Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

দেশ থেকে ৪৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছে

২০০৯ থেকে ২০১৫ ছয় বছরের তথ্য

অর্থনৈতিক রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ ডিসেম্বর, ২০২১, ১২:০০ এএম

বাণিজ্যের আড়ালে বিশ্বের উন্নয়নশীল ১৩৪ দেশ থেকে এক দশমিক ছয় ট্রিলিয়ন বা ১ লাখ ৬০ হাজার কোটি (১ ট্রিলিয়নে ১ লাখ কোটি) ডলার পাচার হয়েছে। যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক আন্তর্জাতিক সংস্থা গেøাবাল ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টিগ্রিটির (জিএফআই) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য উঠে এসেছে। গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত জিএফআইয়ের এ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়। প্রতিবেদনের রিপোর্ট অনুযায়ী, এ সময়ে সবচেয়ে বেশি অর্থ পাচার করা হয়েছে চীন থেকে। এরপরই আছে পোল্যান্ড, ভারত, রাশিয়া ও মালয়েশিয়া।

জিএফআইয়ের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ২০০৯ থেকে ২০১৫ সাল পর্যন্ত (২০১৪ সালের হিসাব বাদে) ছয় বছরে বাংলাদেশ থেকে ৪ হাজার ৯৬৫ কোটি ডলার পাচার হয়েছে। প্রতি ডলারের বিনিময়মূল্য ৯০ টাকা ধরলে স্থানীয় মুদ্রায় যার পরিমাণ প্রায় ৪ লাখ ৪৬ হাজার কোটি টাকা। এ হিসাবে উল্লিখিত সময়ে গড়ে প্রতিবছর পাচার হয়েছে ৮২৭ কোটি ডলার বা প্রায় ৭৪ হাজার ৪৭৫ কোটি টাকা। এর মধ্যে ২০১৫ সালে পাচার হয়েছে এক লাখ কোটি টাকার বেশি।

প্রতিবেদনে ১৩৪টি উদীয়মান ও উন্নয়নশীল দেশের গত ১০ বছরের (২০০৯-২০১৮) আন্তর্জাতিক বাণিজ্যে মূল্য ঘোষণার গরমিল দেখিয়ে কীভাবে দেশ থেকে অর্থ পাচার হয়, সেই চিত্র তুলে ধরা হয়েছে। পাশাপাশি ৩৬টি উন্নত দেশের সঙ্গে তুলনামূলক চিত্রও তুলে ধরা হয়েছে প্রতিবেদনে। আমদানি-রফতানিকারকেরা পণ্য আমদানি-রফতানির সময় প্রকৃত মূল্য না দেখিয়ে কমবেশি দেখানোর মাধ্যমে অর্থপাচার করে।

পণ্যমূল্যের প্রকৃত মূল্য ও ঘোষিত বা দেখানো মূল্যের তারতম্যের ভিত্তিতে জিএফআই প্রতিবেদনটি তৈরি করেছে। প্রতিবেদনে ২০১৮ সালে ১৩৪টি উন্নয়নশীল দেশ ও ৩৬টি উন্নত অর্থনীতির দেশের মধ্যে বাণিজ্যে ৮৩ হাজার ৫০০ কোটি ডলারের ব্যবধান চিহ্নিত করা হয়েছে। তবে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে ২০১৪, ২০১৬, ২০১৭ ও ২০১৮ সালের তথ্য-উপাত্ত দেওয়া হয়নি ওই প্রতিবেদনে। ২০১৫ সালের পর থেকে জিএফআইয়ের প্রতিবেদনে বাংলাদেশের কোনো তথ্য নেই। তাই প্রতিবেদনে বাংলাদেশের যে তথ্য দেওয়া হয়েছে, তা ২০১৫ সালের আগের। ২০০৯ থেকে ২০১৫ সালের প্রাপ্ত তথ্যের ভিত্তিতে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বাংলাদেশের সঙ্গে অন্য সব দেশের যত আমদানি-রফতানি হয়, তাতে গড়ে ১৭ দশমিক ৩ শতাংশের মূল্য ঘোষণায় গরমিল থাকে।
জিএফআইয়ের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সাধারণত দুটি প্রক্রিয়ায় অর্থ পাচার হয়েছে। এর মধ্যে আছে বিদেশ থেকে পণ্য আমদানির মূল্য বেশি দেখানো (ওভার ইনভয়েসিং) এবং রফতানিতে মূল্য কম দেখানো (আন্ডার ইনভয়েসিং)। দুই প্রক্রিয়াতেই বিদেশে অর্থ পাচার করা হয়। জিএফআইয়ের প্রতিবেদনে আরও বলা হয়েছে, ২০০৯ সালের পরে বাংলাদেশের ক্ষেত্রে মূল্য ঘোষণায় গরমিল দেখিয়ে অর্থ পাচারের পরিমাণ বেড়েছে।

এর মধ্যে ২০১৫ সালে সর্বোচ্চ ১ হাজার ১৮৭ কোটি ১০ লাখ ডলার পাচার হয়েছে। ২০০৯ সালে যার পরিমাণ ছিল ৫২১ কোটি ২০ লাখ ডলার। এ ছাড়া ২০১০ সালে ৬৮৪ কোটি ডলার, ২০১১ সালে ৮৭৩ কোটি ডলার, ২০১২ সালে ৭৬৪ কোটি ৭০ লাখ ডলার ও ২০১৩ সালে ৯৩৪ কোটি ৮০ লাখ ডলার পাচার করা হয় বলে প্রতিবেদনে বলা হয়েছে।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: কোটি ডলার পাচার
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