Inqilab Logo

মঙ্গলবার, ০৯ জুলাই ২০২৪, ২৫ আষাঢ় ১৪৩১, ০২ মুহাররম ১৪৪৬ হিজরী

‘গঙ্গা ব্যারাজ’ নির্মাণ : ভারতীয় অংশে সমীক্ষার প্রস্তাবে সম্মত বাংলাদেশ

প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

সাখাওয়াত হোসেন বাদশা : স্বপ্নের ‘গঙ্গা ব্যারাজ’ নির্মাণের পূর্বে ভারত তার অংশে সমীক্ষা চালানোর প্রস্তাব দিয়েছে। ভারতের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, এরকম একটি ম্যাগা প্রকল্পের কাজ শুরুর আগে উভয় দেশের সংশ্লিষ্ট এলাকাগুলোর ওপর সমীক্ষা চালানোটা অপরিহার্য। বাংলাদেশ যেহেতু শুধুমাত্র তার অংশেই সমীক্ষা চালিয়েছে, সেহেতু ভারতীয় অংশেও সমীক্ষা চালানো প্রয়োজন। তাহলে প্রকৃত অবস্থা উঠে আসবে এবং এরই আলোকে উভয় দেশ গঙ্গা ব্যারাজ নির্মাণের ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ নিতে পারবে। ভারত আরও জানিয়েছে, আমরা চাই গঙ্গা ব্যারাজের কাজ দ্রুত শুরু হোক। যাতে করে এই প্রকল্পে থেকে বাংলাদেশ ও ভারত উভয় দেশই লাভবান হতে পারে। ভারতের এই প্রস্তাবের প্রেক্ষিতে উভয় দেশ একটি কারিগরী কমিটি গঠনে সম্মত হয়েছে। আগামী তিন মাসের মধ্যে এই কারিগরী কমিটি প্রকল্প এলাকার যে অংশে ভারতের সীমানা পড়েছে ওইসব অংশে সমীক্ষা চালাবে এবং এই সমীক্ষার তথ্য-উপাত্ত গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পের মূল মডেলের সাথে অন্তর্ভুক্ত করবে।
চারদিনের সফরে ঢাকা আসা ভারতের প্রতিনিধি দলের সাথে গতকাল (বৃহস্পতিবার) রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় অনুষ্ঠিত আলোচনায় বাংলাদেশ ও ভারত এসব ব্যাপারে একমত হয় এবং আলোচনা শেষে উভয় পক্ষ যৌথ কার্যবিবরণীতে স্বাক্ষর করেন। ভারতের পক্ষে যৌথ কার্যবিবরণীতে সই করেন প্রতিনিধি দলের প্রধান সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের পরিচালক ও প্রধান প্রকৌশলী (এইচএসও) মি. ভুপাল সিং। অপরদিকে, বাংলাদেশের পক্ষে সই করেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবদুল হাই বাকী।
এরপর বিকাল ৪টায় উভয় দেশের কারিগরি কমিটি পানি উন্নয়ন বোর্ডের সভাকক্ষে পানি সম্পদ মন্ত্রী ব্যারিস্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ ও প্রতিমন্ত্রী নজরুল ইসলামের সাথে সৌজন্য বৈঠক করেন। সন্ধ্যা ৬টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উভয় দেশের কারিগরি কমিটি প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান খানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাৎ করেছেন। আজ শুক্রবার সকালের ভারতীয় প্রতিনিধি দলটিা কলকাতার উদ্দেশ্যে ঢাকা ছাড়বেন।
