Inqilab Logo

বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু : ওবায়দুল কাদের

প্রকাশের সময় : ২৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম | আপডেট : ১০:৫৩ পিএম, ২৭ অক্টোবর, ২০১৬

বিশেষ সংবাদদাতা : আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, কাউন্সিল থেকে সিদ্ধান্ত নিয়েছি আমরা, নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু করব। আমরা অলরেডি শুরু করে দিয়েছি। আমরা প্রস্তুতি শুরু করেছি। আমাদের সম্মেলনে সে বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়েছে। দলের সভাপতি শেখ হাসিনা তৃণমূল নেতাদের সেই নির্দেশনাও দিয়েছেন। নির্বাচনের জন্য আর দুই বছর দুই মাস আছে আমাদের। আমরা যথাসময়েই নির্বাচন করব। গতকাল বৃহস্পতিবার সচিবালয়ে ভারতীয় হাইকমিশনার হর্ষ বর্ধন শ্রিংলার সঙ্গে বৈঠক শেষে সাংবাদিকদের তিনি এ কথা বলেন।
ওবায়দুল কাদের আরো বলেন, আগামী ডিসেম্বরে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ভারত সফর করবেন। সেই সফরে তিস্তা চুক্তির বিষয়ে ইতিবাচক সমাধান আসবে বলে আশা করছি। তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশ ও ভারতের মাইন্ডসেট ঠিক আছে। তিস্তা চুক্তি নিয়ে ভারতের কোনও আপত্তি আছে বলে আমি জানি না। পশ্চিমবঙ্গের সরকারের সঙ্গে যেটুকু সমস্যা আছে তা সমাধান হবে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, ভারত আমাদের প্রতিবেশী দেশ। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সুসম্পর্ক দীর্ঘদিনের। আমি দলের সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় ভারতীয় হাইকমিশনার আমাকে ফুল দিয়ে শুভেচ্ছা জানিয়েছেন। ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে পার্টি টু পার্টি, পিপল টু পিপল এর মধ্যে কানেক্টিভিটি জোরদার করবো। এ জন্য আমরা আগে থেকেই কাজ করছি।
তিনি আরও বলেন, বাংলাদেশের গণতন্ত্র নিজস্ব বিষয়। এক্ষেত্রে ভারতের কোনও পরামর্শ নেই। এ বিষয়ে গণতান্ত্রিক দেশ হিসেবে ভারত ইতিবাচক।
বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে ভারত কিছু বলেছে কিনা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, বাংলাদেশে একটি অবাধ ও সুষ্ঠু নির্বাচন হোক তা আমরা চাই। এ বিষয়ে ভারতের কিছুই বলার নেই। আমার কথা হচ্ছে, নির্বাচন সময় মতো হবে। সংসদের মেয়াদ শেষ হওয়ার তিন মাসের মধ্যে নির্বাচন হওয়া সংবিধানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। সেই সময়ের মধ্যেই নির্বাচন হবে।
ওবায়দুল কাদের আরও বলেন, সীমান্ত চুক্তি ও সিটমহল হস্তান্তরের মধ্য দিয়ে ভারতের সঙ্গে অবিশ্বাস, সন্দেহের দেয়াল ভেঙে গেছে। দুই দেশের মধ্যে গঠনমূলক অংশীদারিত্ব গড়ে তোলার জন্য আমরা কাজ করছি। বিমসটেক ও ব্রিকসের মাধ্যমে অন্য দেশের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক মধুরতর হচ্ছে। তিস্তার পানি বণ্টন নিয়ে আমি আশাবাদী।
