Inqilab Logo

রোববার ১৭ নভেম্বর ২০২৪, ০২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৪ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সুফল মিলছে না

অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগে উচ্চ করহার, নানামুখী শর্ত, দুদক-এনবিআর’র হয়রানি আগ্রহ সত্তে¡ও ঝামেলার ভয়ে দেশে বিনিয়োগ করছেন না বিভিন্ন পন্থায় বিদেশে টাকা পাচার অব্যাহত রয়েছে অর্থবছরের প

হাসান সোহেল | প্রকাশের সময় : ২০ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০৬ এএম

দেশের সুশীল সমাজ, বুদ্ধিজীবী এবং অর্থনীতিবিদদের বিরোধিতার মুখে গত জাতীয় বাজেটে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। উদ্দেশ্য ছিল অলস পড়ে থাকা অপ্রদর্শিত অর্থ দেশের শিল্প, পুঁজিবাজার, নির্মাণসহ বিভিন্ন সেক্টরে বিনিয়োগ হবে; অর্থনীতির গতি বাড়বে, সুফল পাবেন দেশের মানুষ। এতে অনেকই উদ্ধুদ্ধ হয়েছিলেন। অলস পড়ে থাকা টাকা বিনিয়োগও শুরু হয়েছিল। কিন্তু এনবিআর’র অসাধু কর্মকর্তাদের হয়রানি এবং দুর্নীতি দমন কমিশনের অহেতুক খবরদারি কারণে অনেকেরই আগ্রহ কম ছিল। আর চলতি বাজেটে আরো কিছু শর্তজুড়ে দেয়া হয়। নতুন শর্তে কালোটাকা সাদা করতে হলে, একজন করদাতাকে প্রায় ২৭ শতাংশ পর্যন্ত কর পরিশোধ করতে হচ্ছে। যা অত্যন্ত বেশি। এত বেশি উচ্চহারে কর দিয়ে টাকা বৈধ করতে অনেকেই নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। ফলে প্রত্যাশিত সাড়া মিলছে না। চলতি অর্থবছরের বাজেটে শেয়ারবাজারসহ বিভিন্ন খাতে প্রযোজ্য কর হার এবং তার সঙ্গে ‘অতিরিক্ত’ ৫ শতাংশ জরিমানা দিয়ে টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়। এটিও অর্থমন্ত্রণালয়ের একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। ফলে যে প্রত্যাশা নিয়ে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল তা সফল হচ্ছে না। অথচ দেশ থেকে প্রতিবছর টাকা পাচার অব্যাহত রয়েছে। কেউ কেউ দেশ থেকে টাকা বিদেশে নিয়ে সেখানে বিনিয়োগ করছেন। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, দেশের টাকা দেশেই বিনিয়োগের সুযোগ নিতে সবাই চায়। কিন্তু দুদক আর এনবিআরের অহেতুক ঝামেলায় কেউই পড়তে চায় না। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এক বিনিয়োগকারী বললেন, টাকা থাকলে সেটা বাড়বেই; জেনেশুনে ঝামেলায় পড়তে হবে, কে বিনিয়োগ করতে চায়?
কালো টাকা বা অপ্রদর্শিত অর্থ। দুর্নীতিবিরোধী সংস্থা টিআইবির করা ‘অদৃশ্য অর্থনীতি’ শীর্ষক এক গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, জিডিপির ১০ থেকে ৩৮ শতাংশের মধ্যে কালো টাকা ওঠানামা করে। অবশ্য সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, সুইজারল্যান্ডের বিভিন্ন ব্যাংকে (সুইস ব্যাংক) বাংলাদেশিদের টাকার পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৬ কোটি ২৯ লাখ ফ্র্যাংক। বাংলাদেশি মুদ্রায় যা ৫ হাজার ২৯১ কোটি টাকা (প্রতি সুইস ফ্র্যাংক ৯৪ টাকা হিসাবে)। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গেøাবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত (২০১৪ সালের হিসাব বাদে) ছয় বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ৯০ টাকা ধরলে স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। এ হিসাবে উল্লিখিত সময়ে গড়ে প্রতিবছর পাচার হয়েছে ৮২৭ কোটি ডলার বা প্রায় ৭৪ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০১৫ সালে পাচার হয়েছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি। যদিও বাংলাদেশ থেকে বৈধভাবে কাউকে এসব ব্যাংকে টাকা নেয়ার অনুমতি দেয়া হয়নি। এমনকি পাচারের যে তথ্য উঠে আসছে তা যে পরিমাণ অর্থ পাচার হচ্ছে তার কিছু অংশ। তবে অধিকাংশ ব্যাংকই গ্রাহকের স্বার্থে তথ্য দেয় না। গুটি কয়েক ব্যাংক তথ্য দেয় যার পরিসংখ্যানেই প্রতিবছর প্রায় ৫০ হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার হচ্ছে। যা দেশের অর্থনীতিতে মারাত্মক নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, সুইস ব্যাংক বা জিএফআই’র এ টাকার সবই অপ্রদর্শিত বা কালো টাকা। এর অধিকাংশই বাংলাদেশ থেকে পাচার হয়ে সেখানে গেছে। অথচ নির্ধারিত হারে কর দিয়ে বিভিন্ন সংস্থার দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হয়রানিমূলক তদারকি ছাড়া এ অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দিলে দেশ ও দেশের অর্থনীতির জন্য মঙ্গল হতো। একই সঙ্গে দেশে নতুন নতুন বিনিয়োগ-কর্মসংস্থানের সুযোগ তৈরি হতো। এতে একদিকে দেশের অর্থনীতি চাঙা হতো। পাশাপাশি বিদেশে বিনিয়োগ বা পাচারের বদলে অপ্রদর্শিত অর্থের মালিকরা নিজ দেশে বিনিয়োগে উৎসাহী হতেন। অর্থনীতিবিদ ও রাজস্ব বিশেষজ্ঞরা বলছেন, সরকারের কঠোর শর্তের কারণে এ বছর অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগে সাড়া মিলছে না তেমন। উচ্চ হারে কর আরোপের কারণে এ সুযোগ নেয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না করদাতারা।

