Inqilab Logo

শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক-মির্জা ফখরুল

প্রকাশের সময় : ২৫ অক্টোবর, ২০১৬, ১২:০০ এএম

স্টাফ রিপোর্টার : জাতীয় কাউন্সিলে দেয়া আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনার বক্তব্যকে গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। গতকাল সোমবার এক আলোচনা সভায় মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ মন্তব্য করেন।
বিএনপির সাবেক ভাইস-চেয়ারম্যান আফসার আহমদ সিদ্দিকীর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটিতে (ডিআরইউ) এ আলোচনা সভার আয়োজন করে আফসার সিদ্দিকী স্মৃতি ফাউন্ডেশন।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, কাউন্সিলের শেষ সেশনে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী যে কথাগুলো বলেছেন, তা গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক কথা। তিনি পরিষ্কার বলেছেন, বিএনপিকে ক্ষমতায় আসতে দেয়া হবে না। এর সঙ্গে তিনি এটাও বলেছেন, আগামীবার আওয়ামী লীগকে অবশ্যই ক্ষমতায় আসতেই হবে যে কোনো মূল্যে। এ কথাগুলো থেকে এটা পরিষ্কার হয়ে গেছে তাদের লক্ষ্য কী এবং তারা কী করতে চান।
তিনি বলেন, উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে বিদেশি মেহমানরা ছিলেন, তাদের সামনে খুব বড় গলায় আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বক্তৃতায় বলেছেন, তারা গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেছে, তারাই গণতন্ত্রকে বিকশিত করতে চায়।
আওয়ামী লীগ সরকার অনৈতিকভাবে দেশ শাসন করছে এমন অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, তারা গণতন্ত্রের সব স্তর ভেঙে দিয়েছে। ভোটের অধিকার, মানুষের কথা বলার, লেখার, সমবেত হওয়ার, প্রতিবাদ করার অধিকার কেড়ে নিয়েছে। এমন একটি সরকার যারা একটি কর্তৃত্বপরায়ণ সরকার প্রতি মুহূর্তে মিথ্যাচার করে জনগণের দৃষ্টি ফেরানোর জন্য বিভিন্ন ধরনের অপকৌশলের আশ্রয় নেয়।
তিনি বলেন, ১৯৭১-এ স্বাধীনতা যুদ্ধের পর ক্ষমতায় এসে ১৯৭২ থেকে ৭৫ সাল পর্যন্ত তারা গণতন্ত্রকে ধ্বংস করেছে। তাদের দুঃশাসনের কারণে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ হয়েছে। সে কথাটা আমরা অনেকে ভুলে গেছি। তখন তারা সবক্ষেত্রে ব্যর্থ হয়ে একদলীয় শাসনব্যবস্থা কায়েম করেছে।
তিনি বলেন, আজকে যুগ পাল্টেছে, সময় পাল্টেছে, বিভিন্ন ব্যাখ্যাও পাল্টেছে, এখন গণতন্ত্রের ব্যাখ্যাও পাল্টে গেছে। সেই জায়গায় আসছে উন্নয়ন না গণতন্ত্র। তারা বলছে, উন্নয়ন আগে এবং পরে গণতন্ত্র।
মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, আজকে আরেকটি কথা আসছে, ইফেক্টিভ গভর্নমেন্ট। অর্থাৎ যারা অত্যাচার-নির্যাতন করে, দমননীতি চালিয়ে বিরোধীদলকে নিশ্চুপ করে রাখতে পারে, সে সরকার হচ্ছে ইফেক্টিভ গভর্নমেন্ট। এর মধ্যে দিয়ে তারা বাংলাদেশের জনগণের রক্ত দিয়ে অর্জিত মুক্তিযুদ্ধের চেতনাকে হরণ করছে। এখন তারা স্বপ্ন দেখছে ৪১ সাল পর্যন্ত ক্ষমতায় থাকবে। সে স্বপ্ন তারা দেখতে শুরু করেছে।
আগামী নির্বাচনের জন্য নেতা-কর্মীদের প্রস্তুতি নেয়ার জন্য আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের প্রতি দলের সভানেত্রীর নির্দেশ প্রসঙ্গে মির্জা ফখরুল ইসলাম বলেন, প্রস্তুতির দরকার কি? আপনারা তো গতবার রাষ্ট্রযন্ত্রকে ব্যবহার করে ক্ষমতায় চলে এসেছেন বিনা ভোটে। ভোটের বা দরকার কি? ঘোষণা করে দিলেই হয়, আমরা আবার পাঁচ বছরের জন্য ক্ষমতায় চলে গেলাম। তাহলে তো এ নাটকের প্রয়োজন নেই।
বর্তমান নির্বাচন কমিশনকে সরকারের নীলনকশা বাস্তবায়নের সহযোগী মন্তব্য করে তিনি বলেন, এদের তো বিচার হওয়া উচিত। সময় যদি আসে তাহলে অবশ্যই এদের বিচার হবে। আমরা নিরপেক্ষ প্রতিষ্ঠান হিসেবে নির্বাচন কমিশন চাই। অন্যথায় সাজানো নির্বাচন কমিশন জনগণ মেনে নিবে না।
আলোচনায় অংশ নিয়ে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য নজাংল ইসলাম খান বলেন, অতীতে সার্চ কমিটির নামে এমন লোক খুঁজে বের করা হয়েছে যাদের সত্যিকারের অর্থে কোনো মেরুদ- নেই। যারা আইনের ভেতর চলতে পারে না। বরং ব্যক্তি বিশেষের ইচ্ছায় কাজ করেছে। আবারো এ ধরনের ব্যত্যয় ঘটলে তা মেনে নেয়া হবে না। প্রতিবাদ করা হবে। আলোচনা সভায় আফসার আহমদ সিদ্দিকীর স্মৃতিচারণ করে বক্তব্য রাখেন বিএনপি নেতারা।



 

দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।

ঘটনাপ্রবাহ: প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য গণতন্ত্রের জন্য বিপজ্জনক-মির্জা ফখরুল
আরও পড়ুন
এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ
গত​ ৭ দিনের সর্বাধিক পঠিত সংবাদ