পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
রফিকুল ইসলাম সেলিম : ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের জৌলুসপূর্ণ ২০তম সম্মেলনের পর বন্দরনগরীসহ বৃহত্তর চট্টগ্রামের তৃণমূল নেতা-কর্মীরা এখন নতুন করে উজ্জীবিত। প্রাণচাঞ্চল্য ফিরে এসেছে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে। জাতীয় সম্মেলনে দেয়া দলীয় সভানেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনা মেনে খুব শিগগির নির্বাচনমুখী তৎপরতায় শামিল সম্মেলন ফেরত নেতারা, এমন প্রত্যাশা তৃণমূলের। তারা বলছেন, আগামী দিনের রাজনীতি ও জাতীয় নির্বাচন তথা ক্ষমতায় যাওয়ার ক্ষেত্রে টার্নিং পয়েন্ট হবে সদ্য সমাপ্ত এই সম্মেলন।
তাদের মতে, এবারের সম্মেলনে সবচেয়ে বড় চমক ওয়াবদুল কাদেরের সাধারণ সম্পাদক হওয়া। ঐহিত্যবাহী ওই রাজনৈতিক দলের দুই দিনব্যাপী সম্মেলনে শেষ দিনের কাউন্সিলে ৮১ সদস্যের কমিটির মধ্যে সভাপতি-সাধারণ সম্পাদকসহ ২৩টি পদে নেতা নির্বাচন হয়েছে। বাকি কমিটি পরে ঘোষণা করা হবে। এর ফলে সম্মেলন ও কাউন্সিল শেষ হয়ে গেলেও চমক এখনো শেষ হয়নি। পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা না হওয়া পর্যন্ত তৃণমূলের দৃষ্টি থাকবে কেন্দ্রে।
কাউন্সিলে ২৩টি পদে নেতাদের নাম ঘোষণা করা হলেও সেখানে শুধুমাত্র প্রেসিডিয়াম সদস্য পদে দ্বিতীয়বারের মতো বহাল হলেন চট্টগ্রামের নেতা ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। এতে করে কেন্দ্রে পদ প্রত্যাশী এখানকার অন্যান্য নেতাদের অপেক্ষার প্রহর আরো দীর্ঘ হচ্ছে।
গত শনিবার ও রোববার ঢাকায় অনুষ্ঠিত আওয়ামী লীগের এ যাবৎকালের সবচেয়ে জমকালো সম্মেলনে কাউন্সিলর, প্রতিনিধিসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলের কয়েক হাজার নেতা যোগ দেন। যারা সম্মেলনে যেতে পারেননি তাদের দৃষ্টি ছিল সম্মেলনকে ঘিরে ঢাকায়। মিডিয়ার কারণে সম্মেলনের সাথে তারাও একাত্ম হতে পেরেছেন। প্রতি মুহূর্তে সর্বশেষ খবর জেনেছেন। গত কয়েক দিন ধরে নেতাকর্মী ও সমর্থকদের মধ্যে দলের এই বিশাল আয়োজন নিয়ে ছিল নানা আলোচনা। সম্মেলন শেষে নতুন কমিটি ও সম্মেলনে দেয়া প্রধানমন্ত্রীর বক্তব্য নিয়েও তাদের মধ্যে আলোচনা হচ্ছে।
মহানগর জেলার তৃণমূল পর্যায়ে কয়েকজন নেতার সাথে কথা হয়। তারা বলেন, সম্মেলনের উদ্বোধনী ভাষণে আওয়ামী লীগ সভানেত্রী দলের নেতাকর্মীদের আগামী নির্বাচনের প্রস্তুতি নিতে বলেছেন। আর এ জন্য তিনি মানুষের তথা ভোটারদের কাছে যাওয়ার নির্দেশনা দিয়েছেন। তার এই বক্তব্যকে অর্থবহ বলছেন তৃণমূলের নেতাকর্মীরা। তারা বলছেন, এর মাধ্যমে তিনি আগামী দিনে ‘অংশগ্রহণমূলক’ নির্বাচনের আভাস দিয়েছেন। হয়তোবা এ কারণেই দুই বছর আগ থেকে নির্বাচনী কর্মকা- শুরুর নির্দেশনা দিয়েছেন তিনি।
