছে তারা পড়েছেন সবচেয়ে বেশি দুর্ভোগে।
জানা যায়, মাদরাসা শিক্ষার ঐতিহ্যবাহী প্রতিষ্ঠান সরকারি মাদরাসা-ই-আলিয়ার আল্লামা কাশগরী (রহ.) হলের সুপার ও সহকারী সুপারের বাসভবন এবং আল্লামা কাশগরী ও ইব্রাহীম হলের প্রবেশ গেইট অপসারণ করে সে স্থানে ভবন নির্মাণ করতে চায় মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তর। গত ডিসেম্বর মাসের শুরু থেকেই এই পরিকল্পনার কথা জানানো হয়। শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ করলে তাদের বিরুদ্ধে একটি মামলাও করা হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। তারা জানায়, ভবন নির্মাণের অপচেষ্টা শুরুর পর থেকেই তারা প্রতিবাদ জানিয়ে আসছেন, এজন্য অধিদপ্তরের সচিব তাদেরকে ভয়-ভীতি দেখাচ্ছেন, একটি মামলাও করা হয়েছে। সম্প্রতি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক সেখানে উপস্থিত হয়ে শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেছেন, ভবন হবে, সকলকে সহযোগিতা করার জন্য।
এরপর শিক্ষার্থীরা গত সোমবার আবারও আন্দোলন শুরু করেন এবং আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মো. আলমগীর রহমানের কাছে জানতে চান হলের জায়গায় কেন অধিদপ্তরের ভবন নির্মাণ করা হবে? ওইদিন তাদেরকে আশ্বস্ত করা হয় সেখানে ভবন নির্মাণ করা হবে না। ফলে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন বন্ধ করে দেন। কিন্তু গতকাল বুধবার সকাল ১০টার সময় হঠাৎ করেই দুটি হলের নোটিশ বোর্ডে একই দিন বিকেল ৪টার মধ্যে শিক্ষার্থীদেরকে হল ছেড়ে দেয়ার নির্দেশ দেয়া হয়।
মাদরাসা প্রশাসনের এই সিদ্ধান্তের পর ফের আন্দোলন শুরু করেন হল দুটির শিক্ষার্থীরা। আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী জুবায়ের বলেন, হঠাৎ করেই হল ছাড়ার সিদ্ধান্তে শিক্ষার্থীরা বিপাকে পড়েছেন। আর আগামী ১৬ জানুয়ারি থেকে ফাজিল প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় বর্ষের পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। ফলে পরীক্ষার্থীরা কোথায় যাবে?
অধিদপ্তরের ভবন নির্মাণের বিষয়ে তিনি বলেন, আমাদের হল সুপার ও সহকারী সুপারের ভবন ও গেইটের জায়গায় কেন অধিদপ্তরের ভবন নির্মাণ করতে হবে? খেলার মাঠে অনেক পরিত্যক্ত জায়গা রয়েছে আমরা সেখানে ভবন নির্মাণের দাবি জানাচ্ছি।
জুবায়ের জানান, আন্দোলনের মুখে গতকাল রাতে আগের সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করে যাদের পরীক্ষা রয়েছে তাদের ছাড়া অন্যদের হল ছাড়ার নির্দেশ দেয়া হয় মৌখিকভাবে।
রাকিব নামে এক শিক্ষার্থী বলেন, আমরা হলের জায়গায় অন্য ভবন নির্মাণ করতে দিব না। সকল শিক্ষার্থীরা চারটি দাবিতে আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলেও তিনি জানান। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে- হল বন্ধ করার যে সিদ্ধান্ত দেয়া হয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। যাদের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে তা প্রত্যাহার করতে হবে। প্রায় ১০ হাজার শিক্ষার্থীর জন্য সাড়ে ৩শ’ এর জন্য আবাসন ব্যবস্থা আছে। শিক্ষার্থীদের আবাসন সঙ্কট নিরসনের জন্য নতুন হল নির্মাণ করতে হবে। খেলার মাঠে মাদরাসা অধিদপ্তর ভবন নির্মাণ করতে হবে।
এ বিষয়ে কথা বলার জন্য আলিয়া মাদরাসার প্রিন্সিপাল মো. আলমগীর রহমানকে ফোন দিলে তিনি রিসিভ করেননি। তবে শিক্ষার্থীদের তিনি বলেন, সচিবের অর্ডার এখানে আমার করার কিছু নেই।
মাদরাসা শিক্ষা অধিদপ্তরের মহাপরিচালক কে এম রুহুল আমীনকেও একাধিকবার ফোন দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।