ব্যবসায়ী ও শিল্পপতিরাও বলছেন, এ সুযোগ পেলে দেশে বিনিয়োগ বাড়বে; চাঙা হবে দেশের অর্থনীতি। শুধু তাই নয়, বিদেশে টাকা পাচারের প্রবণতাও কমে আসবে। এর আগে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালও তার বাজেট বক্তব্যেও প্রত্যাশা করেছেন, অপ্রদর্শিত অর্থ ব্যবহারের সুযোগ দেশে নতুন নতুন বিনিয়োগের পথ সৃষ্টি করবে। বিদেশে বিনিয়োগ বা পাচারের বদলে অপ্রদর্শিত অর্থের মালিকরা নিজ দেশে বিনিয়োগে উৎসাহী হবেন।

কিন্তু সরকারের কঠিন শর্ত, দুদক এবং এনবিআর’র অসাধু কর্মকর্তাদের হয়রানির কারণে অপ্রদর্শিত অর্থ ‘সাদা’ করার চিন্তা করতে পারছেন না বিনিয়োগকারা। কারণ কালো টাকা পাচারে সাধারণত এ রকম কোন হয়রানিতে পড়তে হয় না তাদের। তাই অপ্রদর্শিত অর্থ দেশের অর্থনীতির মূল ধারায় আসছে না।

