পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
![img_img-1719782974](https://old.dailyinqilab.com/resources/images/cache/169x169x3_1678437663_IMG-20230310-WA0005.jpg)
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
মোবায়েদুর রহমান : প্রায় ২ বছর হলো, সিএনজি চালিত অটো রিকসা মালিক, চালক ও সরকারের মধ্যে অটো রিকসার ভাড়া সম্পর্কে একটি ত্রিপক্ষীয় চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের পূর্বে সিএনজির যে ভাড়া ছিলো সেটি সংশোধন করে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। চুক্তি মোতাবেক পুরাতন ভাড়া প্রায় দ্বিগুণ করে নতুন ভাড়া নির্ধারণ করা হয়। একই সঙ্গে ওয়েটিং চার্জও প্রায় দ্বিগুণ করা হয়। চুক্তি স্বাক্ষরের পর মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেন, তিন পক্ষেরই সন্তুষ্টি মোতাবেক ত্রিপক্ষীয় চুক্তিতে নতুন ভাড়া নির্ধারিত হয়েছে। এখন আর ভাড়া নিয়ে যাত্রী সাধারণকে হয়রানির শিকার হতে হবে না।
এক মাসের মধ্যেই চুক্তি লঙ্ঘন
এই চুক্তি স্বাক্ষরের পর ১ মাসও অতিক্রান্ত হলো না। চালকরা চুক্তি অমান্য করতে শুরু করল। প্রথম দিকে প্যাসেঞ্জার সিএনজিতে উঠতে চাইলে চালক শর্ত দেয়, মিটারে যে ভাড়া উঠবে তার চেয়ে ২০ টাকা বেশি দিতে হবে। যাত্রীরা তো অসহায়। তাদের সামনে বিকল্প কোনো ব্যবস্থা নাই। সুতরাং চালকের শর্ত মেনে নিয়ে যাত্রীরা সিএনজিতে উঠতে শুরু করেন। এই অবস্থা ৩ মাসও টিকলো না। চালকরা অতিরিক্ত ভাড়ার বাইরে আরও ১০ টাকা দাবি করে। আবারও যাত্রী সাধারণ চালকদের কাছে জিম্মি হয়। এর সাথে যুক্ত হয় না যাওয়ার জবাব। আপনি সিএনজিকে ডেকে জিজ্ঞাসা করবেন, কলাবাগান যাবে? সাথে সাথেই উত্তর আসে, যাব না। আর যদি বা যেতে রাজি হয় সেক্ষেত্রে আলোচ্য তিন মাস পর বলে, ৩০ টাকা বেশি দিতে হবে। আবারও যাত্রীদের অসহায়ত্ব। তারা ৩০ টাকা অতিরিক্ত দিতে রাজি হয়।
প্রতিকার কোথায়?
বেবিট্যাক্সি ওয়ালাদের ইচ্ছামত অতিরিক্ত ভাড়া আদায়ের বিরুদ্ধে যাত্রীদের মৌখিক প্রতিবাদ ছাড়া প্রতিকারের অন্য কোনো রাস্তা খোলা থাকে না। এমন ক্ষেত্রে অনেক যাত্রী চালকদের এই অন্যায় দাবির বিরুদ্ধে পুলিশ বক্স, প্যাট্রল পুলিশ বা ট্রাফিক পুলিশের কাছে নালিশ করেন। কারণ সরকারের তরফ থেকে বলা হয় যে নতুন ভাড়া যদি কোনো চালক বা মালিক অমান্য করে তাহলে সাথে সাথে সেটি নিকটস্থ ট্রাফিক পুলিশ বা প্যাট্রল পুলিশ অথবা পুলিশ বক্সে জানাতে হবে। পুলিশের কাছে অভিযোগ জানালে পুলিশের তরফ থেকে বলা হয়, “ভাই, কি আর করবেন। ওদের সাথে ‘ভাও’ করুন।”
এবার কন্ট্রাক্টে চলুন
মাস খানেক পর দেখা গেলো, ২০ টাকা ৩০ টাকা অতিরিক্ত নয়, এবার তাদের বক্তব্য, ওমুক জায়গায় যাবেন? যাব, ভাড়া লাগবে ২০০ টাকা অথবা ২৫০ টাকা অথবা ৩০০ টাকা। আপনি হয়ত বললেন, ২০০/৩০০ টাকা কেনো? আপনি তো মিটারে যাবেন। চালকদের খাড়া জবাব, মিটারে গেলে পোষায় না। দেখা যায়, মিটারে গেলে যদি ভাড়া ওঠে ১২০ টাকা তাহলে চালকরা দাবি করে ২০০ টাকা। অর্থাৎ ৮০ টাকা অতিরিক্ত ভাড়া। ভাড়া যদি ওঠে ১৪০ টাকা তাহলে চালক হাঁকে ২৫০ টাকা। অর্থাৎ ১১০ টাকা বেশি।
মাননীয় মন্ত্রী, হস্তক্ষেপ করুন
সিএনজি চালকদের দৌরাত্ম্য সীমা ছাড়িয়ে গেছে। কোনো রকম আইন-কানুনের তোয়াক্কা তারা করে না। একটা না একটা বাহানা তাদের লেগেই আছে। কমন যে বাহানা সেটি হলো, স্যার, রাস্তায় খুব জ্যাম। অন্য সময় বলবে মালিক জমার টাকা বাড়িয়েছে। এই ধরনের বাহানার অন্ত নাই। অথচ জমার টাকা, রাস্তায় জ্যাম এসমস্ত ফ্যাক্টর বিবেচনায় নিয়েই তো ত্রিপক্ষীয় চুক্তি করা হয়েছিলো। চুক্তি করার সময় তিন পক্ষই ভালো ভালো বুলি কপচিয়ে ছিলেন। বলেছিলেন, তিন পক্ষই চুক্তির শর্ত কঠিনভাবে মেনে চলবে। কিন্তু কেউ চুক্তি মানেনি। সকলেই চুক্তির প্রতি বুড়ো আঙ্গুল দেখাচ্ছে। জনাব ওবায়দুল কাদের সম্পর্কে মানুষের ধারণা ভালো। তিনি সড়ক যোগাযোগের ক্ষেত্রে ব্যক্তিগতভাবে বিভিন্ন স্পটে ছোটাছুটি করেছেন। পাবলিক সেটি খবরের কাগজে দেখেছেন এবং শুনেছেন। তাকে লোকে একটিভম্যান বা সক্রিয়কর্মী হিসেবে জানে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির কোনো অভিযোগ নাই। তাই জনগণের বিপুল প্রত্যাশা, সিএনজি ড্রাইভারদের দৌরাত্ম্যে হতভাগ্য যাত্রী সাধারণের দুর্দশা লাঘবের জন্য মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের অবিলম্বে হস্তক্ষেপ করবেন। তিনি আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারি হয়েছেন। ফলে তিনি আরও ক্ষমতাবান হয়েছেন। এই ক্ষমতা তিনি জনগণের দুর্দশা লাঘবে প্রয়োগ করবেন এবং ত্রিপক্ষীয় চুক্তি মোতাবেক নির্ধারিত ভাড়া কার্যকর করতে সব পক্ষকে বাধ্য করবেন। এটি করলে একদিকে তার জনপ্রিয়তা যেমন আরও বৃদ্ধি পাবে, অন্যদিকে তিনি মানুষের দোয়াও পাবেন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।