আলোচনায় বাংলাদেশ জানায়, ভারত বিভিন্ন সময় দ্বিপক্ষীয় বৈঠকে জানিয়েছেÑ ত্রিশ বছর মেয়াদি গঙ্গা চুক্তি অনুযায়ী প্রাপ্ত পানি বাংলাদেশ ধরে রাখতে পারছে না। ভারত হতে প্রবাহিত পানি সাগরে পতিত হচ্ছে। এ লক্ষ্যেই বাংলাদেশ গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্প গ্রহণ করেছে এবং এই প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে উভয় দেশের ভূগর্ভস্থ পানি রিচার্জ হবে।
ভারতের প্রতিনিধি দলটি ২৪ অক্টোবর সন্ধ্যাায় ঢাকায় আসেন। এদিনই তারা ফরিদপুর নদী গবেষণা ইনস্টিটিউটে চলে যান। মঙ্গলবার তারা গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পের মডেল দেখে অভিভূত হন। সেখানে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পের মডেল উপস্থাপন, কম্পিউটারে উপস্থাপিত-এর বিভিন্ন ডাটা, তথ্য উপাত্ত ও ডিজাইন তুলে ধরা হয়। এরপর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্প নিয়ে ভারতের আর কোন অনুসন্ধান আছে কীনা? জবাবে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের আর কোন প্রশ্ন নেই।
বুধবার সফররত ভারতের প্রতিনিধি দলকে পাংশায় প্রস্তাবিত গঙ্গা ব্যারাজ নির্মাণ এলাকা, গড়াইয়ের উৎসমুখ ও হার্ডিঞ্জ ব্রিজ এলাকা ঘুরিয়ে দেখানো হয়। এসব এলাকা পরিদর্শনের পর ভারতের প্রতিনিধিদল অনেকটাই সন্তুষ্টি প্রকাশ করেন এবং বলেন যে, বাংলাদেশের গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্প ভারতের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দেবে না।
সূত্র মতে, পাংশায় যেখানে এই ব্যারাজ নির্মাণ করা হবে ওই স্থানটি ভারতের প্রতিনিধি দল এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে নৌকায় ঘুরে ঘুরে দেখেছেন। তারা গড়াই নদীর উৎসমুখ যেখানে পদ্মায় মিশেছে সেই জায়গাটিও ঘুরে দেখেন। এরপর ঊনিশ শতকে নির্মিত হার্ডিঞ্জ ব্রিজ ঘুরে দেখেন। এখানে পদ্মার প্রস্থ কত তা জানতে চান এবং গঙ্গা ব্যারাজ হলে এই প্রস্থ বেড়ে কত হবে তাও জেনেছেন। বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল তাদেরকে জানান, হার্ডিঞ্জ ব্রিজের এপার থেকে ওপারে পদ্মা নদীর প্রস্থ ১ দশমিক ৮ কিলেমিটার। গঙ্গা ব্যারাজ হলে এই প্রস্থ বেড়ে ২ দশমিক ২ কিলোমিটার হবে। এতে করে পদ্মার পানি কোন ধরনের বাঁধা ছাড়াই স্বাভাবিক গতিতেই চলবে।
জানা যায়, গত দুই বছরে এই প্রকল্প নিয়ে চার দফা চিঠি দিয়ে ১৯টি বিষয় জানতে চেয়েছে ভারত। যার মধ্যে অন্যতম হচ্ছেÑ গঙ্গা ব্যারাজের কারণে ভারতের বিভিন্ন অংশে ভাঙন দেখা দেবে কীনা। ভারত মনে করে, বর্ষা মৌসুমে বাংলাদেশ পানি আটকিয়ে রেখে শুষ্ক মৌসুমে ছাড়লে যে ‘ব্যাক ফ্লো’ হবে- তাতে ভারতীয় অংশে ভাঙন দেখা দেবে।
গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পে পদ্মার ডান তীরে ভাটিতে জালেঙ্গি থেকে উজানে ধুলিয়ান পর্যন্ত কিছু কিছু জায়গায় ভারতের সীমানা রয়েছে। সেখানে মাঝে মাঝে পদ্মার বুকে ভারতীয় অংশে চর রয়েছে। এসব চরাঞ্চলে বসতি গড়ে উঠেছে। ভারত বাংলাদেশের কাছে জানতে চেয়েছে গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে এসব চর ডুবে যাবে কীনা এবং পদ্মার ডান তীরে ভারতীয় অংশ ভাঙনের কবলে পড়বে কীনা। এছাড়াও পানি ‘ব্যাক ফ্লো’ হয়ে ভারতের এসব অংশে ভাঙন ধরাবে কীনা এসব বিষয়ও ভারত জানতে চায়। বাংলাদেশ ভারতের এসব পর্যবেক্ষণের জবাব দিয়েছে।
জানা যায়, ভারত চার দফা চিঠির মাধ্যমে ১৯টি কোয়ারি দিয়েছিল। যার সবগুলোরই জবাব দিয়েছে বাংলাদেশ। ওইসব জবাবে ভারতকে বাংলাদেশ আশ্বস্ত করেছে যে, তাদের শঙ্কার কোন কারণ নেই। পানি ব্যাক ফ্লো হয়ে ২০০ কিলোমিটার দূরে যেয়ে ভারতীয় অংশে ভাঙন ধরানোর কোন প্রশ্নই আসে না। বরং এই প্রকল্প থেকে ভারত লাভবান হবে। তাছাড়া জালেঙ্গি থেকে ধুলিয়ান পর্যন্ত যে সব পয়েন্টে ভারত ভাঙনের আশঙ্কা করেছে তা কোনভাবেই ভাঙবে না। আর ওই সব পয়েন্ট অনেক উঁচু। যেসব চরাঞ্চল ডুবে যাওয়ার কথা বলা হয়েছে- সেসব চরও অনেক উঁচু। শুষ্ক মৌসুমে পানির লেভেল এসব চরের অনেক নিচে থাকবে।
বরং গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে শুষ্ক মৌসুমে জালেঙ্গি থেকে ধুলিয়ান পর্যন্ত যেসব উচুঁ জায়গা রয়েছে সেখানে শুষ্ক মৌসুমে পানি সঙ্কট দেখা দেয়। ওই সব এলাকায় পানির স্তর অনেক নিচে নেমে যায়। গঙ্গা ব্যারাজ হলে এসব এলাকায় বসবাসকারি ভারতীয় নাগরিকরা অনেক সুবিধা ভোগ করবেন। যার মধ্যে ভেড়ামারা থেকে মাথাভাঙ্গা হয়ে গঙ্গার ফারাক্কার পর্যন্ত বিশাল এলাকা জুড়ে শুষ্ক মৌসুমে পানির প্রবাহ বাড়বে। এই পানি ভারতের নাগরিকরাও সেচ কাজে ব্যবহার করতে পারবে। শুষ্ক মৌসুমে পানির স্তর আর নিচে নেমে যাবে না। তাছাড়া নদী সচল থাকায় মাছের উৎপাদনও বাড়বে। যাতে উভয় দেশ লাভবান হবে। কাজেই গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পটি যে ভারতের জন্য শঙ্কার নয়; এটি জোড়ালোভাবে তুলে ধরবে বাংলাদেশ।
উল্লেখ্য, রাজবাড়ী জেলার পাংশায় এই ব্যারাজ নির্মাণ করা হবে। ব্যারাজটি হবে নীলফামারীর ডালিয়ায় নির্মিত তিস্তা ব্যারাজের আদলে। ব্যারাজ পয়েন্ট থেকে ১৮৩ কিলোমিটার উজানে চাঁপাইনবাবগঞ্জের পাংখা পর্যন্ত বিশাল রিজার্ভার হবে। যার পানি ধারণক্ষমতা থাকবে ২৯শ’ মিলিয়ন মিটার কিউব। এই পরিমাণ পানি থেকে ব্যারাজের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে ২ হাজার মিলিয়ন কিউসেক মিটার পানি সরবরাহ করা হবে।