কালো টাকার প্রকৃত পরিমাণ জানা না গেলেও গবেষক ও অর্থনীতিবিদ ড. আবুল বারকাতের গবেষণামূলক ‘বড় পর্দায় সমাজ-অর্থনীতি-রাষ্ট্র’ নামের গ্রন্থের তথ্য অনুযায়ী, দেশে প্রতিবছর কালো টাকার পরিমাণ বেড়েছে। এ বইতে দেখানো হয়েছে- ১৯৭২-৭৩ থেকে ২০১৮-১৯ অর্থবছর পর্যন্ত ৪৭ বছরে কালো টাকা হয়েছে ৮৮ লাখ ৬১ হাজার ৪৩৭ কোটি টাকা। এর মধ্যে ১৯৭২-৭৩ অর্থবছরে কালো টাকা হয়েছে ১৮ হাজার ১১৭ কোটি টাকা। ১৯৭৩-৭৪ এ অংক বেড়ে দাঁড়ায় ২৬ হাজার ৬৯৬ কোটি টাকা। এভাবে প্রতি বছরই কালো টাকার পরিমাণ বেড়েছে।

সূত্র মতে, নগদ টাকা, ব্যাংকে রাখা টাকা, সঞ্চয়পত্র কিনেও টাকা সাদা করা যাবে। একইভাবে শেয়ার বাজারে বিনিয়োগ করতে চাইলে একই হারে কর ও জরিমানা দিয়ে কালো টাকা সাদা করা যাবে। জমি ও ফ্ল্যাট কিনে এলাকা ও আয়তন ভেদে নির্ধারিত কর দিয়ে কালোটাকা সাদা করা যাবে। তবে আগের অর্থবছরের মতো ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে নয়। এবার কালো টাকা সাদা করতে হলে ২৫ শতাংশ কর এবং ওই করের ওপর ৫ শতাংশ জরিমানা দিতে হবে।

সূত্র জানায়, সরকারের কঠোর শর্তের কারণে কালো টাকা সাদা করার সুযোগে সাড়া মিলছে না তেমন। উচ্চ হারে কর আরোপ এবং বিভিন্ন সংস্থার হয়রানি এড়াতে এ সুযোগ নেয়ার বিষয়ে আগ্রহ দেখাচ্ছেন না করদাতারা। এমনকি বিদেশে সেকেন্ড হোম ক্রয়ে বৈধ সুযোগ থাকলেও বড় অঙ্কের অর্থ পেত সরকার। এ রকম কোনো নীতিমালা না থাকায় সেকেন্ড হোম বা বিদেশি ব্যাংকে অবৈধভাবে টাকা পাচার বাড়ছে। আর কোনো ধরনের ঝামেলা ছাড়াই টাকা পাচার করতে পারায় যাদের কালোটাকা সাদা করার ইচ্ছে আছে, তারাও অযথা হয়রানি এড়াতে এ সুযোগ নিচ্ছে না। তাই এ বছর কালোটাকা সাদা করায় সাড়া মিলছে খুব কমই।

সূত্রমতে, অপ্রদর্শিত অর্থ বা কালোটাকাকে অর্থনীতির মূল ধারায় আনতে ও দেশে বিনিয়োগ চাঙা করতে চলতি অর্থবছরে যে সুযোগ দিয়েছে সরকার, তাতে দেখা গেছে, অর্থবছরের প্রথম প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর) মাত্র ১২২ জন টাকা বৈধ করেছেন। তারা মাত্র ১৫ কোটি টাকা সাদা করেছেন। এর বিপরীতে সরকার কর পেয়েছে মাত্র ৩ কোটি ৩০ লাখ টাকা। যা উচ্চ করহার ও নানা শর্তের কারণে বলে মনে করছেন সংশ্লিরা। জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) হালনাগাদ পরিসংখ্যানে দেখা যায়, চলতি ২০২১-২২ অর্থবছরের প্রথম তিন মাসে শেয়ারবাজারে মাত্র একজন ৩০ লাখ টাকা সাদা করেছেন। এর বিনিময়ে সরকারি কোষাগারে কর হিসেবে জমা হয়েছে ১ লাখ টাকা।

