Inqilab Logo

শনিবার, ২৯ জুন ২০২৪, ১৫ আষাঢ় ১৪৩১, ২২ যিলহজ ১৪৪৫ হিজরী

রোড ডিভাইডারে বাড়ছে দুর্ঘটনা

চালকদের অসচেতনতা

একলাছ হক : | প্রকাশের সময় : ৩ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০২ এএম

রাজধানীর সড়কে যানজট ও অধিক গণপরিবহনের কারণে অল্প গতিতেই চলতে হয় যানবাহন। কম গতিতে চলতে গিয়েও রোড ডিভাইডারে ঘটছে দুর্ঘটনা। গত কয়েকদিনে একাধিক স্থানে রোড ডিভাইডারে দুর্ঘটনার ঘটনা ঘটেছে। চালকদের অবহেলা ও অসচেতনতার কারণে এ দুর্ঘটনা ঘটছে বলে জানা যায়। গণপরিবহনের চালকরা ড্রাইভিং সিটে বসে বেপরোয়া গাড়ি চালানোর কারণে এমন ঘটনা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
নিরাপদ সড়ক ব্যবস্থার জন্য দেয়া হয় রোড ডিভাইডার। কিন্তু এই রোড ডিভাইডার এখন রূপ নিয়েছে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে। রাজধানীর গুলিস্তান এলাকায় মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রোড ডিভাইডারের ওপর উঠে গেছে একটি বাস। এ ঘটনায় এক পথচারী নিহত হয়েছেন। আহত হয়েছেন তিনজন। গত ৩০ ডিসেম্বর বিকালে মেয়র হানিফ ফ্লাইওভারের নিচে ট্রেস সেন্টারের সামনে এ দুর্ঘটনা ঘটে। শ্রাবণ পরিবহনের একটি বাস নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে রোড ডিভাইডারের ওপর ওঠে যায়।
রাজধানীর বিভিন্ন রাস্তায় ডিভাইডারের কারণে প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটছে। বিশেষ করে রাস্তায় নতুন চালক ও রাতের বেলা চালকরা বেশি দুর্ঘটনায় পড়ছেন। ডিভাইডারটি উঁচু করে দেয়া ও এর মাথায় ক্যাটস আই বাতি স্থাপন করে দুর্ঘটনা হ্রাস করা সম্ভব বলে সংশ্লিষ্টরা জানান। তবে অনেকে স্থানেই দেখা যায় দিক নির্দেশনার চিহৃ ও বাতিগুলো ভেঙে ফেরা হয়েছে। কাছাকাছি না যাওয়া পর্যন্ত কোনো গাড়ির চালকই দূর থেকে বুঝতে পারেন না যে, সেখানে কোনো ডিভাইডার আছে। চালকদের এমন সমস্যা বিশেষ করে রাতের বেলায় বেশি হয়।
এর আগে গত ২৮ ডিসেম্বর রাজধানীর খিলক্ষেত এলাকায় রোড ডিভাইডার ভেঙে অপর পাশে থাকা মাইক্রোর ওপর উঠে পড়েছে এনা পরিবহনের একটি যাত্রীবাহী বাস। সকাল সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা ময়মনসিংহ সড়কের লা মেরিডিয়ান হোটেলের পাশে এই দুর্ঘটনা ঘটে। এতে মাইক্রোবাসটির চালক আহত হয়েছেন।
রাজধানীর কোন কোন রোড ডিভাইডারে বাঁশের খুঁটির মধ্যে কাঁটাতারের বেড়া স্থাপন করেছে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশন। নিরাপদ সড়ক নিশ্চিত করতে এমন উদ্যোগ নেয়া হয় বলে জানিয়েছে সিটি করপোরেশন। কিন্তু দুর্ঘটনা রোগে স্থাপিত এসব কাঁটাতার বেড়া কোন কাজে আসছে না।
জানা গেছে, নিরাপদ সড়কের দাবিতে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের পর ঢাকার সড়কে ঝুঁকি নিয়ে সড়ক বিভাজক টপকে রাস্তা পারাপার বন্ধ করতে উদ্যোগ নেয়া হয়। প্রথমবারের মতো তখন বিমানবন্দর সড়কে ডিভাইডারের ওপর দুই থেকে আড়াই ফুট উঁচু বেড়া দেয়া হয়। এই বেড়ার ওপরের অংশ ধারালো রাখা হয়েছে। ফলে ডিভাইডার টপকে রাস্তা পারাপার সম্ভব হবে না।
পরিবহন বিশেষজ্ঞরা বলেন, সড়কে লোকজনের নিরাপত্তার জন্য রোড ডিভাইডার দেয়া হয়। যারা রাস্তার ওপর কোনটা লাগানো উচিৎ, কোনটা উচিৎ নয় সেটা নিয়ে ভাববে, গবেষণা করবে। রোড ডিভাইডাগুরো যেন দুর্ঘটনা কমাতে পারে সেদিকে লক্ষ রাখতে হবে। কিন্তু দেখা যায় সেইসব রোড ডিভাইডারে দুর্ঘটনা হচ্ছে। এগুলোর আধুনিকভাবে রক্ষণাবেক্ষণ করা উচিত। যাতে জনগণের নিরাপত্তার নিশ্চিত হয়। নগরীর বেশ কিছু এলাকা পরিদর্শন করে দেখা গেছে, যেসব সড়কে কাঁটাতার দিয়ে ব্যারিকেড দেয়া হয়েছে সেসব স্থানের অধিকাংশ এলাকায় তা ভেঙে গেছে। কোথাও কোথাও কাঁটাতার ছিঁড়ে সড়কের ওপরেও পড়ে রয়েছে। এতে কাঁটাতারের সঙ্গে পেঁচিয়ে দুর্ঘটনা শিকার হচ্ছেন পথচারী ও যাত্রীরা।
আবুল কাশেম নামের এক বাস যাত্রী বলেন, গত কয়েকদিনে বিভিন্ন জায়গায় রোড ডিভাইডারে বাস উঠে কয়েকজন নিহত হয়েছে। যাত্রীরা কোন জায়গায়ই নিরাপদ নয়। সড়ক দুর্ঘটনায়ও মরছে, বাসের ধাক্কায়ও মরছে। আমরা এর পতিকার চাই। গাড়ির চালকদের আরও সচেতন হয়ে চালাতে হবে।
রশিদ নামের এক চালক জানান, সড়ক দিয়ে যারা চলাচল করার সময় রোড ডিভাইডার অনেক সময় রাতে দেখা যায় না। যদি গাড়ি কিছুটা দ্রুতগতিতে থাকে তাহলে তো ডিভাইডারের উপরে ওঠানো ছাড়া কোনো উপায়ও নেই। এ রকম ঘটনা ঘটেছেও বহুবার। হঠাৎ করে যখন সামনে ডিভাইডার দেখা যায় তখন বাঁয়ে বা ডানে চাপতে গিয়ে অনেক সময় দুর্ঘটনা ঘটে। কোথাও সাইন বোর্ড নজরে পড়লেও সহজে বুঝা যায়না যে সামনে ডিভাইডারটি আছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: চালকদের অসচেতনতা
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