পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
স্টাফ রিপোর্টার : ফুটপাত থেকে অখ্যাত লেখকদের বই কিনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্ন করা হয় বলে জানিয়েছেন শিক্ষামন্ত্রী নুরুল ইসলাম নাহিদ। শিক্ষার মান কমছে এমনটি অস্বীকার করে মন্ত্রী বলেন, শিক্ষার মান বাড়ছে তবে যা বাড়া উচিত যা করা উচিত তার জন্য আমরা সংগ্রাম করছি, লড়াই করছি। এটা দীর্ঘ প্রক্রিয়ার ব্যাপার। গতকাল (বুধবার) সচিবালয়ে জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষার প্রস্তুতি সভায় তিনি একথা বলেন।
শিক্ষামন্ত্রী বলেন, ‘একজন শিক্ষক বলেছেন, নীলক্ষেতের ফুটপাতে অনেক বই বিক্রি হয়Ñ গান, জারি, নাচ, ছড়া, কবিতা নানান ধরনের বই। ওইসব জায়গা থেকে তারা কয়েকটি বই তুলে নিয়ে আসেন। এনে প্রশ্নের মধ্যে তুলে দেন ওই বইয়ের লেখক কে? তারাও জানেন না। কেন দেন? তাদের তো উদ্দেশ্য পাস ফেল না। উদ্দেশ্য হলো ৩৯ জনকে বাদ দেয়া এবং একজনকে রাখা। সেই হিসেবে এটা পাস ফেলের প্রশ্ন নয়, এতে বিভ্রান্তি হচ্ছে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশেষ করে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি পরীক্ষায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী ফেল করায় শিক্ষার মান নিয়ে প্রশ্ন উঠছে, এ বিষয়ে মন্ত্রী বলেন, ‘এখন জেএসসি দিচ্ছে, আর আগে পিএসসি দিয়েছে। এসএসসি দিচ্ছে, এইচএসসি দিচ্ছে, কত ঘণ্টা পরীক্ষা দিচ্ছে, যেভাবে হয় তাকে শিখতে হবে। আধুনিক যুগে এসে আপনা-আপনি অনেক জ্ঞান অর্জন করে ফেলছে। তাই আমাদের ছেলেমেয়েদের গুণগত মান বাড়ছে না যারা বলেন, তারা মোটেই সঠিক কথা বলেন না।’ নাহিদ বলেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে একটি সিটের বিপরীতে ৪০ জন আবেদন করেছে। ওখানে পাস ফেলের ব্যাপার নাই। এক ঘণ্টায় তারা একটা বাছাই করছেন কি করে ৩৯ জনকে বাদ দেয়া যায়। ৩৯ জনকে বাদ দেয়ার জন্যই এ ব্যবস্থাগুলো নেয়া হয়।’ তিনি বলেন, ‘গত বছরের আগের বছর বলেছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ইংরেজিতে শুধু ৩ জন ভর্তি হয়েছে। শেষ পর্যন্ত তারা সব আসনই পূর্ণ করেছেন। আমাদের এসএসসি ও এইচএসসিতে যে হারে জিপিএ-৫ পায় তার চেয়ে বেশি ফার্স্ট ক্লাস পেয়ে যাচ্ছে ওই সব ছেলেমেয়েরা তারা যাদের বলছেন ফেল। ফেল করাদের পরে ভর্তি করে এক বছর পরই তারা কি করে ফার্স্ট ক্লাস মার্ক পাচ্ছেÑ সেই প্রশ্ন রেখে মন্ত্রী বলেন, ‘এটা কি করে সম্ভব। এটা আমাদের ছেলেমেয়েদের হতাশ করে। ভুল ম্যাসেজ চলে যায় সবার কাছে। আন্তর্জাতিকভাবেও আমরা হেয়প্রতিপন্ন হচ্ছি। আমাদের পরীক্ষার উপর অন্যদের আস্থা কমে যাবে।’ ‘বিষয়টি সঠিক নয় এটি একটি বাছাই পরীক্ষা। আমি ৯৯ পেলাম, নেবে একজন, দেখা গেল আরেক জন ১০০ পেয়ে গেল। তবে কি আমি ফেল, আমি তো ফেল না। যে বাছাই পরীক্ষা নেয়া হচ্ছে, সেখানে টিকেছে বা টিকে নাই’।