অর্থনীতিবিদরা বলছেন, বিদ্যমান নিয়মে কালোটাকা সাদা করতে হলে একজন করদাতাকে প্রায় ২৭ শতাংশ পর্যন্ত কর পরিশোধ করতে হবে। এ হার অত্যন্ত বেশি। এত বেশি উচ্চহারে কর দিয়ে টাকা বৈধ করতে অনেকেই নিরুৎসাহিত হচ্ছেন। ফলে প্রত্যাশিত সাড়া মিলছে না। চলতি অর্থবছরের বাজেটে শেয়ারবাজারসহ বিভিন্ন খাতে প্রযোজ্য কর হার এবং তার সঙ্গে ‘অতিরিক্ত’ ৫ শতাংশ জরিমানা দিয়ে টাকা সাদা করার সুযোগ দেয়া হয়। এটিও একটি ভুল সিদ্ধান্ত ছিল। তাই শেয়ারবাজারে বিনিয়োগেও উৎসাহী হচ্ছে না কালো টাকার মালিকরা। এছাড়া কেউ এ শর্ত মেনে সরকারের দেয়া এ সুযোগ গ্রহণ করলে এনবিআর, দুদকসহ অন্য কোনো গোয়েন্দা সংস্থা তার আয়ের উৎস সম্পর্কে কোনো প্রশ্ন করবে না বলা হলেও এসব সংস্থার একটি অসাধুচক্র ঠিকই হয়রানি করছে। তাই হয়রানি এড়াতে বিনিয়োগে আগ্রহ থাকছে না কালো টাকার মালিকদের।

গত অর্থবছরে শেয়ারবাজার, নগদ টাকা, ব্যাংকে গচ্ছিত টাকা, সঞ্চয়পত্র, জমি ক্রয়ে শুধু ১০ শতাংশ কর দিয়ে ঢালাওভাবে কালোটাকা বৈধ করার সুযোগ দেয়া হয়েছিল। অর্থাৎ নতুন নিয়মে কালোটাকা সাদা করার সুযোগ বহাল রাখা হলো ঠিকই, কিন্তু এবার শর্ত কঠোর করা হলো। তবে শেয়ারবাজারে এ সুযোগ নিয়ে কেউ এক বছর পর্যন্ত ‘লকইন’ না রাখলে তাকে ‘অতিরিক্ত’ ১০ শতাংশ জরিমানা দিয়ে কালোটাকা সাদা করতে হবে। এনবিআরের তথ্য অনুযায়ী, আগের বছর প্রায় ১২ হাজার জন সাদা করেছেন ২০ হাজার ৬০০ কোটি টাকা। ঘোষিত টাকা থেকে সরকার কর পেয়েছে ২ হাজার কোটি টাকা।

করোনা মহামারির কারণে দেশের অর্থনীতি বিপর্যস্ত। বেসরকারি বিনিয়োগ নেই বললেই চলে। তাই বিশেষজ্ঞরা অর্থনীতিকে চাঙা করতে দুদক-এনবিআর’র অসাধু কর্মকর্তাদের হয়রানি বন্ধ করে বিনা প্রশ্নে কালোটাকা সাদা করার সুযোগের কথা বলেছেন। এনবিআর’র সাবেক সদস্য আমিনুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, মাঝেমধ্যে বিভিন্ন রিপোর্টে পাচারের যে তথ্য উঠে আসছে তা খুবই নগণ্য। বাস্তবে পাচার হচ্ছে তার চেয়েও অনেক বেশি। সংখ্যাটা অকল্পনীয়। তিনি বলেন, যে তথ্য আসছে সেটি ব্যাংকের মাধ্যমে যে অর্থ পাচার হয়েছে তার কিছু অংশ। তবে অধিকাংশ ব্যাংকই গ্রাহকের স্বার্থে তথ্য দেয় না। গুটি কয়েক ব্যাংক তথ্য দেয় তার পরিসংখ্যানই এ হিসাব।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এনবিআর’র সাবেক এক ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা বলেন, কালোটাকা দেশে বিনিয়োগে নানা শর্ত থাকে। অথচ পাচারে কোনো শর্ত নেই। তাই মানুষ ঝামেলা এড়াতে বিদেশে অর্থ পাচারে উদ্ধুদ্ধ হচ্ছে। কোনোভাবেই পাচার রোধ করা যাচ্ছে না। অথচ কালোটাকা বিনিয়োগে ছাড় দিয়ে দেশের স্বার্থে দেশের অর্থনীতির স্বার্থে বিনিয়োগের সুযোগ দিলে দেশের লাভ হতো। নতুন বিনিয়োগ ও কর্মসংস্থান তৈরি হতো। তবে এনবিআর অপ্রদর্শিত অর্থ বিনিয়োগে কোনো প্রশ্ন করে না বলেও উল্লেখ করেন তিনি। উদাহরণ হিসেবে তিনি বলেন, ওয়ান-ইলেভেন নামে খ্যাত তত্ত্বাবধায়ক সরকারের সময় ব্যবসায়ীরা দুদকের মাধ্যমে অর্থ সাদা করেছে নয় হাজার ৬৮২ কোটি টাকা। যদিও পরে এসব ব্যক্তিদের নানাভাবে হয়রানি করেছে দুদক।

