পটুয়াখালীর যুবক ক্বারী সাইয়্যেদ মুসতানজিদ বিল্লাহ রব্বানীর কোরআন তেলাওয়াতে মুগ্ধ যুক্তরাষ্ট্রবাসী
ইসলামি সভ্যতা ও সংস্কৃতি বিকাশে বাংলাদেশের অবদান অনস্বীকার্য। এদেশে ইসলামি সংস্কৃতি চর্চার ইতিহাস অনেক প্রাচীন।
তালেবানরা আফগানিস্তানের নিয়ন্ত্রণ নেয়ার সময় দেশটির যে ১০ বিলিয়ন ডলারের তহবিল ফ্রিজ করা হয়েছিল, তা মুক্ত করে দেয়ার মাধ্যমে ‘দয়া ও সমবেদনা’ দেখানোর জন্য যুক্তরাষ্ট্র এবং পশ্চিমাদের কাছে অনুরোধ করেছে তারা। রোববার অ্যাসোসিয়েটেড প্রেসের সাথে একটি বিশেষ সাক্ষাৎকারে দেশটির অন্তর্র্বতী পররাষ্ট্রমন্ত্রী আমির খান মুত্তাকি বলেছেন যে, তহবিলগুলো দেশের লাখ লাখ নাগরিকদের সাহায্য করবে যাদের মরিয়া প্রয়োজন রয়েছে।
আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে মার্কিন নিষেধাজ্ঞা একটি বড় ভুল উল্লেখ করে ইসলামিক আমিরাতের ভারপ্রাপ্ত পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেছেন, আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বা দেশকে অস্থিতিশীল করে তোলা কারো উপকারে আসবে না। তিনি বলেন, ‘আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা, একটি দুর্বল আফগান সরকার থাকা কারোর স্বার্থের অনকূল নয়।’ মুত্তাকি, যার সহযোগীদের মধ্যে পূর্ববর্তী সরকারের কর্মচারীদের পাশাপাশি তালেবানের পদ থেকে নিয়োগপ্রাপ্তরা রয়েছেন, এপিকে বলেন, ‘আফগানিস্তানকে অস্থিতিশীল করা বা দুর্বল আফগান সরকার কারোর জন্য হিতকর নয়।’
মুত্তাকি বলেছেন যে, তালেবান ক‚টনৈতিক বিচ্ছিন্নতার সম্মুখীন কারণ ইসলামিক শাসক হিসেবে তার সরকারের নাম এখনও কোনো দেশ বা জাতিসংঘ কর্তৃক স্বীকৃত হয়নি। তবে, তিনি বলেন, ‘ইসলামিক আমিরাত যুক্তরাষ্ট্রসহ অন্যান্য দেশের সাথে সুসম্পর্ক চায়। এখনো আফগানিস্তানের বিরুদ্ধে বেশ কিছু নিষেধাজ্ঞা দেখতে পাই। আমার ধারণা, এর দ্বারা কেবল একই ব্যর্থ অভিজ্ঞতারই পুনরাবৃত্তি হবে, যা কারো জন্যই ভালো নয়।’ দেশের বর্তমান মানবিক ও অর্থনৈতিক সমস্যার দিকে ইঙ্গিত করে মুত্তাকি বলেন, ‘ইসলামিক আমিরাত এমন একটি আফগানিস্তান গড়ে তোলার চেষ্টা করছে, যা কারো সাথে দ্ব›েদ্ব থাকবে না এবং নিজের পায়ে দাঁড়াবে। তিনি আশা প্রকাশ করেছেন যে, সময়ের সাথে সাথে যুক্তরাষ্ট্র ধীরে ধীরে আফগানিস্তানের প্রতি তার নীতি পরিবর্তন করবে।