আগামী নির্বাচনে নিয়ে কোনো বিভ্রান্তি তৈরি করলে বিএনপি ‘আবারও নিজেদের ভুলের ফাঁদে’ পড়বে বলে মন্তব্য করেছেন ওবায়দুল কাদের
মন্ত্রী ও দলের সাধারণ সম্পাদকের কাজ কিভাবে সমন্বয় করবেন? জানতে চাইলে ওবায়দুল কাদের বলেন, মন্ত্রণালয়ে খোঁজ নিয়ে দেখেন কোনও ফাইল পড়ে আছে কিনা? এখন আমি রাস্তা ও ব্রিজ দেখতে গিয়ে আওয়ামী লীগ দেখবো। আবার আওয়ামী লীগ দেখতে গিয়ে রাস্তা ও ব্রিজ দেখবো। কাজেই কোনও সমস্যা হবে না।
দলের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে প্রধান চ্যালেঞ্জ কী? জানতে চাইলে তিনি বলেন, দলকে গতিশীল করা। নেতাকর্মীদের মধ্যে নিয়ম শৃঙ্খলা করা। দলকে সুসংগঠিত করে একটি সুন্দর নির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে দলকে প্রস্তুত করাই আমার বড় চ্যালেঞ্জ।
আপনি আগে থেকেই দলের হাইব্রিড নেতাদের বিরুদ্ধে সোচ্চার ছিলেন। এখন সাধারণ সম্পাদক হয়ে তাদের বিরুদ্ধে কী ব্যবস্থা নেবেন? জানতে চাইলে তিনি বলেন, একটি দলে সব ধরনের লোক থাকে। দল ক্ষমতায় আসলে কিছু নতুন লোকও আসেন। তবে বসন্তের কোকিলদের ভিড়ে দুঃসময়ের বন্ধুরা যেন কোণঠাসা হয়ে না পড়েন, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে। দুঃসময়ের বন্ধুরা কোণঠাসা হলে দল দুর্বল হয়ে পড়ে। আমাদের সরকার খুব শক্তিশালী। পাশাপাশি দলকেও শক্তিশালী করবো।
নির্বাচন কমিশন গঠনে সার্চ কমিটি নিয়ে কোনও দলের সঙ্গে আলোচনা হবে কিনা জানতে চাইলে তিনি বলেন, বিএনপি কি সেই পথ খোলা রেখেছে? কোকোর মৃত্যুকে কেন্দ্র করে আমাদের প্রধানমন্ত্রী শোক জানাতে গিয়েছিলেন। তখন সেই সুযোগটি আমাদের প্রধানমন্ত্রীকে দেয়া হয়নি। ঘরের দরজা বন্ধ করে দেয়া হয়েছিল। ঘরের দরজা বন্ধ করার মধ্য দিয়ে মনের দরজা, সংলাপের দরজা, আলোচনার দরজা বন্ধ করে দিয়েছে বিএনপি। এছাড়া, গণভবনে বিএনপি চেয়ারপারসনকে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন প্রধানমন্ত্রী। কিন্তু তিনি যদি সেদিন আসতেন, তবে আজকের রাজনীতি অন্যরকম হতো। এখন বিএনপি জনাকয়েক লোক নিয়ে মিডিয়ার সঙ্গে কথা বলে। কোনও প্রটেকশন করতে পারে না। পাঁচশ’ লোক জমায়েত করতে পারে না। বিদেশি বন্ধুরা আসলে শুধু নালিশ আর নালিশ, আভিযোগ আর অভিযোগ করে। তিনি আরও বলেন, একটি সুষ্ঠু নির্বাচন করতে নির্বাচন কমিশন যাতে স্বাধীনভাবে কাজ করতে পারে, আমাদের উচিত হবে নির্বাচন কমিশনকে সেই সুযোগ দেওয়া।
হর্ষ বর্ধন শ্রিংলা বলেন, আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক একজন পরিশ্রমী, ত্যাগী, বীর মক্তিযোদ্ধা ও একজন সাবেক ছাত্রনেতা। তিনি সাধারণ সম্পাদক হওয়ায় ভারত খুবই খুশি হয়েছে। তাই আমরা তাকে অভিনন্দন জানাতে এসেছি।
ঘরে  বসে সংবাদ সম্মেলনের মধ্যে বিএনপির কাজ সীমাবদ্ধ :
