পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
ইখতিয়ার উদ্দিন সাগর : বাংলাদেশের পাট ও পাটজাত পণ্যের ২০ শতাংশ ভারতের বাজারে যায়। সম্প্রতি বাংলাদেশ থেকে পাট ও পাটজাত পণ্য ভারতে রপ্তানির ক্ষেত্রে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ হারে প্রতিরোধমূলক শুল্ক আরোপের সুপারিশ করেছে ওই দেশের সংশ্লিষ্ট দপ্তর। এ সুপারিশ কার্যকর হলে বাংলাদেশের পাট চাষি এবং পাটপণ্য উৎপাদনকারী ও রপ্তানিকারকদের প্রতিবন্ধকতার মুখোমুখি হতে হবে বলে জানিয়েছেন সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা। পাশাপাশি বাংলাদেশ হারাবে বড় বাজার। এতে রপ্তানি আয়ে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে। এ কারণে ভারতের চেয়ে ভালো কোন বিকল্প বাজারের কথা ভাবতে হতে পারে বলে জানিয়েছেন রপ্তানিকারকেরা ।
দুই দেশের মধ্যে বিদ্যমান দীর্ঘদিনের দ্বিপাক্ষীয় বাণিজ্যিক সুসম্পর্কের বিবেচনায় প্রতিরোধমূলক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত না নিতে ভারতের বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের প্রতি আহ্বানও জানিয়েছে ঢাকা চেম্বার। তবে ভারতের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, প্রতিবেশী দেশগুলো থেকে আমদানি বাধা দেয়া এই শুল্ক আরোপের উদ্দেশ্য নয়। এদিকে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের এক কর্মকর্তা সূত্রে জানা গেছে, ভারতের এ সিদ্ধান্ত সম্পর্কে অবগত আছে এ দেশের সরকার। বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের অবস্থানও তাদের জানিয়ে দেওয়া হয়েছে। এখনও তার জবাব আসেনি। তবে আলোচনার মাধ্যমে এর একটা গ্রহণযোগ্য সমাধান হবে।
ভারতীয় বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের একটি দল গত জুনে বাংলাদেশের কিছু পাটকল পরিদর্শন করে তথ্য সংগ্রহ করে। তাদের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে গত সপ্তাহে অনুষ্ঠিত বৈঠকে প্রতিরোধমূলক শুল্ক আরোপের সুপারিশ করেছে সংশ্লিষ্ট দপ্তর। বাংলাদেশ থেকে যাওয়া পাট ও পাটজাত পণ্যে টনপ্রতি ১৯ দশমিক ৩০ ডলার থেকে ৩৫১ দশমিক ৭২ ডলার পর্যন্ত শুল্ক আরোপের সুপারিশ করেছে তারা। এসব পণ্যের মধ্যে পাটের বস্তা, সুতা, চট ও চটের ব্যাগ রয়েছে।
এর আগে মুক্ত বাণিজ্য বা সাফটা চুক্তির আওতায় বাংলাদেশের ২৬টি বাদে সকল পণ্যে শুল্কমুক্ত সুবিধা দিয়ে আসছে ভারত, যা ২০১১ সাল থেকে কার্যকর রয়েছে। এ সুবিধার পর পাটজাত পণ্য থেকে প্রতিবছর রপ্তানি আয় বাড়ছে। রপ্তানি উন্নয়ন ব্যুরোর (ইপিবি) তথ্য মতে, বাংলাদেশ ২০১৫-১৬ অর্থবছরে প্রায় ৯২ কোটি মার্কিন ডলারের পাট ও পাটজাত পণ্য বিভিন্ন দেশে রফতানি হয়েছে। এর মধ্যে ২০ শতাংশ ভারতের বাজারে গেছে। সেখানকার বাজারের প্রায় ৮ শতাংশ। ২০১৪-১৫ অর্থবছরে বাংলাদেশ থেকে ৮৬ কোটি ৮৫ লাখ ডলারের পাট ও পাটপণ্য রপ্তানি হয়েছে। এর মধ্যে ভারতেই রপ্তানি হয়েছে ১০ কোটি ৪৪ লাখ ডলারের পণ্য, যা ওই অর্থবছরে ১২ শতাংশ। বাংলাদেশ থেকে ভারতে বেশি রপ্তানি হয় বস্তা। এ দেশ থেকে যত বস্তা ওই অর্থবছরে রপ্তানি হয়েছে, তার ২৪ শতাংশই গেছে ভারতে। এ ছাড়া শুধু ভারতের বাজারে প্রতি বছর এক লাখ ১০ হাজার টন পাটের সুতা রফতানি করা হয়। চলতি অর্থবছরে এই খাতের রপ্তানি আয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে ৯৬ কোটি ৪০ লাখ মার্কিন ডলার। তবে ভারত যে ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে তা কর্যকর হলে লক্ষ্যমাত্রা পূরণের কোন সম্ভবনা নেই বলেও জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা
এ অবস্থায় ঢাকা চেম্বার মনে করে, দু’দেশ যখন দ্বিপক্ষীয় বাণিজ্য উন্নয়নে কাজ করছে, সে সময় এ ধরনের সিদ্ধান্ত বাণিজ্য সম্প্রসারণের ধারাকে ব্যাহত করবে। ভবিষ্যতে ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের বাণিজ্য ব্যবধান আরও বৃদ্ধি পাবে। এ বিষয়ে উদ্বেগ জানিয়ে ঢাকা চেম্বার দ্রুত প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন।
এই বিষয়ে ইন্ডিয়া বাংলাদেশ চেম্বার অফ কমার্স এন্ড ইন্ডাস্ট্রির সভাপতি মো: তাসকিন আহমেদ বলেছেন, ভারত যে ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে যাচ্ছে, তা যদি বাস্তবায়িত হয় তাহলে এ দেশের পাট ও পাট জাত পণ্যের সাথে জড়িত সকলের বড় ধরনের ক্ষতি হবে। এছাড়া ভারতের সাথে আরো বাণিজ্য ঘাটতি বেশি হওয়ার সম্ভবনা রয়েছে। তিনি আরো বলেন, ভারতে রপ্তানি ক্ষেত্রে ২৬টি পণ্য বাদে বাকিগুলো শুল্কমুক্ত ছিল, কিন্তু হঠাৎ করে পাটের উপর প্রতিরোধমূলক শুল্ক আরোপের সিদ্ধান্ত দুঃখজনক। এতে রপ্তানির উপর প্রভাব পড়বে বলেও তিনি উল্লেখ করে।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।