প্রকল্পের ডিপিপি থেকে জানা গেছে, ব্যারাজের দুই পাশের আটটি সংযোগ খালের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে এই পানি ছাড়া হবে। এর ফলে গঙ্গানির্ভর ১৬টি নদী শুষ্ক মৌসুমে ফিরে পাবে নাব্যতা। সেইসাথে গঙ্গা অববাহিকার ৫১ লাখ হেক্টর জমির মধ্যে ১৯ লাখ হেক্টর জমি সরাসরি সেচের আওতায় চলে আসবে। আগামী ৫ বছরের মধ্যে এই ব্যারাজ নির্মাণ সম্ভব বলে ডিপিপি’তে উল্লেখ করা হয়েছে। পানিসম্পদ মন্ত্রণালয় এই ডিপিপি অনুমোদন দেয়ার পর তা পরিকল্পনা কমিশনে পাঠায় ২০১৪ সালের জুনে। ব্যারাজের দৈর্ঘ্য ধরা হয়েছে ২১শ’ মিটার। এর গেট থাকবে ৯৬টি। ফিস পাশ থাকবে ২টি এবং নেভিগেশন লক থাকবে ১টি।  এছাড়াও থাকবে একটি পানি বিদ্যুৎ কেন্দ্র। এই ব্যারাজের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হচ্ছে এর মাধ্যমে ১২ মাসই পানির প্রবাহ কন্ট্রোল করা যাবে। যা দেশের আর্থসামাজিক ও অর্থনৈতিক খাতে বড় ধরনের বিপ্লব নিয়ে আসবে। দেশ রক্ষা পাবে মরুময়তা ও লবণাক্তের কবল থেকে। পরিবেশে ফিরে আসবে ভারসাম্য। ব্যারাজটি নির্মাণ হলে দেশের মোট জনসংখ্যার এক-তৃতীয়াংশ মানুষের স্বপ্ন পূরণ হবে। ফারাক্কার আদলে পদ্মা নদীর ওপর বাংলাদেশ স্বপ্নের ব্যারাজ নির্মাণের পরিকল্পনা হাতে নিয়েছে। নদীর রাজবাড়ীর পাংশা উপজেলা অংশ থেকে পাবনার সুজানগর উপজেলার সাতপাড়িয়া পর্যন্ত ২ দশমিক ১ কিলোমিটার লম্বা এ ব্যারাজ নির্মাণ করা হবে। ফারাক্কা হয়ে আসা পানি ধরে রেখে শুষ্ক মৌসুমে সেচকাজে ব্যবহারের উদ্দেশ্যে এ ব্যারাজ নির্মাণ করা হলেও এর ডেকের ওপর চার লেনের সড়কের পাশাপাশি থাকবে ট্রেন চলাচলের ব্যবস্থাও। ব্যারাজের সুড়ঙ্গপথে চলতে পারবে নৌযানও। এ ব্যারাজ প্রকল্প থেকে উৎপাদিত হবে ১১৩ মেগাওয়াট জলবিদ্যুৎ। স্থাপন করা হবে বিদ্যুৎ ও গ্যাসলাইনও। প্রস্তাবিত ব্যারাজটি বাংলাদেশ-ভারত সীমান্ত থেকে ৮২ কিলোমিটার এবং হার্ডিঞ্জ ব্রিজ (পাকশী ব্রিজ) ও রূপপুর পরমাণু বিদ্যুৎ প্রকল্প থেকে ৫২ কিলোমিটার ভাটিতে নির্মাণ করা হবে। প্রকল্পে মোট ব্যয় ধরা হয়েছে ৩২ হাজার কোটি টাকা। মালয়েশিয়া ও চীন এতে অর্থায়নের আগ্রহ প্রকাশ করেছে।