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, বিএনপি হতাশাগ্রস্ত একটি দল। ঘরে বসে সংবাদ সম্মেলনের মধ্যে তাদের কাজ সীমাবদ্ধ। জনগণের সঙ্গে তাদের কোনো সম্পৃক্ততা নেই। গতকাল বৃহস্পতিবার সকালে বনানী কবরস্থানে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে নিহত বঙ্গবন্ধুর সহধর্মিণী বেগম ফজিলাতুন্নেছা মুজিবসহ বঙ্গবন্ধু পরিবারের শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন শেষে তিনি এ কথা বলেন।
আওয়ামী লীগের কাউন্সিলে গণতন্ত্র বা কোনো অর্জন নেইÑ বিএনপির এমন অভিযোগের জবাবে ওবায়দুল কাদের বলেন, বিএনপি গণতন্ত্র বিশ্বাস করে, এটা আগে প্রমাণ করুক। বিএনপির মধ্যেই কোনো গণতন্ত্র নেই, অথচ তারা আবার গণতন্ত্রের কথা বলে। আওয়ামী লীগ সুশৃঙ্খল, বৃহৎ একটি দল।
আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আমাদের কাউন্সিলে সম্পূর্ণ গণতন্ত্র মেনে নেতা নির্বাচিত করা হয়েছে। কাউন্সিল নিয়ে জনগণের যথেষ্ট আগ্রহ ছিল।’
এর আগে পঁচাত্তরের ১৫ আগস্ট ঘাতকদের হাতে নিহত শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করেন আওয়ামী লীগের নবনির্বাচিত কেন্দ্রীয় কার্যনির্বাহী কমিটির নেতারা। এ সময় তাঁরা প্রতিটি শহীদের কবরে ফুলের পাপড়ি ছিটিয়ে দেন। শ্রদ্ধা শেষে সুরা ফাতেহা পাঠ করে মোনাজাত করা হয়।
শ্রদ্ধা নিবেদনের সময় আওয়ামী লীগের সভাপতিম-লীর সদস্য শেখ ফজলুল করিম সেলিম, বেগম মতিয়া চৌধুরী, সাহারা খাতুন, ফারুক খান, আব্দুর রাজ্জাক, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ ও জাহাঙ্গীর কবির নানক, সাংগঠনিক সম্পাদক আহমদ হোসেন, খালিদ মাহমুদ চৌধুরী, আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, আ ফ ম বাহাউদ্দিন নাছিম ও এনামুল হক শামীম, সংস্কৃতি বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, প্রচার ও প্রকাশনা সম্পাদক হাছান মাহমুদসহ নবনির্বাচিত কমিটির সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।



 

Show all comments
  • মহানগর ছাত্রদল ২৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১:৩০ পিএম says : 1
    বিএনপি সমাবেশ করবে কি করে? আপনারা কি করতে দেন? সরাসরি গুলি করবেন না এই নিশ্চিয়তা দিয়ে দেখুন বিএনপি কেমন সমাবেশ করবে?
    Total Reply(0) Reply
  • শফিক ২৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১:৩১ পিএম says : 0
    গুলি করবেন না, বাধা দিবেন না, এই নিশ্চিয়তা দিয়ে শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া একটি করে মহাসমাবেশ করবে গোষণা দেন। তারপর কার লোক বেশী হয় দেখা যাবে।
    Total Reply(0) Reply
  • সমির ২৮ অক্টোবর, ২০১৬, ১:৫৬ পিএম says : 0
    বিএনপি যদি কিছুই না হতো তাহলে জন কেরি এবং শিং জিন পিং বিএনপির সাথে বৈঠকে বসতো না।
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: নির্বাচনের প্রস্তুতি শুরু : ওবায়দুল কাদের
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