আগামী জাতীয় নির্বাচনকে ঘিরে সামনের দিনগুলোতে রাজনৈতিক পরিস্থিতি উত্তাপ ছড়াতে পারে এমনটাই মনে করেন এখানকার নেতারা। তাদের ধারণা, নির্দলীয় সরকারের দাবিতে ২০১৪ সালের ৫ জানুয়ারি অনুষ্ঠিত নির্বাচন বর্জন করলেও বিএনপি জোট এবার নির্বাচনমুখী হতে পারে। এটা মাথায় রেখেই আগেভাগে প্রস্তুতি শুরু করবে আওয়ামী লীগ।
মহানগরীর থানা পর্যায়ের কয়েকজন নেতা বলেন, সরকার গত সাড়ে ৭ বছরে চট্টগ্রামসহ সারাদেশে যে উন্নয়ন কর্মকা- শুরু করেছে তার ধারাবাহিকতা রক্ষায় আওয়ামী লীগকে ফের ক্ষমতায় আনতে হবে। আর এ জন্যই জনগণের কাছে যেতে নির্দেশ দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী। তারা বলেন, আওয়ামী লীগ এখন অতীতের যেকোনো সময়ের তুলনায় সাংগঠনিকভাবে শক্তিশালী। জনগণের মধ্যেও আওয়ামী লীগের গ্রহণযোগ্যতা বেড়েছে। এখন জনগণের আস্থার প্রতীক শেখ হাসিনা। বিএনপি সামনের নির্বাচনে অংশ নিলেও তাতে আওয়ামী লীগের শঙ্কিত হওয়ার কোনো কারণ নেই। কারণ জনগণের ভোটেই আওয়ামী লীগ ফের ক্ষমতায় আসবে।
সম্মেলন প্রসঙ্গে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান বলেন, সফল সম্মেলনে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা যে নির্দেশনা দিয়েছেন তার আলোকে আমরা শিগগির মাঠে নামব। তৃণমূল পর্যায়ে আওয়ামী লীগকে ঢেলে সাজানোর পাশাপাশি আমাদের সরকারের উন্নয়ন কর্মকা- জনগণের কাছে তুলে ধরব। আগামী নির্বাচনকে ঘিরেই আমাদের সকল তৎপরতা পরিচালিত হবে। তিনি বলেন, যথাসময়ে জেলা-উপজেলা ও পৌরসভায় সম্মেলনের মাধ্যমে নতুন কমিটি হবে।
বন্দরনগরীসহ চট্টগ্রাম অঞ্চলে আওয়ামী লীগের নেতায় নেতায় কলহ-কোন্দল দীর্ঘদিনের। এবারের সম্মেলনে দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা দলীয় কোন্দল প্রসঙ্গে স্পষ্ট কিছু না বললেও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ আছে বলেই সরকার সব চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে উন্নয়ন এগিয়ে নিতে পারছে বলে মন্তব্য করেন তিনি। তৃণমূলের নেতারা বলছেন, এ বক্তব্যের মাধ্যমে দলীয় সভানেত্রী বিভেদ ভুলে সর্বপর্যায়ে নেতাকর্মীদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ারই নির্দেশনা দিয়েছেন। তৃণমূল নেতাদের প্রত্যাশা দলীয় সভানেত্রীর এ নির্দেশনা মেনে নেতারা নিজেদের মধ্যে কলহ-বিরোধ ভুলে যাবেন।