জানতে চাইলে এফবিসিসিআই’র সাবেক সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিম বলেন, অপ্রদর্শিত অর্থ বলতে যারা বৈধপথে আয় করেছে; কিন্তু কোনো কারণে কর পরিশোধ করেননি। ওইসব অর্থ বিনিয়োগের পক্ষে আমরা।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের পরিচালক রকিবুর রহমান বলেছেন, দীর্ঘদিন থেকে শেয়ারবাজারে মন্দাবস্থা চলছে। পাশাপাশি করোনায় বিপর্যস্ত অর্থনীতি। দেশের অর্থনীতির জন্য অপ্রদর্শিত টাকা খুবই প্রয়োজন। তাই পুঁজিবাজারে শর্তহীনভাবে এ টাকা বিনিয়োগের সুযোগ দিতে হবে।

আবাসন খাতের ব্যবসায়ীদের সংগঠন রিহ্যাবের সভাপতি আলমগীর শামসুল আলামিন কাজল ইনকিলাবকে বলেন, পাচার রুখতে বিনাশর্তে কালোটাকা বিনিয়োগের সুযোগ চাই। এতে দেশের অর্থনীতি চাঙা হবে। দেশের টাকা দেশে থাকবে। তবে এখন আগের মতো এনবিআর বা দুদকের হয়রানি নেই, তারপরও আবাসন খাতে বিনিয়োগ কম কেন জানতে চাইলে আলমগীর শামসুল আলামিন বলেন, টাকা পাচার কেন হচ্ছে- বের করতে রিহ্যাব একটি গবেষণা করছে। গবেষণার ফলাফল এখনো পাইনি।

বিজিএমইএ’র সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের শিল্প ও বাণিজ্যবিষয়ক সম্পাদক মো. সিদ্দিকুর রহমান ইনকিলাবকে বলেন, কালোটাকা, সাদা টাকা বলে কোনো কথা নেই। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নিজেই বলেছেন, অর্থ পাচার বন্ধে ও বেসরকারি বিনিয়োগ বাড়ানোর মাধ্যমে কর্মসংস্থান সৃষ্টির জন্য এই অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া হচ্ছে। বৈধভাবে আয় করা অর্থ বিনিয়োগ করা যাবে। এতে বিনিয়োগ বাড়ার পাশাপাশি বিদেশে অর্থ পাচার কমে যাবে। তাই দেশের স্বার্থে হয়রানি ছাড়া এ অর্থ বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া দরকার বলে মনে করেন তিনি।



 