এসময় শিক্ষামন্ত্রী প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়ে বলেন, পরীক্ষার প্রশ্ন ফাঁস করার ‘কিছু পেশাদার লোক’ আছে, তারা দীর্ঘদিন থেকে এ কাজ চালিয়ে আসছে। মূল প্রশ্ন ‘ফাঁস করতে না পারলেও’ ভর্তি পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্ন তিন লাখ টাকায় বিক্রি হয়েছে। কিছু লোক আছে মাঝে মাঝে যুক্ত হয়, এরা দুই রকমের বেনিফিট নিতে চায়। তবে কবে, কারা, কোন পরীক্ষার ভুয়া প্রশ্ন এত টাকায় বিক্রি করেছে সে বিষয়ে মন্ত্রী স্পষ্ট করে কিছু বলেননি। নাহিদ বলেন, যারা পেশাদার, তাদের চিহ্নিত করতে বিজি প্রেসকে আমলে নেই, তাদের মাধ্যমে বিভিন্ন লিংক বের করতে পারি। আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা তাদের লিংক করে তাদের আয়ত্তের মধ্যে নিয়ে আসে। দুই-একজন যারা আছেন, তারাও দৃষ্টির মধ্যে চলে এসেছে। এই প্রতারক চক্রের একটি উদ্দেশ্য হলো প্রশ্ন ফাঁস করে কিছু ইনকাম করা। আবার সরকারকে ‘রাজনৈতিকভাবে হেয়প্রতিপন্ন এবং শিক্ষা কার্যক্রমকে প্রশ্নবিদ্ধ’ করতেও প্রশ্ন ফাঁসের চেষ্টা হয়। প্রযুক্তি ব্যবহার করে এখন সত্য-মিথ্য দুটোই খুব সহজে প্রচার করা যায় মন্তব্য করে নাহিদ বলেন, দেখা যাচ্ছে, আসল প্রশ্ন যেহেতু বের করতে পারে না তাই নকল প্রশ্ন বের করছে। ভর্তি পরীক্ষার একটি চক্রকে তারা (আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী) ধরেছেন, যারা ভুল প্রশ্ন প্রচার করেছে। ইন্টারেস্টিং বিষয় হলো ওই প্রশ্নই তারা বিক্রি করেছে পাঁচ হাজার থেকে তিন লাখ টাকায়।
জেএসসি-জেডিসি পরীক্ষা সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য গতকাল আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীসহ বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের প্রতিনিধিদের নিয়ে এই সভা করেন নাহিদ। এবার জেএসসি-জেডিসির প্রশ্ন ফাঁস হওয়ার ‘সম্ভবনা নেই’ দাবি করে তিনি বলেন, বিভিন্ন পদক্ষেপ নেয়ায় প্রশ্ন ফাঁসের বিষয়টি এখন আর আগের মতো নেই, বলা যায় নকলমুক্ত পরীক্ষা। তবে ছোট-খাটো ভুল-ত্রুটি থাকতে পারে, সেটা অন্য জিনিস। যারা ভুয়া প্রশ্ন বিক্রি করে তাদের সবাইকে নজরদারির মধ্যে রাখা হয়েছে জানিয়ে মন্ত্রী বলেন, কোণঠাসা করে ফেলা হয়েছে। এগুলোর সঙ্গে যারা জড়িত থাকতে পারে সবার তালিকা করা হয়েছে। এসব করে কেউ পার পাবে না, ধরা পড়তেই হবে। কিছু শিক্ষকও প্রশ্ন ফাঁসের সঙ্গে জড়িয়ে পড়েছেন বলে জানান তিনি। তিনি বলেন, কেউ কেউ ধরাও পড়েছেন। কিছু শিক্ষক নজরদারির মধ্যে আছেন। কোচিং সেন্টারগুলোতেও নজরদারি করা হচ্ছে। আমরা খুবই দুঃখিত হই, যখন শুনি যে আমাদের শিক্ষকরাও এসব কাজে জড়িত হয়ে পড়েন। এ কারণে পরীক্ষায় এমসিকিউ অংশ কমিয়ে দিয়েছি।
আগামী ১ থেকে ১৭ নভেম্বর জুনিয়র স্কুল সার্টিফিকেট (জেএসসি) ও জুনিয়র দাখিল সার্টিফিকেট (জেডিসি) পরীক্ষা হবে। এবার দেশের দুই হাজার ৭৩৪টি কেন্দ্রে ২৪ লাখ ১০ হাজার ১৫ জন শিক্ষার্থী পরীক্ষায় বসবে। এর মধ্যে ১১ লাখ ২৩ হাজার ১৬২ জান ছাত্র এবং ১২ লাখ ৮৬ হাজার ৮৫৩ জন ছাত্রী। এসময় সভায় শিক্ষা সচিব মোঃ সোহরাব হোসেনসহ অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।