Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

বিচারিক আদালতে কাগজের পরিবর্তে অনলাইনে ছুটি

প্রকাশের সময় : ২৬ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

মালেক মল্লিক : ডিজিটাল আর স্বপ্ন নয়, সর্বত্রই ডিজিটালাইজেশনের ছোঁয়া লেগেছে। পিছিয়ে নেই বিচার বিভাগও। সরকারের ডিজিটালাইজেশনের অংশ হিসেবে সারা দেশের বিচারিক আদালতের (জজদের) ছুটি কাগজের পরিবর্তে অন লাইনে চালু করতে যাচ্ছে সুপ্রিমকোর্ট প্রশাসন। আগামী ১ নভেম্বর থেকে এই নয়া পদ্ধতি চালু হতে যাচ্ছে। যার সুবিধা ভোগ করতে পারবেন ২১ জেলার জজরা। পরবর্তীতে সকল বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদেরকেও এর আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছে সংশ্লিষ্টরা।
তারা জানিয়েছেন, ইতোমধ্যে ডিজিটাল বিচার বিভাগের জন্য একটি কমিটি কাজ করছে এবং সফটওয়্যার তৈরি করা হয়েছে। সরকারের ডিজিটাল কর্মসূচির অংশ হিসেবে বিচার বিভাগের প্রধান বিচারপতির নির্দেশে এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে সুপ্রিমকোর্ট। এ বিষয়ে জানতে চাইলে সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেল সৈয়দ আমিনুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, আগামী ১ নভেম্বর থেকে আমরা ২১ জেলার পরীক্ষামূলকভাবে ডিজিটাল সেবা চালু করতে যাচ্ছি। ছুটি নিতে আগের মতো দীর্ঘ সময়ের পরিবর্তে জরুরি প্রয়োজনেও ছুটি পাবেন জেলা জজরা। আগে কাগজে পদ্ধতিতে ছুটি পেতে কিছুটা বিলম্ব, আবার অনেক সময় ছুটির সিদ্ধান্ত পাওয়ার আগেই হয়তো কাউকে কর্মস্থল ত্যাগ করতে হয়েছে। এখন থেকে নতুন পদ্ধতির মাধ্যমে ছুটির ব্যবস্থা হওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই ব্যবস্থা নেয়া যাবে। বিচার বিভাগকে ডিজিটাল কর্মসূচির আওতায় আনার এই উদ্যোগটিকে স্বাগত জানিয়েছেন বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা। তাদের মতে, ডিজিটালাইজেশনের যুগে এমন উদ্যোগ সবার কাম্য।
এর আগে উচ্চ আদালতে অনলাইন কার্যতালিকা, অনলাইন বেইল কনফারমেশন, ডিজিটাল পদ্ধতিতে সাক্ষ্য গ্রহণ (পরীক্ষামূলক চালু), অনলাইন বুলেটিন, বিচার বিভাগীয় তথ্য বাতায়ন, সুপ্রিমকোর্টের জাজেস লাইব্রেরিকে ই-লাইব্রেরিতে রূপান্তর করার প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা হয়েছে। এর ফলে বিচারপ্রার্থীদের ভোগান্তি যেমন কমছে, তেমনি মামলা নিষ্পত্তির হারও বেড়েছে। সর্বশেষ নয়া উদ্যোগ হলো অন লাইনে জজদের ছুটি।
সুপ্রিমকোর্ট অফিস সূত্রে জানা যায়, অনলাইনে ছুটির কার্যক্রম চালুর জন্য ইতোমধ্যে সাত বিভাগের ২১ জেলার জেলা জজকে চিঠি দেয়া হয়েছে। এই জেলাগুলো হচ্ছে কক্সবাজার, নোয়াখালী, দিনাজপুর, কুড়িগ্রাম, গাইবান্ধা, ফেনী, মৌলভীবাজার, সিলেট, বরগুনা, পটুয়াখালী, ভোলা, সাতক্ষীরা, খুলনা, যশোর, গাজীপুর, ঢাকা, পাবনা, নারায়ণগঞ্জ, নাটোর, চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও হবিগঞ্জ। অন লাইনে ছুটির আবেদন চালু হলে বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা সুপ্রিমকোর্টের ওয়েবসাইটে গিয়ে নির্দিষ্ট পাসওয়ার্ড ব্যবহারের মাধ্যমে ই-এপিকেশন সফটওয়্যারে প্রবেশ করবেন। ছুটির কারণ ও সময় লিখে অনুমতি চাইবেন। পরবর্তীতে রেজিস্ট্রার জেনারেল কার্যালয় থেকে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। ই-এপিকেশন সফটওয়্যারে অল্প সময়ের মধ্যেই তা জানতে পারবেন সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা। নতুন এই পদ্ধতির মাধ্যমে ছুটির ব্যবস্থা হওয়ায় দ্রুত সময়ের মধ্যেই ব্যবস্থা নেয়া যাবে। আর কে কতদিন ছুটিতে থাকছেন এ বিষয়ে হিসাব রাখাও সহজ হবে।
সংবিধানের ১০৯ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী নি¤œ আদালতের বিচারকদের তত্ত্বাবধান ও নিয়ন্ত্রণ করে সুপ্রিমকোর্ট। তবে বর্তমান মামলা জট নিষ্পত্তি করতে ছুটির দিনেও কর্মস্থলে অবস্থান করতে হচ্ছে বিচারকদের। তাই সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রারকে না জানিয়ে জেলা আদালতের বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তারা যেন কর্মস্থল ত্যাগ না করেন এজন্য গত বছরের ২ জুন একটি প্রজ্ঞাপন জারি করা হয়। ছুটির বিষয়ে দ্রুত সিদ্ধান্ত নিতে এবার অনলাইন ব্যবস্থা চালু করা হচ্ছে। নতুন এ সফটওয়্যার তৈরিতে সার্বিক সহযোগিতা করেছেন সুপ্রিমকোর্টের রেজিস্ট্রার জেনারেলের একান্ত সচিব মো. আতিকুস সামাদ। ডিসেম্বরে জাতীয় সম্মেলনে প্রধান বিচারপতি আনুষ্ঠানিকভাবে এই কর্মসূচি উদ্বোধন করবেন বলে জানানো হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: বিচারিক আদালতে কাগজের পরিবর্তে অনলাইনে ছুটি
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