Show all comments
  • হুসাইন আহমেদ হেলাল ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:২৬ এএম says : 0
    পুঁজিবাজারসহ বেশ কয়েকটি খাতে কালো টাকা হিসেবে অধিক পরিচিত ‘অপ্রদর্শিত অর্থ’ সাদা করার অবাধ সুযোগ দিতে হবে।
    Total Reply(0) Reply
  • মোঃ কামরুজ্জামান ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:২৭ এএম says : 0
    গত বাজেটে শুধু চলতি অর্থবছরের জন্য কিছু ক্ষেত্রে প্রশ্ন ছাড়াই কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়েছিল।
    Total Reply(0) Reply
  • সুশান্ত কুমার্ ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:২৭ এএম says : 0
    হাইটেক পার্ক ও অর্থনৈতিক অঞ্চল ছাড়াও চলতি অর্থবছরে জমি, বিল্ডিং, ফ্ল্যাট ও অ্যাপার্টমেন্টের উপর প্রতি বর্গমিটারের উপর নির্দিষ্ট হারে এবং গচ্ছিত অর্থ, সঞ্চয়পত্র, শেয়ার, বন্ড বা অন্য কোনো সিকিউরিটিজের উপর ১০ শতাংশ হারে কর দিয়ে কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দেওয়া হয়।
    Total Reply(0) Reply
  • নিলিমা জাহান তনুশ্রী ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:২৮ এএম says : 0
    কালো টাকা সাদা করার চিত্রটি আশাব্যঞ্জক নয়। ভবিষ্যতে তথ্য গোপন থাকবে না— এমন আশঙ্কা থেকেও অনেকে সাদা করতে চান না। আর রাঘব বোয়ালেরা বিদেশে পাচার করতেই বেশি স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করেন বলে অভিযোগ আছে।
    Total Reply(0) Reply
  • নাজমুল হাসান ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:২৯ এএম says : 0
    সরকার একদিকে সুশাসনের কথা বলছে, দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স নীতির কথা বার বার উচ্চারণ করছে, আবার কালো টাকা সাদা করার সুযোগ দিচ্ছে
    Total Reply(0) Reply
  • কায়কোবাদ মিলন ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:৩০ এএম says : 0
    কালো টাকা প্রতিনিয়ত আমাদের অর্থনীতিতে ঢুকছে৷ এতে দুই ধরনের সমস্যা হচ্ছে৷ প্রথমত, সরকার রাজস্ব থেকে বঞ্চিত হচ্ছে৷ আর যারা সৎ বিনিয়োগকারী, তারা কালো টাকার সঙ্গে পেরে ওঠেন না৷ ফলে অর্থনীতিতে ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে৷ বিশ্বব্যাংক অবৈধ আয়ের কালো টাকার উৎস হিসেবে মাদক ব্যবসা, অবৈধ ব্যবসা, ঘুষ ও দুর্নীতিকে চিহ্নিত করেছে৷
    Total Reply(0) Reply
  • রুদ্র মোহাম্মদ শাকিল ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:৩০ এএম says : 0
    চলতি অর্থবছরের বাজেটে ঢালাওভাবে কালোটাকা সাদা করার যে সুযোগ দেওয়া হয়েছিল, কিছু মানুষ সুযোগটি কাজে লাগিয়েছেন।
    Total Reply(0) Reply
  • বিধান কবিরাজ ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:৩১ এএম says : 0
    অবৈধ কাজকে বৈধ করার আইনগত সুযোগ দেওয়ার এই বিষয়টি কারও কাছে গ্রহণযোগ্য নয়। অনৈতিক একটা বিষয়কে বৈধ করার সুযোগ দেওয়া হলে সৎ করদাতাদের মধ্যে হতাশার সৃষ্টি হয় এবং এটা সামগ্রিকভাবে দুর্নীতিকেই উৎসাহিত করে। প্রকারান্তরে এর মাধ্যমে দুর্নীতিকে রাষ্ট্রীয়ভাবে পৃষ্ঠপোষকতা করা হচ্ছে।
    Total Reply(0) Reply
  • jack ali ১৯ ডিসেম্বর, ২০২১, ৪:৪১ পিএম says : 0
    সুফল কিভাবে হবে আল্লাহর শত্রুরা দেশ চালায় যদি আল্লাহর নিয়মে দেশ চলতো তাহলে সবকিছুর মধ্যে বরকত হত....আমরা সাধারণ মানুষ এদের হাতে জিম্মি আমরা কত কষ্টের মধ্যে আছি
    Total Reply(0) Reply

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: সুফল মিলছে না

২০ ডিসেম্বর, ২০২১
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