পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
বিশেষ সংবাদদাতা : বহুল আলোচিত ‘গঙ্গা ব্যারাজ’ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলে পানি প্রবাহে কোন বাধার সৃষ্টি হবে না। পদ্মার পানি তার স্বাভাবিক গতিতেই প্রবাহিত হবে। গতকাল (বুধবার) সফররত ভারতের প্রতিনিধি দলকে পাংশায় প্রস্তাবিত গঙ্গা ব্যারাজ নির্মাণ এলাকা, গড়াইয়ের উৎসমুখ ও হার্ডিঞ্জ ব্রীজ এলাকা ঘুরিয়ে দেখানোর পর এই নিশ্চয়তা দেয়া হয়েছে। এসব এলাকা পরিদর্শনের পর ভারতের প্রতিনিধিদল অনেকটাই সন্তুষ্ট যে, বাংলাদেশে বিকল্প গঙ্গা ব্যারাজ ভারতের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দেখা দেবে না। সংশ্লিষ্ট সূত্রে এসব তথ্য জানা গেছে।
আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০ টায় রাষ্ট্রীয় অতিথি ভবন মেঘনায় বাংলাদেশ ও ভারতের প্রতিনিধি দলের মধ্যে পুনরায় বৈঠক বসবে। এই বৈঠকে ভারতের প্রতিনিধি দলের সামনে আবারও গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পের প্রেজেনটেশন ও এ নিয়ে উভয় পক্ষের মধ্যে আলোচনা অনুষ্ঠিত হবে। এরপর বিকাল ৪ টায় উভয় দেশের কারিগরি কমিটি পানিসম্পদ মন্ত্রীর সাথে তার মন্ত্রণালয়ে সৌজন্য বৈঠক করবেন। সন্ধ্যা ৬ টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে উভয় দেশের কারিগরি কমিটি প্রধানমন্ত্রীর অর্থ বিষয়ক উপদেষ্টা ড. মশিউর রহমান খানের সাথে সৌজন্য সাক্ষাত করবেন। শুক্রবার সকালে তারা কলকাতার উদ্দেশে ঢাকা ছাড়বেন।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, পাংশায় যেখানে এই ব্যারাজ নির্মাণ করা হবে ওই স্থানটি ভারতের প্রতিনিধি দল এক ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে নৌকায় ঘুরে ঘুরে দেখেন। তারা গড়াই নদীর উৎসমুখ যেখানে পদ্মায় মিশেছে সেই জায়গাটিও ঘুরে দেখেছেন। এরপর ঊনিশ শতকে নির্মিত হার্ডিঞ্জ ব্রীজ ঘুরে দেখেন। এখানে পদ্মার প্রস্থ কত তা জানতে চান এবং গঙ্গা ব্যারাজ হলে এই প্রস্থ বেড়ে কত হবে তাও জানতে চেয়েছেন। জবাবে বাংলাদেশ প্রতিনিধি দল তাদেরকে জানিয়েছেন, হার্ডিঞ্জ ব্রীজের এপার থেকে ওপারে পদ্মা নদীর প্রস্থ ১ দশমিক ৮ কিলোমিটার। গঙ্গা ব্যারাজ হলে এই প্রস্থ বেড়ে ২ দশমিক ২ কিলোমিটার হবে। এতে করে পদ্মার পানি তার স্বাভাবিক গতিতেই চলবে। কোন বাধা পাবে না।
উল্লেখ্য, মঙ্গলবার ফরিদপুর নদী গবেষণা ইনষ্টিটিউটে অনুষ্ঠিত বৈঠকে বাংলাদেশের পক্ষ থেকে গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পের মডেল উপস্থাপন, কম্পিউটারে উপস্থাপিত এর বিভিন্ন ডাটা, তথ্য-উপাত্ত ও ডিজাইন তুলে ধরা হয়েছে। এরপর বাংলাদেশের পক্ষ থেকে জানতে চাওয়া হয়, গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্প নিয়ে ভারতের আর কোন অনুসন্ধান আছে কীনা? জবাবে ভারতীয় প্রতিনিধি দলের পক্ষ থেকে বলা হয়, তাদের আর কোন প্রশ্ন নেই।
গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করতে সম্ভাব্য ব্যয় ধরা হয়েছে প্রায় ৪০ হাজার কোটি টাকা। আর এর বাস্তবায়নকাল ধরা হয়েছে সাত বছর। ব্যারেজটি নির্মাণ হলে গঙ্গা অববাহিকার ১৬টি নদী নাব্যতা ফিরে পাবে এবং বছর জুড়েই এসব নদীতে পানি থাকবে। এছাড়াও প্রতিবছর সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত ফসল পাওয়া যাবে।
সফররত ভারতীয় প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন দেশটির সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের পরিচালক ও প্রধান প্রকৌশলী (এইচএসও) মি. ভুপাল সিং। প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হচ্ছেন- পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ইরিগেশন এন্ড ওয়াটারওয়েজ ডিপার্টমেন্টের সচিব নবীন প্রকাশ, মিনিষ্ট্রি অব ওয়াটার রিসোর্স এর কমিশনার (এফএম) জে. চন্দ্র শেখর আয়ার, সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের পরিচালক, হাইড্রোলজি মি. এনএন রাই, সেন্ট্রাল ওয়াটার কমিশনের পরিচালক মি. আর আর সামভিরা, ডব্লিউএপিসিওএস লিমিটেডের নির্বাহী পরিচালক অনুপম মিশ্র, ঢাকাস্থ ভারতীয় হাই কমিশনের ফাস্ট সেক্রেটারি (পলিটিক্যাল) নিনাদ এস দেশডান্ডে ও মিনিস্ট্রি অব এক্সটার্নাল এফয়ার্স-এর আন্ডার সেক্রেটারি (বিএম) মিস. মিনি কুমাম।
অপরদিকে, বাংলাদেশের ১১ সদস্যের প্রতিনিধি দলের নেতৃত্ব দিচ্ছেন পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) অতিরিক্ত মহাপরিচালক আবদুল হাই বাকী। এই প্রতিনিধি দলের অন্য সদস্যরা হচ্ছেন- পাউবো’র অতিরিক্ত মহাপরিচালক (পরিকল্পনা) মাহফুজুর রহমান, যৌথ নদী কমিশন বাংলাদেশ এর সদস্য জাহিদ হোসেন জাহাঙ্গীর, অতিরিক্ত প্রধান প্রকৌশলী (গঙ্গা ব্যারাজ) মোতাহার হোসেন, পাউবো’র ফরিদপুর জোনের প্রধান প্রকৌশলী মোহাম্মদ আলী, গঙ্গা ব্যারাজ প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলী কবিবুর রহমান প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।