এই ব্যারাজের মাধ্যমে বছরজুড়েই পানি ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব হবে। বর্তমানে যেসব ব্যারাজ রয়েছে তার মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে ৩ থেকে ৪ মাস পানি ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণ করা যায়। তাও আবার বৃষ্টি না হলে সমস্যা দেখা দেয়। জানা যায়, মনু ব্যারাজ, তিস্তা ব্যারাজ, মহুরি ব্যারাজ, কেআইপি এবং জিকে প্রকল্পের মাধ্যমে যে সেচ ব্যবস্থা চালু রাখা হয়েছেÑ তার সুবিধা কৃষকরা পেয়ে থাকেন ৩ থেকে ৪ মাস। আর পাংশায় বিকল্প গঙ্গা ব্যারাজ নির্মাণ হলে বছরজুড়েই পানি সরবরাহ করা সম্ভব হবে। মধ্য জুলাই থেকে ১৫ অক্টোবর পর্যন্ত ৩ মাস অর্থাৎ বর্ষা মৌসুমে ব্যারাজের সবগুলো গেটই খুলে রাখা হবে স্বাভাবিক পানি প্রবাহের জন্য। মধ্য অক্টোবর থেকে নভেম্বর পর্যন্ত পানি রিজার্ভারে আটকানো হবে। এরপর শুষ্ক মৌসুমে এই পানি ছাড়া হবে।
এই প্রকল্প থেকে বছরে ৭ হাজার ৩শ’ কোটি টাকা আয় আসবে। দীর্ঘমেয়াদে এই আয় আরও বৃদ্ধি পাবে। আর এই প্রকল্পে বিনিয়োগ উঠে আসতে সময় লাগবে মাত্র ৫ বছর। প্রকল্পটির গ্রস এরিয়া ৫১ লাখ হেক্টর। যা দেশের মোট এলাকার ৩৭ শতাংশ। এর মধ্যে ২৯ লাখ হেক্টর জমি কৃষি কাজে এবং ১৯ লাখ হেক্টর জমি বোরো চাষের আওতায় আনা হবে। যার ফলে বছরে ২৫ লাখ মেট্রিক টন বাড়তি ধান এবং ১০ লাখ টন অন্যান্য ফসল উৎপাদন হবে। মৎস্য উৎপাদন হবে ২ লাখ ৪০ হাজার মেট্রিক টন।
এই প্রকল্পটি না হওয়ার কারণে প্রতি বছর ১১ লাখ মেট্রিক টন খাদ্য উৎপাদন ক্ষতিগ্রস্ত হয় বিভিন্ন কারণে। এছাড়াও প্রতি ৫ বছর অন্তর যে খরা দেখা দেয় এতে করে গঙ্গানির্ভর এলাকার মানুষের মাঝে অর্থনৈতিক দুরাবস্থা নেমে আসে। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে যেখানে চাষাবাদের এলাকা বৃদ্ধি পাবে, সেখানে বর্তমানে শুষ্ক মৌসুমে পানি না পাওয়ায় চাষাবাদের এলাকার পরিমাণ এসে দাঁড়িয়েছে মোট জমির ১৬ শতাংশ। প্রকল্পটি বাস্তবায়ন হলে গড়াই, হিসনা, চন্দনা ও জিকে পাম্পের জন্য ৭শ’ কিউসেক মিটার, গড়াই হাইড্রোপাওয়ারের জন্য ৩শ’ কিউসেক মিটার এবং গঙ্গা ব্যারাজের জন্য ১ হাজার কিউসেক মিটার মোট ২ হাজার কিউসেক মিটার পানি গঙ্গা নির্ভর এলাকাসমূহে পৌঁছে দেয়া সম্ভব। এই পানি পৌঁছানো হবে ব্যারাজের দুই পাশের আটটি সংযোগ খালের মাধ্যমে শুষ্ক মৌসুমে।
গঙ্গা ব্যারাজ নির্মাণে আশাজাগানিয়া প্রস্তাব দিয়েছে চীন। এই ব্যারাজ নির্মাণে দেশীয় সমীক্ষায় যে ব্যয় ধরা হয়েছে তার চেয়েও ৮ হাজার কোটি টাকা বেশি করতে চায় চীনের প্রতিষ্ঠানটি। এতে করে প্রকল্পটির ব্যয় দাঁড়াবে ৪০ হাজার কোটি টাকা। এই ব্যয়ের পুরোটাই চীন বিনিয়োগ করে আগ্রহী বলে পানি সম্পদ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: ‘গঙ্গা ব্যারাজ’ নির্মাণ : ভারতীয় অংশে সমীক্ষার প্রস্তাবে সম্মত বাংলাদেশ
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