আফগানিস্তানে দায়েশ এবং আল-কায়েদার উত্থানের বিষয়ে কিছু পশ্চিমা কর্মকর্তা এবং কিছু আঞ্চলিক দেশের বারবার করা মন্তব্যগুলো সত্য নয় বলে উল্লেখ করেন তালেবানের এই শীর্ষ নেতা। মার্কিন কেন্দ্রীয় কমান্ডের কমান্ডার জেনারেল ফ্রাঙ্ক ম্যাকেঞ্জি সম্প্রতি আফগানিস্তানে আল কায়েদা ও আইএসআইএসের উত্থানের বিষয়ে সতর্ক করে বলেছেন যে, এ দুই সংগঠন অভ্যন্তরীণভাবে শক্তিশালী হচ্ছে। ম্যাকেঞ্জির মন্তব্যের জবাবে মুত্তাকি বলেন, ‘যদি ম্যাকেঞ্জির কাছে কোনো প্রমাণ থাকে তবে তা দেয়া উচিত। আমি আত্মবিশ্বাসের সাথে বলতে পারি, এটি একটি ভিত্তিহীন অভিযোগ। মুত্তাকি আরো বলেন, ইসলামিক আমিরাত চায় যুক্তরাষ্ট্র আফগানিস্তানের সাথে সুসম্পর্ক রাখুক, মতবিরোধের অবসান করুক এবং কাবুল ও ওয়াশিংটনের মধ্যে দূরত্ব কমে আসুক।’
আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ‘আমেরিকার প্রতি, আমেরিকান জাতির প্রতি আমার শেষ কথা হল: আপনারা একটি মহান এবং বড় জাতি এবং আপনাদের অবশ্যই যথেষ্ট ধৈর্য্য থাকতে হবে এবং আফগানিস্তানের উপর আন্তর্জাতিক নিয়ম ও নিষেধাজ্ঞার উপর ভিত্তি করে নীতি প্রণয়নের সাহসের জন্য একটি বড় হৃদয় থাকতে হবে। মতপার্থক্যের অবসান ঘটিয়ে আমাদের মধ্যে দূরত্ব কমিয়ে আফগানিস্তানের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক বেছে নিন।’
আফগান পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেন যে, আফগানিস্তানের নতুন তালেবান শাসকরা নীতিগতভাবে মেয়েদের এবং মহিলাদের জন্য শিক্ষা এবং চাকরির জন্য প্রতিশ্রুতিবদ্ধ, যা তাদের নিপীড়ন এবং মানবাধিকার লঙ্ঘনের ইতিহাস সমৃদ্ধ আগের শাসনামল থেকে একটি উল্লেখযোগ্য পরিবর্তন। মুত্তাকি মেয়েদের শিক্ষা এবং কর্মক্ষেত্রে মহিলাদের উপর তালেবান-আরোপিত সীমাবদ্ধতার প্রতি বিশ্বের ক্ষোভের বিষয়ে বলেন, ‘দেশ ও বিশ্বের সাথে মিথস্ক্রিয়ায় আমরা প্রশাসনে এবং রাজনীতিতে অগ্রগতি করেছি। প্রতিটি দিন যাচ্ছে আমরা আরও অভিজ্ঞতা অর্জন করব এবং আরও অগ্রগতি করব।’
মুত্তাকি বলেছেন যে, নতুন তালেবান সরকারের অধীনে দেশের ৩৪টি প্রদেশের মধ্যে ১০টিতে মেয়েরা ১২ তম গ্রেড পর্যন্ত স্কুলে যাচ্ছে, বেসরকারি স্কুল এবং বিশ্ববিদ্যালয়গুলি বিনা বাধায় কাজ করছে এবং ১ শ’ শতাংশ মহিলা যারা আগে স্বাস্থ্য খাতে কাজ করেছে, তারা চাকরীতে ফিরে এসেছে। তিনি বলেন, ‘এটি দেখায় যে, আমরা নীতিগতভাবে নারীদের অংশগ্রহণে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ।’ মুত্তাকি বলেন, ‘তালেবানরা তাদের ক্ষমতায় থাকা প্রথম মাসে ভুল করেছে এবং আমরা আরও সংস্কারের জন্য কাজ করব যা জাতিকে উপকৃত করতে পারে।’ সূত্র : আল জাজিরা, ট্রিবিউন।
দৈনিক ইনকিলাব সংবিধান ও জনমতের প্রতি শ্রদ্ধাশীল। তাই ধর্ম ও রাষ্ট্রবিরোধী এবং উষ্কানীমূলক কোনো বক্তব্য না করার জন্য পাঠকদের অনুরোধ করা হলো। কর্তৃপক্ষ যেকোনো ধরণের আপত্তিকর মন্তব্য মডারেশনের ক্ষমতা রাখেন।