এদিকে ওবায়দুল কাদেরকে আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক করায় খুশি এ অঞ্চলের তৃণমূলের নেতারা। ওয়াবদুল কাদেরের সাথে এ অঞ্চলের নেতাদের সম্পর্ক বরাবরই ভালো। দলের দ্বিতীয় গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হওয়ায় তার সাথে নেতাদের সম্পর্ক আরো সুদৃঢ় এমন প্রত্যাশা নেতাদের। বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের তৃণমূলের নেতাকর্মীদের সাথে ওয়াবদুল কাদেরের যোগাযোগ এবং পরিচয় রয়েছে। আর এ জন্যই তারা তাকে নিজেদের কাছের মানুষ মনে করেন।
কেন্দ্রে ভালো পদ পেতে চট্টগ্রাম অঞ্চলের প্রায় দেড় ডজন নেতা নানামুখী তৎপরতা অব্যাহত রেখেছেন সম্মেলনের আগ থেকে। কাউন্সিলে পূর্ণাঙ্গ কমিটি ঘোষণা না হওয়ায় তাদের অপেক্ষার প্রহরও দীর্ঘ হয়েছে। তবে তারা হাল ছাড়েননি। সম্মেলন ও কাউন্সিল শেষ হলেও পদপ্রত্যাশীরা এখনো ঢাকায় অবস্থান করে শেষবারের মতো চেষ্টা-তদ্বির অব্যাহত রেখেছেন বলে জানা গেছে।
জানা যায়, গেল সম্মেলনে চট্টগ্রামের যেসব নেতা কেন্দ্রে বিভিন্ন পদে স্থান পেয়েছিলেন তাদের মধ্যে কয়েকজন এবার বাদ যাচ্ছেন। নতুন করে কয়েকজন কেন্দ্রে ঠাঁই পাবেন। প্রেসিডিয়ামের ১৯ সদস্যের মধ্যে এখনো কয়েকটি পদ খালি। এ পদে চট্টগ্রামের কোনো নেতা আসতে পারেন কি না তা নিয়েও আলোচনা রয়েছে। সাংগঠনিক সম্পাদক এবং বিভাগীয় বিভিন্ন পদে চট্টগ্রাম থেকে কয়েকজন নেতা আসতে পারেন বলে মনে করেন দলের নেতাকর্মীরা। উপদেষ্টা পরিষদেও নতুন মুখ দেখা যেতে পারে চট্টগ্রাম থেকে।
নতুন কমিটির সাফল্য কামনা
সদ্য সমাপ্ত আওয়ামী লীগের ২০তম কেন্দ্রীয় কাউন্সিলে সর্বসম্মতভাবে দলীয় সভাপতি পদে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এবং সাধারণ সম্পাদক পদে বিদায়ী পরিষদের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সড়ক যোগাযোগ ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের প্রথমবারের মত নির্বাচিত হওয়ায় এই পরিষদের অগ্রযাত্রায় শুভ কামনা করে গতকাল বাদ আসর গরীব উল্লাহ শাহ (রহ) মাজারে কোতোয়ালী থানার আওয়ামী লীগের উদ্যোগে দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়।
হযরত গরীব উল্লাহ শাহ মাজারের ইমাম মাওলানা মো: জাকির হোসেন এই দোয়া মাহফিল পরিচালনা করেন।
এ সময় উপস্থিত ছিলেন কোতোয়ালী থানা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফিরোজ আহমদ, সাধারণ সম্পাদক আবুল মনসুর, আনিস মিয়া, নাসির উদ্দিন, এড. মহিবুল্লাহ চৌধুরী, মোসলেম উদ্দিন দিদার, মাসুম চৌধুরী, আবু বক্কর বক্কু, তারেক ইমতিয়াজ ইমতু, হাজী পেয়ার মোহাম্মদ, আবুল হাশেম বাবুল, শের মোহাম্মদ, আফসার উদ্দিন চৌধুরী, নুরুল আমিন শান্তি, হাজী আবদুর রহমান, রফিকুল হোসেন বাচ্চু, আশফাক আহমেদ প্রমুখ।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।