Inqilab Logo

বুধবার ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ২১ কার্তিক ১৪৩১, ০৩ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

২০২২ সাল পাকিস্তানের পররাষ্ট্রনীতিকে কৌশলগত চ্যালেঞ্জে ফেলবে

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ২ জানুয়ারি, ২০২২, ১২:০০ এএম

যখন শেষ মার্কিন বিমানটি কাবুল থেকে উড়ে যায়, তখন তালেবানের আফগানিস্তান বিজয় সম্পন্ন হয়েছিল, যা নিঃসন্দেহে ২০২১ সালের সবচেয়ে গুরুত্বপূূর্ণ পররাষ্ট্রনীতির মুহূর্ত। এটি যুক্তরাষ্ট্র, চীন, পাকিস্তান ও ভারতসহ আঞ্চলিক দেশগুলোর পররাষ্ট্র নীতিকে বহুলাংশে বদলে দিয়েছে।

আফগানিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের বিশৃঙ্খল প্রস্থান এবং স্পষ্ট পরাজয় আন্তর্জাতিক এবং মার্কিন মিডিয়াকে পাকিস্তানের ওপর দোষ চাপানোর চেয়ে ওয়াশিংটনের ব্যর্থতার দিকে বেশি মনোযোগ দিতে বাধ্য করেছে, যেখানে দেশটি প্রায়শই আফগানিস্তানের প্রধান সমস্যা হিসেবে পাকিস্তানকে অভিযুক্ত করেছে।

তবে, আফগানিস্তান ইস্যু পাক-মার্কিন সম্পর্কের ভবিষ্যত নিয়ে একটি গুরুতর প্রশ্ন তুলেছে। মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানকে উপেক্ষা করে চলেছেন এবং পাকিস্তানের বিষয়ে মার্কিন অগ্রাধিকার বা অনধিকার সংক্রান্ত পরামর্শ নিয়ে ফোনে তার সাথে এখনও কথা বলেননি। তবে, পাকিস্তানে যুক্তরাষ্ট্রের পূর্ণকালীন রাষ্ট্রদূত নিয়োগ ইঙ্গিত দেয় যে, দু’দেশের সম্পর্ক সহসাই সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়ার সম্ভাবনা নেই।

এদিকে, আফগানিস্তান নিয়ে পাকিস্তানের অর্গানাইজেশন অফ ইসলামিক কোঅপারেশন-এ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠকের অনন্য আয়োজন ইসলামাবাদের পররাষ্ট্রনীতিতে গুরুত্বের জায়গাটি তুলে ধরেছে। পাকিস্তানের আশঙ্কা যে, আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় আবারও আফগানিস্তানকে পরিত্যাগ করতে পারে। প্রতিবেশী দেশ এবং ভূ-অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে এই দুঃস্বপ্নের দৃশ্যটি এড়াতে মরিয়া চেষ্টা করছে পাকিস্তান।

অন্যদিকে, ২০২১ সালের শুরুটি পাকিস্তান ও ভারতের মধ্যে চির বৈরিতার সম্পর্কের মধ্যে কিছুটা আশা জাগিয়েছিল। ব্যাক-চ্যানেল আলোচনার ফলস্বরূপ, দেশ দু’টি ২৫ ফেব্রুয়ারি নিয়ন্ত্রণ রেখা (এলওসি) বরাবর যুদ্ধবিরতি পুনর্বহাল করতে সম্মত হয়েছে। এখন প্রশ্ন হ’ল, পাকিস্তান কি এ ধারাটি ধরে রাখতে পারবে এবং বিশ্বকে তালেবানের সাথে সংযুক্ত রাখতে পারবে?

পাকিস্তান ভারতের সাথে আংশিকভাবে বাণিজ্য সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের মতো আরো পদক্ষেপ গ্রহণ করতে চেয়েছিল, কিন্তু পাকিস্তানি মন্ত্রিসভা প্রস্তাবটি বাতিল করে দেয়, যাতে বিপত্তির সম্ভাবনা হ্রাস পায়। ভারতেরও কাশ্মীর ইস্যুতে কিছু আস্থা-নির্মাণের ব্যবস্থা নেওয়ার কথা ছিল, কিন্তু দেশটি সেরকম কোনো পদক্ষেপ নেয়নি। তবে, এসব বাধা সত্তে¡ও নিয়ন্ত্রণরেখায় যুদ্ধবিরতিতে প্রতীয়মান হয় যে, উভয় পক্ষ উত্তেজনা না বাড়াতে আগ্রহী।

যেহেতু ২০২১ সাল আফগানিস্তানের জন্য একটি চরম মুহূর্ত হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে এবং পাকিস্তানের পররাষ্ট্র নীতিকে নতুনভাবে রূপায়িত করেছে, সে কারণে ২০২২ সাল দেশটির জন্য আরো চ্যালেঞ্জ নিয়ে আসবে। আফগানিস্তানের অভ্যন্তরীণ অস্থিরতা এবং অস্থিতিশীলতার যে কোনো নতুন চক্র নিঃসন্দেহে পাকিস্তানের পররাষ্ট্র নীতিকে কৌশলগত ঝুঁকির মধ্যে ফেলবে। সূত্র : ট্রিবিউন।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পাকিস্তান


আরও
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