Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

পুরান ঢাকায় অনুমোদনহীন বহুতল ভবন নির্মিত হচ্ছে

প্রকাশের সময় : ২৭ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

জবি সংবাদদাতা : ঢাকার ইসলামপুর পাটুয়াটুলীতে অনুমোদন ছাড়াই নির্মিত হচ্ছে বহুতলবিশিষ্ট ভবন। নিয়ম না মানায় ভবনগুলো একদিকে ঝুঁকিপূর্ণ অন্যদিকে এগুলো নিয়ে বিরোধ লেগেই আছে। পুরান ঢাকার ইসলামপুর ৬০, পাটুয়াটুলী এসআর ঘড়ি ভবন মার্কেটের ঝুঁকিপূর্ণ সম্প্রসারিত ভবনের ৬-৭ তলার নির্মাণ কাজ বন্ধের দাবিতে প্রায় সময়ই মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে মার্কেটের দোকান মালিক ও ব্যবসায়ী এবং মালিক সমিতি।
কিন্তু কোন কিছুই তোয়াক্কা না করে বহুতল ভবন নির্মাণ করছে মালিক। সরেজমিন দেখতে গেলে ব্যবসায়ীরা জানান, পুরান ঢাকার ইসলামপুর ৬০, পাটুয়াটুলী এস আর ঘড়ি ভবন মার্কেটের বর্তমান বয়স ২০ বছর। নির্মাণকালে ভবনটি চার তলা বিশিষ্ট প্লানিং ছিল। কিন্তু প্রতিষ্ঠার সময়ই ভবনটির উপরে অতিরিক্ত এক তলা নির্মাণ করা হয়। পরে ভবনটির মালিক পরিবর্তন হওয়ার পর নতুন মালিক ভবনের প্লানিং না মেনে ভবনটি পাঁচ তলা থেকে সাত তলা পর্যন্ত সম্প্রসারণ কাজ করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। পুরান ঢাকার ইসলামপুরে অনুমোদন ছাড়া ভবন নির্মাণের প্রবণতা বেশি। এখানকার মালিকরা ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে কোন নিয়ম অনুসরণ করে না। অনুমোদনহীন এসব ভবন নিয়ে রাজউকে অভিযোগের অন্ত নেই। রাজউক কর্মকর্তারা জানান, প্রয়োজনীয় জনবলের অভাবে রাজউক এসব বিষয়ে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নিতে না পারলেও ‘নিয়ম না মেনে করা’ সব ভবনকেই একদিন নিয়মের আওতায় আনা হবে। সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, ভবন নির্মাণের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড (বিএনবিসি) মেনে চলার নির্দেশনা থাকলেও বেশিরভাগ ভবন মালিকই তা মানছে না। রাজধানীসহ সারাদেশে এভাবে বিল্ডিং কোড অনুসরণ না করে একের পর এক ঝুঁকিপূর্ণ ভবন গড়ে উঠছে। এতে প্রায়ই ঘটছে দুর্ঘটনা, ঘটছে প্রাণহানিও। গত বছরের ১৫ এপ্রিল রাজধানীর রামপুরা থানা এলাকায় ঝিলের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা ঝুঁকিপূর্ণ তিনতলা টিনশেড ঘর দেবে গিয়ে ১২ জনের প্রাণহানি ঘটে। দুর্ঘটনার পর জানা গেছে, তিনতলা ভবনটি নির্মাণের ক্ষেত্রে বিল্ডিং কোড অনুসরণ তো দূরে থাক, রাজউকসহ সরকারের সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সংস্থার কোনো অনুমোদন ছিল না। জানা গেছে, সারাদেশে নিরাপদ ও ঝুঁকিমুক্ত ইমারত (ভবন) নির্মাণে আইন থাকলেও তা বাস্তবায়নে কার্যকর পদক্ষেপ নেই। ১৯৫২ সালে প্রণীত আইনের আওতায় তৈরি করা হয়েছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল বিল্ডিং কোড ও ইমারত নির্মাণ বিধিমালা। অথচ ৫ যুগ পরেও আইনটি বাস্তবায়নের কার্যকর কোনো পদক্ষেপ বা সমন্বিত কোনো উদ্যোগও নেয়া হয়নি। এতে করে সারা দেশেই ঝুঁকিপূর্ণ ভবন নির্মাণ প্রবণতা বেড়েই চলেছে। এ বিষয়ে রাজউকের একজন কর্মকর্তা বলেন, এই প্রবণতা কমিয়ে আনার জন্য ভবন নির্মাণ সম্পর্কিত আইন, কোড ও বিধি-বিধানসমূহ সঠিকভাবে বাস্তবায়নে ভবন নির্মাণকালে নজরদারি করার পরিকল্পনা করছে রাজউক। রাজউকের এ পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হলে বিএনবিসি মেনে ভবন নির্মাণ করতে হবে। সূত্রমতে, ঢাকা ডিটেইল এরিয়া প্ল্যানের (ড্যাপ) আওতাধীন এলাকায় প্রতি বছর গড়ে ৩ থেকে ৪ হাজার ভবন নির্মাণের নকশার অনুমোদন দেওয়া হয়। এর বাইরেও প্রতি বছর শত শত বহুতল ভবন নির্মাণ করা হচ্ছে কোনো প্রকার নকশা অনুমোদন ছাড়াই। পুরান ঢাকার ইসলামপুর এলাকায় এই প্রবণতা অনেক বেশি। রাজউক সূত্র জানায়, অনুমোদনবিহীন এসব ভবন একদিকে যেমন ঝুঁকিপূর্ণ অন্যদিকে তেমনি বিরোধপূর্ণ। নিয়ম না মানার কারণে ভবনের মালিকরা তাদের খেয়াল-খুশিমতো জায়গা না ছেড়েই ভবন নির্মাণ করছেন। কেউবা রাস্তার জায়গা বা অপরের জায়গার উপর ভবন নির্মাণ করছেন। এসব কারণে বিরোধ লেগেই আছে। বিরোধপূর্ণ এ ধরনের ভবন নিয়ে রাজউকে প্রতিদিনই লিখিত অভিযোগ জমা পড়ছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যবসায়ী বলেন, অনুমোদনহীন ভবন নির্মাণের কারণে তারা আশঙ্কার মাঝে রয়েছেন। এভাবে অনুমোদনহীন ভবন নির্মাণ করলে রানা প্লাজার মতো দুর্ঘটনা হতে পারে।
এ ব্যাপারে ওই ভবনের মালিক মতিয়ুর রহমান জিন্নাহর বক্তব্য জানতে একাধিকবার ফোন করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: পুরান ঢাকায় অনুমোদনহীন বহুতল ভবন নির্মিত হচ্ছে
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